বিশ্বজমিন
কেনেডি হত্যার রহস্য উদঘাটন হতে পারে আজ
৮০ হাজার পৃষ্ঠার নথি প্রকাশ করছেন ট্রাম্প
মানবজমিন ডেস্ক
(১ মাস আগে) ১৮ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার, ১২:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:২৮ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডি (জেএফকে) হত্যাকাণ্ড নিয়ে হাজার হাজার পৃষ্ঠার নথি প্রকাশ করার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, মঙ্গলবার কেনেডি হত্যাকাণ্ডের একটি নথি প্রকাশ করা হবে। যেটি প্রায় ৮০ হাজার পৃষ্ঠার। ছয় দশক আগের হত্যাকাণ্ডটি আজও যেন রহস্য। আমেরিকানদের অনেকেই মনে করেন কেনেডি হত্যার যে বিবরণ দেয়া হয়েছে তা সঠিক নয়। এখানে লুকিয়ে আছে বিশাল ষড়যন্ত্র। যা প্রকাশ করার অঙ্গীকার করেছেন ট্রাম্প। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
এতে বলা হয়, গত সোমবার কেনেডি সেন্টারে বক্তৃতা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বলেছেন, প্রকাশিতব্য নথিতে ৩৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্টের হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনেক কিছুই পড়ার মতো থাকবে। ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর টেক্সাসের ডালাসে নিহত হন জন এফ. কেনেডি। সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি না যে আমরা এতে সংশোধন করব। কোনোরকম সংশোধন ছাড়াই জেএফকে হত্যা বিষয়ক নথি ফাঁস করা হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। নথিতে কী রয়েছে তা দেখেছেন কিনা জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, নথির বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবগত আছেন তিনি। বলেছেন, এটা খুবই আকর্ষণীয় হতে চলেছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতাগ্রহনের পর জানুয়ারিতে জেএফকে হত্যাকাণ্ডের সকল অবশিষ্ট রেকর্ড প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। তার ওই আদেশের পরই কেনেডি হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথি প্রকাশ হতে যাচ্ছে। জেএফকে -এর সঙ্গে রবার্ট এফ কেনেডি এবং নাগরিক অধিকারের প্রতীক মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথিও ফাঁস করার নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ট্রাম্প। ওই আদেশের অধীনে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ডকে জেএফকে হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ ও সম্পূর্ণ নথি প্রকাশের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে একটি পরিকল্পনা উপস্থাপনের নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট।
কেনেডি হত্যাকাণ্ড কয়েক দশক ধরে মার্কিন সমাজকে ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছে। জরিপে দেখা গেছে যে, বেশিরভাগ আমেরিকানই ওই মামলার বিষয়ে সরকারি ব্যাখ্যা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন। ২০২৩ সালের গ্যালাপ জরিপে অংশ নেয়া ৬৫ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা ওয়ারেন কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে নেননি। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেএফকে-এর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মার্কিন মেরিন প্রবীণ লি হার্ভে অসওয়াল্ড একাই প্রেসিডেন্টকে হত্যা করেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিশ শতাংশ বলেছেন, তারা বিশ্বাস করেন যে, অসওয়াল্ড মার্কিন সরকারের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। অন্যদিকে ১৬ শতাংশ বলেছেন, তারা মনে করেন তিনি সিআইএর সঙ্গে কাজ করেছিলেন।
প্রথম মেয়াদে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সকল রেকর্ড প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু সিআইএ এবং এফবিআই হাজার হাজার পৃষ্ঠার নথি পর্যালোচনার জন্য স্থগিত রাখার অনুরোধ করার পর শেষ পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার ৮০০টি নথি প্রকাশ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন প্রায় ১৭ হাজার নথি প্রকাশ করেছিলেন। জাতীয় আর্কাইভের তথ্যমতে, ১৯৯২ সালের জেএফকে রেকর্ডস আইনের অধীনে পর্যালোচনা করা প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার নথির ৯৯ শতাংশের বেশি প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।