ঢাকা, ৭ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ২৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক লড়াই

মানবজমিন ডেস্ক
৬ এপ্রিল ২০২৫, রবিবারmzamin

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সর্বশেষ রেসিপ্রোক্যাল শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্ব অর্থনীতি টালমাটাল। দেশে দেশে শেয়ারবাজারে দেখা দিয়েছে উত্থান-পতন। সরবরাহ চেইনে দেখা দিয়েছে টান। এমন অবস্থায় নতুন করে বিশ্ব একটি অর্থনৈতিক মন্দার দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন অনেক আগে থেকেই বাণিজ্যযুদ্ধে লিপ্ত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদকাল থেকেই এই বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। কিন্তু এখন এই যুদ্ধ আরও তীব্র হয়েছে। অনলাইন বিবিসি’র এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে, চীনের বাজার বিশাল। সেই বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব কোম্পানি পণ্য বিক্রি করতো, তারা চরম আঘাত পাচ্ছে। কারণ, ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর চীনও পাল্টা হিসেবে মার্কিন সব পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শতকরা ৩৪ ভাগ শুল্ক বৃদ্ধি করেছে। ফলে মার্কিন পণ্য চীনের বাজারে প্রবেশ করতে গেলে এই অর্থ পরিশোধ করতে হবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিজাত পণ্যের জন্য বিশেষ করে এটি একটি খারাপ খবর। এর আগে চীনে তারা তাদের পণ্য প্রবেশ করাতে গিয়ে শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ শুল্ক দিয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প নতুন শুল্ক আরোপ করার ফলে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে শতকরা ৩৪ ভাগ। এর ফলে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে। বেইজিং অন্য কোথাও আর মুরগি, শূকরের মাংস এবং জোয়ারের খোঁজ করার ব্যাপারে খুব বেশি চিন্তিত বলে মনে হচ্ছে না।  একই সঙ্গে তারা জানে যে, তারা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তার মূলে আঘাত করছে। এই যে শুল্ক বাড়ানো, এটা বিশ্বব্যাপী বিশ্লেষকদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। বিবিসি’র চীন প্রতিনিধি স্টিফেন ম্যাকডোনেল লিখেছেন- সমস্যা হলো সরবরাহ শৃঙ্খল এতটাই আন্তর্জাতিক হয়ে উঠেছে যে, যেকোনো পণ্যের উপাদান পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে। সুতরাং, যখন অর্থনৈতিক সংকটের ঢেউ দেশ থেকে দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, তখন এর ফলে সমস্ত বাণিজ্যের ওপর সম্ভাব্য বিপর্যয়কর পরিণতি হতে পারে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতি এখন একে অপরের সঙ্গে লড়াই করছে এবং তারা যে পিছু হটবে এমন কোনো প্রস্তুতির ইঙ্গিত নেই। শুক্রবার রাতে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় এক লিখিত বিবৃতিতে ট্রাম্পের সর্বশেষ শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিশ্রুত ‘দৃঢ় প্রতিকার’ ঘোষণা করে। সময় নির্ধারণের অনেকগুলো অর্থ হতে পারে। ১. খবরটি দেশে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিল তারা। যাতে লোকজন খুব বেশি ভীত না হয়। ২. নিজস্ব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি তারা ঘোষণা করে। ৩. ট্রাম্পের ৫৪% চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের আগে বেইজিং যে ছোট সুযোগটি হাতে পেয়েছিল, তা কাজে লাগিয়ে একটি চুক্তি করার আশা করেছিল। পরে তা ছেড়ে দেয়। 

যদি এই কারণগুলোর মধ্যে শেষ কারণটি হয়, তাহলে এটি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বেশ হতাশাজনক খবর। কারণ এর অর্থ হতে পারে যে, বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর মধ্যে একটি সমঝোতা অনেকের প্রত্যাশার চেয়েও কঠিন হতে পারে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার সময় তিনি কী করছিলেন, তা দেখে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মনোভাবের আরেকটি ইঙ্গিত পাওয়া যায়। অন্য দেশগুলোর সরকারগুলো হয়তো টেলিভিশনে আঁঠার মতো লেগে ছিল ওয়াশিংটনের কাছ থেকে খারাপ পরিস্থিতি এড়ানোর আশায়।

 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status