বাংলারজমিন
চেয়ারম্যানের কুপ্রস্তাবে কর্মক্ষেত্রে যাওয়া বন্ধ শিক্ষিকার
দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
৭ জুলাই ২০২৪, রবিবার
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এক শিক্ষিকাকে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী যে মাদ্রাসায় চাকরি করেন সেখানকার অধ্যক্ষের দায়িত্বেও আছেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান। বেতন বাড়িয়ে দেয়া, পড়াশোনার খরচ বহন কিংবা অন্য যেকোনো প্রয়োজন মিটিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য পরোক্ষভাবে কুপ্রস্তাব দেন ওই চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট ভুক্তভোগী নারী লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের নাম মশিউর রহমান। তিনি সোনাহার মল্লিকাদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। একইসঙ্গে তিনি তালিমুল ইসলাম দাখিল মডেল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ভুক্তভোগী অস্থায়ী ভিত্তিতে উল্লেখিত মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে চাকরি শুরু করেন গত বছর অক্টোবরে। গেল রমজান ঈদের পর থেকে ওই নারীকে কর্মক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময় অহেতুক কথাবার্তা বলতে ডাকতেন। এমন কি ভুক্তভোগী নারীর স্বামী অন্য নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত এমন অভিযোগ এনে সে সবের প্রমাণ দেখানোর জন্য তাকে নিরিবিলি দেখা করতে বলেন। একপর্যায়ে ফেসবুকে চেয়ারম্যানের মেসেজের রিপ্লাই না দেয়া ও মাদ্রাসায় তাকে এড়িয়ে যাওয়ার কারণে ওই শিক্ষিকার বেতন বন্ধ করে দেয়া হয়। ভুক্তভোগী তার আর্থিক অসচ্ছলতার বিষয়টি জানিয়ে বেতন চালুর অনুরোধ জানালে চেয়ারম্যান বেতন চালু করার আশ্বাস দিয়ে তাকে ইউনিয়ন পরিষদে দেখা করতে বলেন।
গত ১৬ই মে চেয়ারম্যানের কথা মতো ইউনিয়ন পরিষদে যান ভুক্তভোগী নারী। এসময় পরিষদ প্রাঙ্গণে মানুষজন থাকলেও চেয়ারম্যানের রুম ফাঁকা ছিল। কথা বলার একপর্যায়ে চেয়ারম্যান অশ্লীল কথা বলা শুরু করলে ভুক্তভোগী সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে তার হাত ধরে টানাটানি করা হয়। ওই নারী নিজেকে রক্ষা করে সেখান থেকে দ্রুত বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন থেকে নিজ ফেসবুক আইডি থেকে ওই নারীকে বিভিন্ন সময় কল ও মেসেজ দিয়ে আসছেন। মেসেজের বিষয়টি অন্য কাউকে না বলার জন্যও পরামর্শও দেন তিনি। প্রতিবেদকের নিকট চেয়ারম্যান ও ভুক্তভোগীর মধ্যে ম্যাসেজ আদান-প্রদানের বেশ কিছু স্ক্রিনশট আসে। এতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। চেয়ারম্যানের এমন লালসার কারণে সেই শিক্ষিকা কোরবানির ঈদের ছুটি শেষ হলেও মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেন। এখন বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় বিভিন্নভাবে ওই পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ও তার স্বামী। কী কারণে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা মাদ্রাসায় আসছেন না এমন প্রশ্ন করলে মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকরা বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে হুট করে মাদ্রাসায় আসা বন্ধ করার বিষয়টি তারা নিশ্চিত করেছেন। এই বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষ মশিউর রহমানকে মুঠোফোনে কল করলে তিনি সাক্ষাতে কথা বলবেন বলে জানান।
পাঠকের মতামত
@M.A.Alim হালিমকে বলছি, বাংলাদেশে ভালো মানুষ জনপ্রতিনিধি হন- এমন নজির নেই। ফলে আপনার "চেয়ারম্যান এত খারাপ হলে তিনি নির্বাচিত হলেন কি করে"- কথাটির কোনও ভিত্তি নেই। তাছাড়া খবরে বলা হয়েছে, "প্রতিবেদকের নিকট চেয়ারম্যান ও ভুক্তভোগীর মধ্যে ম্যাসেজ আদান-প্রদানের বেশ কিছু স্ক্রিনশট আসে।" হয়ত আপনার নজর এড়িয়ে গেছে। নাকি জেনেশুনেই আপনি সোনাহার মল্লিকাদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমানের পক্ষ নিচ্ছেন?
পত্রিকার প্রতিবেদন পড়ে বুঝতে পারালাম শুধু মেয়েটির বক্তব্য, চেয়ারম্যান এর সাথে সরাসরি কথা না বলে, কোন সাক্ষি ছাড়া এই ধরণের প্রতিবেদন করা আমার মনে হয় ঠিক হয়নি, চেয়ারম্যান এত খারাপ হলে তিনি নির্বাচিত হলেন কি করে।
নৈতিক স্খলনজনিত কারনে এই লম্পটকে উভয় পদ থেকে তাৎক্ষনিকভাবে অব্যহতি দিয়ে জরুরী আইনের আওতায় আনা উচিত।
নৈতিক স্খলনজনিত কারনে এই লম্পটকে উভয় পদ থেকে তাৎক্ষনিকভাবে অব্যহতি দিয়ে আইনের হাতে তুলে দেয়ার দাবী রইলো।