ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০ শাবান ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

যুক্তরাষ্ট্রে স্বর্ণালী যুগের সূচনা

শপথ নিলেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প

মানবজমিন ডেস্ক

(৪ সপ্তাহ আগে) ২০ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার, ১১:০৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৪ পূর্বাহ্ন

mzamin

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে শুরু হলো তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রেসিডেন্সি। তার আগে ক্যাপিটল রোটুনডা হলে প্রবেশ করে তিনি তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পকে ফ্লাইং কিস উপহার দেন। এরপর উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশে হাত নাড়িয়ে আসন গ্রহণ করেন তিনি। প্রথমেই ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সকে শপথবাক্য পাঠকরানো হয়। এরপরই শপথবাক্য পাঠ করেন ডনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এখন। বাংলাদেশের স্থানীয় সময় সোমবার রাত প্রায় ১১টার দিকে তিনি শপথ নেন। এ সময় দুটি বাইবেলের ওপর ভিত্তি করে শপথ নেন ট্রাম্প। এর একটি বাইবেল তাকে দিয়েছিলেন তার মা। অন্যটি লিঙ্কন বাইবেল। এটি আগের কয়েকজনকে শপথ পড়ানোর সময় ব্যবহার করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১৮৬১ সালে আব্রাহাম লিঙ্কন অন্যতম। ট্রাম্প সংবিধানকে সংরক্ষণ, সুরক্ষা ও সুরক্ষিত রাখার শপথ নিয়েছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ, ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্পসহ পরিবারের সব সদস্য। শপথ নিয়ে ট্রাম্প প্রথম ভাষে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে স্বর্ণালী যুগের সূচনা হলো এখন। এইদিন থেকে আমাদের দেশ সমৃদ্ধ হবে এবং সম্মানিত হবে। আমি খুব সহজ কাজ করবো- আমেরিকা ফাস্ট হবে পলিসি। এর আগে তিনি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট সহ উপস্থিতদের প্রতি সম্মান জানান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে পুনঃস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, আমাদের সার্বভৌমত্বকে পুনরুদ্ধার করা হবে। আমাদের নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করা হবে। ন্যায়বিচারের দাড়িপাল্লা পুনরায় ভারসাম্যপূর্ণ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয়ে জঘন্য হিংসাত্বক ও অন্যায়ভাবে হাতিয়ার করা ইতি ঘটবে। আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার হবে এমন একটি জাতি সৃষ্টি করা যারা গর্বিত হবে, সমৃদ্ধ হবে এবং স্বাধীন থাকবে। ট্রাম্প তার বক্তব্যে বলেন, আমেরিকা শিগগিরই আগের চেয়ে বৃহত্তর, শক্তিশালী এবং অধিক বেশি ব্যতিক্রমী হবে, যা আগে হয়নি কখনো। তিনি আরও বলেন, আত্মবিশ্বাস ও আশাবাদ নিয়ে তিনি প্রেসিডেন্সিতে ফিরেছেন। জাতীয় সফলতার একটি রোমাঞ্চকর নতুন যুগের সূচনা। সূর্যালোক সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। এই সুযোগকে আমেরিকার এমনভাবে ব্যবহারের সুযোগ এসেছে, যা আগে কখনো হয়নি।

সূচনা বক্তব্যেই বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এবং অভিবাসী সংকট মোকাবিলাকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, দেশের চ্যালেঞ্জগুলো দ্রুতই উবে যাবে। যুক্তরাষ্ট্র উগ্রপন্থি এবং দুর্নীতিপরায়ণ এস্টাবলিশমেন্টের ওপর আস্থার সংকটে লড়াই করছে। ট্রাম্প বলেন, বিদায়ী প্রশাসন বিপজ্জনক অপরাধীদেরকে দেশে অভয়ারণ্য এবং সুরক্ষা দিয়েছে। এসব অপরাধী অবৈধ উপায়ে আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে। বিদায়ী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সরকার বিদেশী সীমান্ত সুরক্ষিত রাখার জন্য আনলিমিটেড তহবিল দিয়েছে। কিন্তু তারা আমেরিকার সীমান্ত সুরক্ষিত রাখা প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন আমাদের এমন একটা সরকার আছে যে দেশে আর একটি সঙ্কটও হতে দেবে না। নর্থ ক্যারোলাইনার ঘূর্ণিঝড় ও লস অ্যানজেলেসের দাবানল নিয়েও কথা বলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বলেন, দাবানল কিছু ধনী এবং সবচেয়ে শক্তিধর মানুষকে ক্ষতিগ্রসত করেছে। তাদের অনেকেই এই হলে উপস্থিত আছেন। তাদের এখন কোনো বাড়িঘরই নেই। বিষয়টি ইন্টারেস্টিং। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে একটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আছে,যা বিপর্যয়ের সময়ে কোনো সেবা দেয় না। বিশ্বের অন্য যেকোনো জায়গার চেয়ে এ খাতে অধিক অর্থ খরচ করা হয়েছে। দেশে একটি শিক্ষা ব্যবস্থা আছে, যা আমাদের সন্তানদেরকে নিজেদের কাছেই লজ্জিত হতে শিক্ষা দেয়। এসবই পাল্টে যাবে। শুরু হলো আজ থেকে। দ্রæতই পাল্টে যাবে। তিনি বলেন, তার সরকার মর্যাদা, ক্ষমতা ও শক্তি দিয়ে প্রতিটি সঙ্কট মোকাবিলায় কাজ করবে। প্রতিটি জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও ধর্মের নাগরিকদের জন্য সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনবে। তিনি ২০শে জানুয়ারি ২০২৫’কে লিবারেশন ডে বা স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উল্লেখ করেন। ট্রাম্প বলেন, আমার আশা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচন সবচেয়ে মহৎ হিসেবে আমাদের দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ফলপ্রসূ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কৃষ্ণাঙ্গ এবং হিস্প্যানিক ভোটারদের তিনি বলেন, আপনাদের কণ্ঠস্বর আমি শুনেছি। প্রতিশ্রুতি দেন প্রথম দিনেই দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত বিষয়ক জাতীয় জরুরি অবস্থায় স্বাক্ষর করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বিদেশি সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেবেন না বলে প্রতিশ্রæতি দেন তিনি। প্রতিশ্রুতি দেন মুদ্রাস্ফীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনজীবনের জীবন ধারণের খরচ মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দেন ট্রাম্প। আবারও তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘গ্রেট নেশন’ বানানোর প্রতিশ্রুতি দেন। বিদেশি সোর্স থেকে রাজস্ব আয়ের ওপর জোর দেন।

তিনি এদিন আবারও পানামা ক্যানাল নিয়ে কথা বলেন। ট্রাম্প বলেন, এটি একটি বোকার উপহার, যা কখনো পানামার হওয়া উচিত হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, পানামা ক্যানাল পরিচালনা করছে চীন। বলেন, আমরা এটাকে চীনের কাছে দিই নি। এটাকে আমরা নিয়ে নেবো। 

 

 

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্ট/ আবারো ঢাকা-দিল্লি কূটনৈতিক উত্তেজনা

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status