বিশ্বজমিন
তাইওয়ান-চীন খুনসুটি
মানবজমিন ডেস্ক
(৭ মাস আগে) ২৪ মে ২০২৪, শুক্রবার, ১০:০৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:৪৩ অপরাহ্ন
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে’কে চীন যে মোটেও পছন্দ করছে না তা হাড়ে হাড়ে টের পাইয়ে দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট লাই শপথ নেয়ার পরই তাইওয়ানের চারপাশে সমুদ্রে, আকাশে সামরিক মহড়া শুরু করে চীন। একই সঙ্গে নতুন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সবাই যেন নিন্দার ঝড় বইয়ে দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি, গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয় থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র পর্যন্ত দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রেসিডেন্ট লাইয়ের নিন্দার যেন কোরাস গাইছে। গ্লোবাল টাইমস এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট লাইকে অহংকারী এবং বেপরোয়া হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সিসিটিভি লিখেছে, লজ্জাজনক ইতিহাসের পিলারে তিনি সুনিশ্চিতভাবেই পেরেক মারবেন। এবং দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক তত্ত্ব সামনে আনার জন্য তার কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
চীন থেকে সতর্ক করা হয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট লাই এবং তার ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি) যদি তাইওয়ানের স্বাধীনতার পথে অবিচল থাকে তাহলে তারা বিধ্বস্ত হবেন এবং পুড়ে খাক হয়ে যাবেন। প্রেসিডেন্ট লাইয়ের কথিত অপরাধ হলো গত সোমবার শপথ নেয়ার পর প্রথম ভাষণে তিনি চীনকে বোঝাতে ‘চায়না’ শব্দটি ব্যবহার করেন। বেইজিং বলছে, তিনি এটা করেছেন এটা বোঝাতে যে তাইওয়ান চীনের অংশ নয়। তারা দুটি আলাদা দেশ। চীনের চোখে এটা হলো প্রেসিডেন্ট লাইয়ের স্বাধীনতা বিষয়ক আদর্শ।
বাইরের মানুষদের কাছে বিষয়টি উদ্ভট শোনাতে পারে। কিন্তু দশকের পর দশক ধরে তাইওয়ান চীনের অংশ কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছে দুই দেশই। এমনকি তাইওয়ানের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাই সতর্কতার সঙ্গে চীনের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি চীনকে বোঝাতে ‘তাইওয়ান প্রণালীর অন্যপাশ’ অথবা ‘বেইজিং কর্তৃপক্ষ’ শব্দের ব্যবহার করেছেন। পণ্ডিতজনরা বলেন, এমন ভাষা ব্যবহারের গুরুত্ব আছে। কিন্তু নতুন প্রেসিডেন্ট লাই বিপজ্জনক একটি লাইন অতিক্রম করেছেন। অন্যরা বলেন তার জন্য বেইজিংয়ের ক্রোধ এরই মধ্যে সেট হয়ে গিয়েছে। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তারই বহিঃপ্রকাশ সর্বশেষ চীনের তরফ থেকে ভীতি প্রদর্শন।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যে তাইওয়ানকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। এ বিষয়ে কোনো পরিবর্তন তিনি আনতে চান না। এতে তাইওয়ানের কেউই বিস্মিত হননি। চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি যে এমন করবে তা আগেই বোঝা গেছে। যখন প্রেসিডেন্ট লাইয়ের ডিপিপি টানা তৃতীয় মেয়াদে জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়, তখন অনেকেই উদ্বেলিত ছিল যে- বেইজিং কিভাবে এবং কখন এই নির্বাচন নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেবে। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট লাই তার উদ্বোধনী ভাষণ দেয়ার পর চীন প্রতিক্রিয়া দেবে। ঠিক তাই। প্রেসিডেন্ট লাই শপথ নেয়ার তিনদিন পরে বেইজিং জবাব দিয়েছে। তারা যেভাবে সামরিক মহড়া চালিয়েছে তা অনেকদিন দেখা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে কি ঘটতে যাচ্ছেতা বলা কঠিন। তবে বেইজিং যেটা প্রকাশ্য করেছে তা হলো- যে এলাকায় তারা এই সামরিক মহড়া চালিয়েছে তার বিস্তৃতি অনেক বেশি। এত বড় এলাকায় এর আগে তাদেরকে মহড়া দিতে দেখা যায়নি। এর মধ্যে আছে তাইওয়ান প্রণালী, বাশি চ্যানেল (তাইওয়ান ও ফিলিপাইনের মধ্যে) এবং তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে প্রশান্ত মহাসাগরের বড় অংশ।