বিনোদন
দুর্দান্ত আয়োজনে বর্ণাঢ্য ‘ইত্যাদি’
স্টাফ রিপোর্টার
৮ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার
এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে ঈদের সময় ‘ইত্যাদি’ সবসময়ই দর্শকদের প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে। কবে কখন প্রচার হবে সেটা দর্শকরা নিজ দায়িত্বেই জেনে নেন এবং যথাসময়ে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করেন টিভি সেটের সামনে। বিটিভিতে ‘ইত্যাদি’ প্রচারিত হচ্ছে যুগ যুগ ধরে এবং ঈদের পরদিন পরিবারের সবাই মিলে টিভিতে ঈদের ‘ইত্যাদি’ দেখেন। যেহেতু ইত্যাদি’র দর্শকদের অধিকাংশই প্রথম প্রচারের দিনই টিভিতে ‘ইত্যাদি’ দেখেন, ফলে তারা আর ইউটিউবে দেখেন না। এ লেখা যখন লিখছি তখন অর্থাৎ রোববার, দুপুর ১টা পর্যন্ত ইউটিউবে ‘ইত্যাদি’ দেখেছে প্রায় ৭৭ লাখ দর্শক। ট্রেন্ডিংয়ে বাংলাদেশি কনটেন্ট হিসেবে ইত্যাদি’র অবস্থান ঈদের অষ্টম দিনেও ২ নম্বরে। এ থেকেই ইত্যাদি’র দর্শকপ্রিয়তা বোঝা যায়। এবারে এক নজরে দেখা যাক কী ছিল এবারের ইত্যাদিতে। ছিল নাচ-গান-বিষয়বস্তু আর উপস্থাপনায় উৎসবের আমেজ। শুরু হলো সেই অমর গান, ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ দিয়ে। এবারো পরিবেশনা-চিত্রায়ণে-গায়কীতে ছিল বৈচিত্র্য। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দিয়ে গান গাওয়ানোর যে নতুন আঙ্গিক তা গেলবারের মতো এবারো সবার নজর কেড়েছে। হানিফ সংকেতের নির্বাচনে দুই অভিনয়শিল্পী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি ও সিয়াম আহমেদ অসাধারণ গেয়েছেন। ইত্যাদিতে হানিফ সংকেত তারকা অভিনয়শিল্পীদের দিয়ে সুরে সুরে অভিনয় করান। এবার অনলাইনের অপব্যবহার নিয়ে দর্শকপ্রিয় তিন দম্পতি শহীদুজ্জামান সেলিম-রোজী সিদ্দিকী, ইন্তেখাব দিনার-বিজরী বরকতউল্লাহ, এফ এস নাঈম-নাদিয়া আহমেদ চমৎকার অভিনয় করেছেন এই পর্বে। ভালো লেগেছে ফজলুর রহমান বাবু ও মোমেনা চৌধুরী অভিনীত ‘পারি না আর পারি না’-গানের মাধ্যমে বাজারমূল্য, যানজট নিয়ে অসাধারণ স্যাটায়ার সংগীত। ভালো লেগেছে তৌসিফ মাহবুব ও শবনম বুবলীর সঙ্গে দলীয় নৃত্যে বিবেকবোধ জাগ্রত করার আহ্বানের বিষয়। সালাহউদ্দিন লাভলু ও শাহেদ আলীর চোর ও চুরি নিয়ে যাবতীয় প্রবাদ প্রবচনের বিশ্লেষণমূলক পর্বটি ছিল অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত ও অনবদ্য। এই প্রথম একসঙ্গে গাইতে দেখা গেল জনপ্রিয় দুই শিল্পী হাবিব ওয়াহিদ ও প্রীতম হাসানকে। তাদের এই দ্বৈত সংগীতের দোলায় দুলেছেন উপস্থিত দর্শক। তৈল নিয়ে সাজানো এবারের দর্শক পর্বে চমৎকার অভিনয় করেছেন অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান। প্রতিবারের মতো এবারো দর্শকদের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বিদেশিদের দিয়ে এদেশি পর্ব। ‘গুজব’ নিয়ে করা এই পর্বটিতে একটি গ্রাম্য গল্পের মাধ্যমে চমৎকারভাবে গুজবের নেতিবাচক দিক তুলে ধরা হয়েছে। সিন্ডিকেট, টিভি ক্যামেরা ভীতি, পাঞ্জাবির রকমফের, ঈদ শপিং বিড়ম্বনা, ঈদের সালামি ও বহুরূপী টাকা প্রতিটি নাট্যাংশই ছিল মজার ও সচেতনতামূলক। অনুষ্ঠানের শেষে এসে প্রতিবারের মতোই হানিফ সংকেত তার দেশপ্রেমের উদাহরণ রেখেছেন। তার ভাষায় চিরদিনের শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও সৈয়দ আব্দুল হাদীর সঙ্গে এই প্রজন্মের ১০ জন সংগীতশিল্পীর সমবেত পরিবেশনায় একটি দেশাত্মবোধক গান। সবচাইতে ভালো লেগেছে হানিফ সংকেতের শেষ আহ্বান, দর্শকমণ্ডলী এই জেগে ওঠা বাংলাদেশে, নতুন পরিবেশে, ঈদের আনন্দে সবাই যেন সবার কাছে আসি। বলতে পারি ভালোবাসি ভালোবাসি। আর তাইতো দর্শকরাও ভালোবাসেন হানিফ সংকেতকে, ভালোবাসেন তার ইত্যাদিকে।
পাঠকের মতামত
আরতো ভালো লাগেনা সেই সস্তা কৌতুক।পুরানো বোতলে নতুন মদ ভালো করে ঝাকিয়ে বিক্রি করা।এবারে খান্ত দেওয়া উচিৎ হানিফ সংকেতের।