প্রথম পাতা
শিক্ষার্থী ও পিএসসি’র মাঝে ব্রিজ হয়ে সমস্যা সমাধানই ছিল লক্ষ্য
স্টাফ রিপোর্টার
৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
পিএসসি নিয়ে মানবজমিনে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। গতকাল নিজের ফেসবুক পেজে এই প্রতিক্রিয়া পোস্ট করেন তিনি। এতে তিনি লেখেন, পিএসসি সংস্কারের দাবিতে প্রায় ৮০ ঘণ্টা অনশন করে ৪ জন চাকরিপ্রার্থী ঝুঁকিপূর্ণ শারীরিক অবস্থায় পৌঁছালে পিএসসি এবং তাদের মধ্যে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিই। রাজু ভাস্কর্যে বসেও বারবার বলেছি ‘পিএসসি সাংবিধানিক, স্বাধীন ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। আমি পিএসসি এবং আপনাদের মধ্যে ব্রিজ হতে পারি, সিদ্ধান্ত দেয়ার এখতিয়ার আমার নেই’। প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি সুরাহা না করে লিখিত পরীক্ষা নেয়ার বিরুদ্ধে ছিলেন আন্দোলনকারীরা। পিএসসি সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে রাজু ভাস্কর্যে বসেই ফোনে কথা বলেছি। পিএসসি’র চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম স্যার তিনজন সদস্য পাঠান আলোচনার জন্য। টিএসসিতে সাংবাদিক সমিতির অফিসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি এবং পিএসসি’র সদস্যদের মধ্যকার দীর্ঘ আলোচনার পর পিএসসি লিখিত পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। তা ঘোষণা করেন পিএসসি’র একজন সদস্য। এই প্রক্রিয়ার কোনো অংশেই পিএসসিকে আমি কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ করিনি। পিএসসি এবং ছাত্রদের মধ্যে ব্রিজ হিসেবে সমস্যার সমাধান করাই ছিল আমার লক্ষ্য। তাছাড়া অনশনরত চাকরিপ্রার্থীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছিল দ্রুত। অথচ মানবজমিনের একটি রিপোর্টে আমার বিরুদ্ধে পিএসসিকে চাপ দেয়ার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়। তারপর সেটাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে টার্গেটেড প্রোপাগান্ডা। গণ-অভ্যুত্থানের একজন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে দায়িত্ব পালন করছি। ফলে শিক্ষার্থীদের যেকোনো যৌক্তিক দাবি কিংবা সমস্যায় এগিয়ে যাওয়াটা আমার দায়িত্ব। আমি সে দায়িত্ব পালন করছি এবং ভবিষ্যতেও করবো। মানবজমিনের এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অপেশাদারি এবং মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের প্রতিবাদ জানিয়ে রাখলাম।
ওদিকে মানবজমিনে প্রকাশিত ‘কঠিন চাপে পিএসসি’ শিরোনামে সংবাদটির কিছু বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ‘পিএসসি’র সংস্কারপ্রত্যাশী’ ব্যানারের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংস্কারপ্রত্যাশীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। ঢাবি শিক্ষার্থী শাহ আলম স্নেহ লিখিত বক্তব্যে বলেন- ২৯শে এপ্রিল মানবজমিনে প্রকাশিত ‘কঠিন চাপে পিএসসি’ শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যা ‘পিএসসি সংস্কার আন্দোলন’ অংশীজনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদে ‘পিএসসি সংস্কার আন্দোলন’ সম্পর্কে নানাবিধ মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। যা বিসিএস প্রত্যাশীদের যৌক্তিক ও ন্যায্য আন্দোলনের প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরির সুযোগ দিবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন’-এর স্বাধীনতা বজায় রেখেই কমিশনের প্রতিনিধি হয়ে সদস্য জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া ৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেন। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া পিএসসি’র চেয়ারম্যান ও সদস্যের পরীক্ষা পেছানোর বিষয়ে অনুরোধ করেছেন এবং সার্বিক পরিস্থিতি পিএসসি’র নিকট তুলে ধরেছিলেন। এবং সদস্যের সিদ্ধান্ত তিনি প্রেসের সামনে উপস্থাপন করেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সিরাজুস সালেহীন সিয়ন, তিনি ১০ বছর আগেই ছাত্রলীগ ত্যাগ করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন। এ ছাড়া এনসিপি’র মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সার্জিস আলম রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনকারীদের সঙ্গে সংহতি জানান। তার এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ৮ই এপ্রিল ১০-১২ জন পরীক্ষার্থী নয় বরং ২০০ পরীক্ষার্থী পিএসসি’র সামনে উপস্থিত ছিল। পরীক্ষার্থীরা কেউ গেট ভাঙেনি। বরং গেট খুলে পিএসসি’র ভেতরে অবস্থান নেন। পিএসসি’র মূল কার্যালয়ে প্রবেশের কেউ চেষ্টা করেনি। পিএসসি’র চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম এদিন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করেননি। তিনি সেনাবাহিনীর সহায়তায় একটা প্রতিনিধি টিমের সঙ্গে দেখা করেন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বার বার ১০-১২ জন আন্দোলনকারী উল্লেখ করে ‘পিএসসি সংস্কার আন্দোলন’কে হেয় করা হয়েছে। আন্দোলনে প্রত্যেকবারই ৫০০ প্লাস বিসিএস প্রত্যাশীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। এটা ৪৬ পেছানো বা স্থগিতের আন্দোলন না। এটা বিসিএস প্রত্যাশীদের ‘পিএসসি সংস্কার আন্দোলন’।
পাঠকের মতামত
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে পিএসসির কর্মকাণ্ডের উপর একজন উপদেষ্টার অযাচিত এবং নগ্ন হস্তক্ষেপের ঘটনা নজিরবিহীন।