অর্থ-বাণিজ্য
অবশ্যই অর্থনীতি চাপে আছে: গভর্নর
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৫ আগস্ট ২০২২, শুক্রবারবাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, অবশ্যই দেশের অর্থনীতি চাপে আছে। আমাদের সবচেয়ে বড় চাপ ইমপোর্ট। মূল্যস্ফীতিও বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আগামী দু’-তিন মাসের মধ্যে ভালো অবস্থানে যাবে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের অর্থনীতি চাপে আছে কিনা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন। গত ১২ই জুলাই দায়িত্ব নেয়ার পর এটিই তার প্রথম সংবাদ সম্মেলন। বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার কারণে মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাবিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া পদক্ষেপগুলো জানাতে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি।
টানা কয়েক মাস টালমাটাল অবস্থার পর দেশের অর্থনীতি নিয়ে স্বস্তির খবর দিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, মার্চের তুলনায় সাড়ে ২৬ শতাংশ কমেছে ঋণপত্র খোলা, বিপরীতে বেড়েছে রপ্তানি ও প্রবাসী আয়। নিম্নমুখী মূল্যস্ফীতিও। আর এতে আগামী দুই মাসের মধ্যে অর্থনৈতিক চাপ কেটে যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
গভর্নর বলেন, আমদানিতে ঋণপত্র খোলা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ বিলিয়নে, বিপরীতে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি বেড়ে সব মিলিয়ে ৬.১ বিলিয়ন ছাড়িয়ছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে কমবে মূল্যস্ফীতিও। কেননা অর্থ পাচার বন্ধসহ বাজারে টাকার জোগান বাড়াতে নজর রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের।
গভর্নরের কাছে প্রশ্ন ছিল আমদানির সময় ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার হচ্ছে কিনা। উত্তরে তিনি বলেন, ট্রেড ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে টাকা বের হয়ে যাচ্ছে- এমন প্রচারণা আলোচনায় আছে। কিন্তু এ ব্যাপারে সঠিক কোনো তথ্য আমাদের বা কারও কাছে নেই। তিনি জানান, ৩ মিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেমে আপলোড করতে হয়। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি দল এটা পর্যবেক্ষণ করছে। কোনো ঋণপত্র সন্দেহজনক মনে হলে সেটা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
অন্য এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, তিনি মনে করেন ব্যাংকগুলোর দীর্ঘমেয়াদে ঋণ বিতরণ খেলাপি ঋণ বাড়ার অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো মূলত স্বল্পমেয়াদে ঋণ বিতরণ করে। কিন্তু আমাদের দেশে বন্ড মার্কেট না থাকায় ব্যাংকগুলোকে বাধ্য হয়ে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বিতরণ করতে হচ্ছে। ফলে শক্তিশালী বন্ড মার্কেট তৈরি হলে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের সমস্যা দূর হবে। বিনিয়োগকারীরা তাদের প্রয়োজনীয় দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বন্ড মার্কেট থেকে তুলবে। আর ব্যাংকগুলো তখন কেবল স্বল্পমেয়াদি ঋণ বিতরণ করতে পারবে। এটা যদি করতে পারে তাহলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ব্যাংকের খেলাপি ঋণও কমে আসবে।