বিনোদন
তিথিডোর
‘মনে হলো নিজের জীবনের গল্প দেখলাম’
ফয়সাল রাব্বিকীন
২২ জুন ২০২৪, শনিবার
এই নাটকটা দেখছিলাম আর নিজের সঙ্গে রিলেট করছিলাম, হাজারো মানুষের কথা বলে এ গল্প, মনে হলো নিজের জীবনের গল্প দেখলাম, বাংলা নাটক এমন অদ্ভুত সুন্দর হয় জানা ছিল না, কয়েক বছরের বাংলা নাটকের মধ্যে সেরা- এমনই নানা ধরনের মন্তব্য পড়েছে দুইদিন আগে চ্যানেল আইয়ের ইউটিউব চ্যানেলে উন্মুক্ত হওয়া ঈদ নাটক ‘তিথিডোর’ নিয়ে। নাটকটি পরিচালনা করেছেন সময়ের অন্যতম নির্মাতা ভিকি জাহেদ। এর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী। নিশাত নামের একজন তরুণীর না পাওয়ার গল্প, হতাশা, কুরে কুরে শেষ হয়ে যাওয়া, বলতে না পারার কষ্ট, আত্মহত্যার মনোভাব-চেষ্টা এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে একজন মৃত্যু পথযাত্রী শিশুর কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবনটা উপভোগ করতে শেখা- এ সবই গল্পে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন নির্মাতা। অনেকেই হয়তো নাটকের গল্পে নিজেকে রিলেট করতে পারবেন। কারণ হতাশা প্রতিটি মানুষকেই আঁকড়ে ধরতে পারে। কিন্তু জীবন সুন্দর। সব বাধা পার করে জীবনটাকে উপভোগ করাটাই মূল বিষয়। নাটকের গল্পে দেখা যায়, নিশাত এক তরুণকে সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসলেও সে অন্য সম্পর্কে জড়ায়। ছেড়ে দেয় নিশাতকে। ৩০ বছর বয়সী নিশাত ভেঙে পড়ে। পরিবার থেকেও সে অবহেলা নিয়েই বড় হয়। নিশাত ভাবে তার বয়স বাড়ছে, না পাওয়া বাড়ছে, যন্ত্রণা বাড়ছে। এ জীবন রেখে কী লাভ! একটা সময় নানাভাবে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। সে সময়েই আবির্ভাব এক দেবশিশুর। যে কিনা নিশাতের বিল্ডিংয়েই থাকে। নিশাতকে প্রচণ্ড ভালোবাসে মেয়েটি। তবে জীবন যখন নিশাতের কাছে বিষাদে রূপ নেয় সে জানতে পারে সেই মেয়েটি ক্যান্সারে আক্রান্ত। নিশাতকে দেখতে চায় সে। হাসপাতালে শিশুটি তাকে জানায় সে জীবনের সুন্দর জিনিসগুলোর লিস্ট করছে। নিশাত যেন তাকে সাহায্য করে। এক সময় চলে যায় শিশুটি, কিন্তু নিশাতকে বেঁচে থাকার কারণ দিয়ে যায়। জীবন সুন্দর, প্রাণভরে উপভোগ করতে হয়। যতদিন পারা যায় নানা কিছুর মাঝে আনন্দ খুুঁজে নিতে হয়। নিশাত সেটাই শুরু করে। এমন গল্পই নাটকটির। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নির্মাতা যেমন অসাধারণ নির্মাণ করেছেন, ঈদে অভিনয় করা এই একটিমাত্র নাটকে মেহজাবীন আবারো বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি কোন মাপের অভিনেত্রী। তার অনবদ্য অভিনয়ের প্রশংসা নাটকের মন্তব্য ঘর জুড়ে। ‘তিথিডোর’র গল্প লিখেছেন জাহান সুলতানা। মেহজাবীন ছাড়াও এতে অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, শামীমা নাজনীন, আজম খান, প্রান্তর প্রমুখ। নাটকটির ভিউ কতো হবে তা জানা নেই, তবে যারা নাটকটি দেখবেন এর রেশ নিশ্চয়ই থেকে যাবে অনেকটা সময়।