দেশ বিদেশ
মণিপুর সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে
মানবজমিন ডেস্ক
৬ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। এ বিষয়ে শুক্রবার পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। গভীর রাতের বিতর্কের পর সংসদে এ প্রস্তাবে ভোট হয়। তাতে ওই রাজ্যে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির শাসন নামে পরিচিত সাংবিধানিক বিধান অনুমোদন দেয়া হয়। রাত দুইটা ৩৬ মিনিটে রাজ্যসভায় এ বিষয়ে বিতর্ক হয়। তারপর শুক্রবার ভোরে পার্লামেন্ট সাংবিধানিকভাবে ওই প্রস্তাব পাস করে। পার্লামেন্টে ভোটের এই সময়সূচির তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। ভারতীয় একটি রাজ্যে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির শাসন আরোপের অর্থ হলো- ওই রাজ্য সরাসরি ফেডারেল বা কেন্দ্রীয় সরকার নিযুক্ত গভর্নরের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়, একদিন আগে নিম্ন্নকক্ষে এ প্রস্তাব অনুমোদনের পর তা নিয়ে আলোচনা হয়। মণিপুরে প্রায় দুই বছর ধরে চলছে জাতিগত সহিংসতা। রাজ্যসভায় মুসলিম ওয়াক্ফ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই আইনগত প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। দীর্ঘ আলোচনার পর ১১জন বক্তা বিতর্কে অংশ নেন এবং ভোররাত ৩.৫৮ মিনিটে সংসদে প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয়া হয়। প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির শাসন একটি সাংবিধানিক বিধান- যা ফেডারেল সরকারকে একটি রাজ্যের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নিতে অনুমোদন দেয়। ১৩ই ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং পদত্যাগ করার কয়েকদিন পর মণিপুরে জারি করা হয় এই বিধান। ২০২৩ সালের মে মাস থেকে রাজ্যটি চলমান জাতিগত সহিংসতার সাক্ষী।
এর ফলে কমপক্ষে ২৬০ জন নিহত এবং প্রায় ৫০,০০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। সেখানে কুকি সহ পাহাড়ি বিপুলসংখ্যক উপজাতি সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। কুকি সহ এসব সম্প্রদায় সংখ্যালঘু হিসেবে সুরক্ষা উপভোগ করছেন। কিন্তু মেইতি সম্প্রদায়কে এই মর্যাদা দেয়ার বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ করে। মেইতেইদেরকে সংখ্যালঘু উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হলে তারাও সরকারি চাকরি এবং শিক্ষায় একই সুযোগ-সুবিধা এবং কোটা পেতে পারতো। মে মাসের শুরুতে কুকিদের বিক্ষোভের ফলে ইম্ফল থেকে প্রায় ৪০ মাইল (৬৪ কিলোমিটার) দূরে চুরাচাঁদপুর গ্রামে সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর তা রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
বিরোধীদলীয় নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে উচ্চকক্ষের স্পিকারকে আরও উপযুক্ত সময়ে আলোচনার সময় নির্ধারণের আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে, ওয়াক্ফ বিলের উপর বিতর্ক গভীর রাত পর্যন্ত চলবে। অনুরোধটি প্রত্যাখ্যান করা হয়, যার ফলে মণিপুর প্রস্তাবটি অবশেষে রাত ২টার পরে গৃহীত হলে আরও আপত্তির সৃষ্টি হয়।