অর্থ-বাণিজ্য
সিন্ডিকেটতন্ত্র থেকে একবারে মুক্তির চেষ্টাই করছে সরকার: ড. লুৎফে সিদ্দিকী
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(১ সপ্তাহ আগে) ২৫ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার, ৮:১৩ অপরাহ্ন

সিন্ডিকেটের কারণে বাজার ঠিকভাবে কাজ করছে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। তিনি বলেন, যেদিকে তাকাই সেদিকেই একটা শব্দ, সিন্ডিকেট। মার্কেট ফোর্স যেভাবে কাজ করার কথা, সেভাবে কাজ করছে না। আইনের ভেতরেই কিছু একটা করে রাখা হয়েছে। সন্দ্বীপের ফেরি উদ্বোধন হলো, সেখানেও নাকি সিন্ডিকেট ছিল। আমরা সিন্ডিকেটতন্ত্র থেকে কীভাবে একবারে মুক্তি পাবো সেটিও ইকোনমিক রিফর্মের একটি অংশ। আর আমরা সেই চেষ্টাই করছি।
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে ‘এলডিসি উত্তরণ: কৃষিখাতে প্রভাব’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইআরএফ ও বাংলাদেশ অ্যাগ্রোকেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বামা) যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সভাপতিত্ব করেন ইআরএফের সভাপতি দৌলত আকতার মালা এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।
সিন্ডিকেট ব্যবসা, মন্ত্রণালয় সবখানে আছে উল্লেখ করে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, তারা আইনের মধ্যে এমন কিছু ঢুকিয়ে রেখেছে, যেটা সিন্ডিকেটকে আইনসিদ্ধ করছে। এগুলোকে একবারে সংস্কার করতে হবে।
বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর-দুবাইয়ের মতো একটি হাব হিসেবে দেখার প্রত্যাশা করে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, আমাদের এখানে একটি হাব হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কখনো ভারত ও চীনের মতো বড় দেশ হাব হতে পারবে না। সিঙ্গাপুর-দুবাইয়ের মতো আমরাও বড় বড় দেশগুলোর সমস্যা সমাধান করব। সেক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি প্রক্রিয়াকরণের একটি হাব হতে পারে বাংলাদেশ। আর আমরা এখানে প্রসেসিং সেন্টার করতে পারি। হালাল মিট অবশ্যই করা যেতে পেরে।
প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ দূত বলেন, চট্রগ্রাম বন্দরকে আরও বেশি কার্যকর করতে হবে। আমরা প্রথমে দেখেছি, সরকারের ভেতরে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস থাকে না। এক মন্ত্রণালয় আরেক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। আমরা এখন আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি করেছি। কোন মন্ত্রণালয়ে কোন কাজ আটকে আছে আমরা সেখানে তা আলোচনা করি।
লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, আমাদের জন্য এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন অপশনাল। সেটা দুই বছরে হোক, তিন বছরে হোক আমাদের করতে হবে। করার পরে যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের কিছু ছাড় দেয়, তবে সুযোগ-সুবিধা বেশি দিন রাখার জন্য সমঝোতা করা যেতে পারে। আসলে এলডিসি করব কি করব না, সেটা একদম আমাদের পছন্দে হবে তা নয়। এলডিসির জন্য যে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি, অন্য দেশ আমাদের শুল্কমুক্ত-কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু তারা চাইলে সেটা বন্ধ করেও দিতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ দূত বলেন, যারা এসব সুবিধা দিচ্ছে তারা যদি ঠিক করে যে, এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো। এ সুবিধা তুলে নেওয়া হবে, আসলে এটা তাদের পছন্দ। আবার এর মধ্যে তারা যদি এটাও বলে, এত সুযোগ দেওয়ার পরেও তোমাদের করের হার কম এত কম, বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন, বিদেশি বিনিয়োগ কম, বারবার বলেও ব্যবসা সহজীকরণ হয় না, দীর্ঘদিন ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসডাব্লিউ) বাস্তবায়ন নেই, তাহলে আমরা কতদিন সুবিধা দিয়ে যাব? এটার উত্তর কঠিন হবে।
তিনি যোগ করেন, এজন্য আমি বলব, এখনই এলডিসি করব না। সেদিকে এনার্জি নষ্ট না করে আমাদের কী করা যায় সেটা দেখতে হবে। ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে হবে।