বিশ্বজমিন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেয়ায় শিক্ষকের ২০ বছরের জেল সৌদি আরবে
মানবজমিন ডেস্ক
(৬ মাস আগে) ১০ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ৭:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেয়ার কারণে আসাদ আল গামদি নামে ৪৭ বছর বয়সী একজন শিক্ষককে ২০ বছরের জেল দিয়েছে সৌদি আরবের আদালত। সন্ত্রাস বিরোধী আদালত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে শাস্তি দেয়। বলা হয়, বাদশা ও ক্রাউন প্রিন্সের ধর্ম ও ন্যায়নিষ্ঠতাকে চ্যালেঞ্জ করা, মিথ্যা ও বানোয়াট খবর ও গুজব ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তার বিরুদ্ধে আদালতের ডকুমেন্ট রিভিউ করেছে। তাতে বলা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার বা এক্সে দেশের নিরাপত্তায় ক্ষতি হয় এমন পোস্ট দেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আল গামদিকে। গত ২০শে নভেম্বর তাকে রাতের বেলা বন্দরনগরী আল হামদানিয়ের বাড়ি থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের সামনে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে তিনি জেদ্দার দাহবান কারাগারে অবস্থান করছেন। এসব নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মিডল ইস্ট আই। এতে বলা হয়, গ্রেপ্তারের পর তাকে নিঃসঙ্গ কারাগারে রাখা হয়। এ সময় তার সঙ্গে কাউকে সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়নি। তবে জানুয়ারিতে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শুধু সাক্ষাতের অনুমতি পান। আল গামদিকে এ সময়ে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা দেয়া হয়নি। এর ফলে তিনি বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। এক পর্যায়ে তার বিচারকাজ শুরু হয়। আদালত তার পক্ষে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেয়। ওই আইনজীবী তার সঙ্গে বা তার পরিবারের কারো সঙ্গে তথ্য শেয়ার করতে অস্বীকৃতি জানান।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, আদালতে শুনানির বাইরে আল গামদি অথবা তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে অস্বীকৃতি জানান ওই আইনজীবী। পরিবারের অনুরোধ ছিল, আদালতে আল গামদির শারীরিক অবস্থা তুলে ধরতে। কিন্তু তিনি তাও প্রত্যাখ্যান করেন। আল গামদি যে টুইট করেছেন তাকে সৌদি আরবে নতুন মিশন ‘ভিশন ২০২৩’-এর সমালোচনা হিসেবে দেখা হয়। এটি হলো ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের উচ্চাভিলাষী একটি প্রকল্প। এর মধ্য দিয়ে তিনি দেশের অর্থনীতিকে ছড়িয়ে দিতে চান। এছাড়া কারাগারে মারা গেছেন সৌদি সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা ড. আবদাল্লাহ আল হামেদ। এ নিয়ে শোক জানিয়ে তিনি টুইট করেন। এখানে উল্লেখ্য, আল গামদির ভাই মোহাম্মদ আল গামদির অনুসারীদের মধ্য থেকে নয়জন অজ্ঞাত একাউন্ট ব্যবহার করে টুইট করেছিলেন। এ জন্য মোহাম্মদ আল গামদির বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে অভিযুক্ত করে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। এরপরই আল গামদির বিরুদ্ধে ওই রায় হলো। তার আরেক ভাই সাঈদ বিন নাসের আল গামদি একজন সুপরিচিত ইসলামিক পণ্ডিত এবং রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বী। তিনি বৃটেনে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, তারা যাতে দেশে ফিরে যান এ জন্য সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ এসব পরিবারের সদস্যদের টার্গেট করে। ভাইকে শাস্তি দেয়ার নিন্দা জানিয়েছেন সাঈদ বিন নাসের আল গামদি।