দেশ বিদেশ
বিজিএপিএমইএ’র নির্বাচনে একটিভ মেম্বার্স ইউনিয়নের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা
স্টাফ রিপোর্টার
(২ সপ্তাহ আগে) ২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:৫২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৩৬ অপরাহ্ন
প্রধান রপ্তানি আয়ের উৎস তৈরি পোশাক শিল্পের সহযোগী খাত বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স এসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমই) দ্বিবাষির্ক নির্বাচ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ই মে। অ্যাক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং শিল্পকে ডিজিটাল, গতিশীল ও উন্নত করার লক্ষ্যে ২০২৪-২৬ মেয়াদের এই নির্বাচনে ‘একটিভ মেম্বার্স ইউনিয়ন’ নামের একটি প্যানেল তাদের ২০ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। এ প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পলি প্লান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাছিরুল আলম।
প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো সরাসরি ভোটের মাধ্যমে পরিচালনা পর্ষদ গঠন হবে বিজিএপিএমইএ-তে। এ উপলক্ষ্যে সম্প্রতি ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে ‘ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায়ন আপানার অধিকার, আমাদের সাফল্য’ এই স্লোগান নিয়ে প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে একটিভ মেম্বার্স ইউনিয়ন।
অনুষ্ঠানে নিপা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরী একটিভ মেম্বার্স ইউনিয়নের ২১ জন প্রার্থীকে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট শাহ আলম ও বিজিএমইএ’র সহসভাপতি আশরাফ জামাল (দিপু) বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিজিবিএ’র বিভিন্ন পরিচালক ও ঢাকা-চট্টগ্রামের বিভিন্ন গার্মেন্ট, অ্যাক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং শিল্পের মালিকরা।
সভায় প্যানেলটির কোর কমিটির প্রধান ও ব্রিটানিয়া লেবেল বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জামিল আহেমদ বলেন, সদস্যদের প্রাণের দাবি রপ্তানিতে প্রণোদনা আদায়, কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুত নিশ্চিত করা, নিজস্ব ভবন প্রতিষ্ঠা ও ব্যবসায়ীক কাগজপত্র নবায়নের হয়রানি থেকে মুক্তি নিশ্চিত করা। আমাদের মেধা, দক্ষতা এবং যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে দাবিগুলো আদায়ে শতভাগ চেষ্টা থাকবে।
অনুষ্ঠানে অ্যাক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং শিল্পকে ডিজিটাল, গতিশীল এবং এ খাতের উন্নয়নে ২০ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন প্যানেল লিডার মো. নাছিরুল আলম। তিনি বলেন, ৩৩ বছর পর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন হচ্ছে, এটাই আমাদের প্যানেলের প্রথম সফলতা। কারণ ভোটের মাধ্যমে সদস্যদের যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করার সুযোগ থাকে। ভোট হলে সদস্যদের দাবি-দাওয়া আদায়ে বলিষ্ঠ কন্ঠে আওয়াজ তোলা সম্ভব।
বিশ দফা ইশতেহার:
১. আমরা সবাই মিলে বিজিএপিএমইএকে সকলের আশা-আকাক্সক্ষা প্রতিফলনের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত করবো।
২. নবীন, প্রবীণ এবং অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে এবং সকল মত ও পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
৩. সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সাব-কিমিটি গঠন করে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
৪. ভারসাম্যপূর্ণ ক্ষমতায়ন এবং পদায়নের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন করা হবে।
৫. কাস্টমস, বন্দর এবং বিভিন্ন দপ্তরের হয়রানি বন্ধ করে কাজে গতিশীলতা আনতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে।
৬. কাস্টমস এবং বন্দর ব্যবস্থাপনা মনিটরের জন্য শক্তিশালী সেল এবং কমিটি গঠন করা হবে।
৭. ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং রূগ্ন শিল্প মালিকদের সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করা হবে।
৮. ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং রুগ্ন শিল্পসমুহকে আর্থিক এবং লজিষ্টিক সহায়তায় পৃথক সেল গঠন করে তাদের ব্যবসার গতিশীলতা নিশ্চিত করা হবে।
৯. সরকারী নীতি সহায়তা এবং আর্থিক প্রণোদনা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী কমিটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় এবং শক্তিশালী যোগাযোগের মাধ্যমে শিল্পের স্বার্থ এবং সর্বাধিক সুবিধা আনয়ন সুনিশ্চিত করা হবে।
১০. এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকিএমইএ, বিজিবিও সহ সব ব্যাকওয়ার্ড এবং ফরওয়ার্ড লিংকেজ এসোসিয়েশন বা ট্রেডবডিগুলো সঙ্গে সুসম্পর্ক, শক্তিশালী যোগাযোগ এবং স্বমন্বয়ের মাধ্যমে এ খাতের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়নে যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হবে।
১১. বিশ্ব এবং অর্থনৈতিক মন্দার ক্রান্তীকালে সময়োপযোগী এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১২. পরিবর্তিত বিশ্বের চাহিদা এবং বাস্তবতায় টেকসই এবং গুনগত মানসম্পন্ন পণ্য উদ্ভাবন এবং উৎপাদনের জন্য প্রশিক্ষিত জনবল তৈরির জন্য একটি বিশেষায়ীত গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিআইএফটি এর আদলে একটি উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
১৩. বন্ডের মেয়াদ ১ বছরের পরিবর্তে ৩-৫ বছর মেয়াদে উত্তীর্ণ করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
১৪. কারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
১৫. বিদেশি পণ্যের নির্ভরশীলতা কমানোর লক্ষে নতুন পণ্য উদ্ভাবন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
১৬. বিজিএপিএমইএকে ডিজিটালাইজেশন করে সমন্বিত তথ্যভা-ার হালনাগাদ করে প্রত্যেক সদস্যকে স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে।
১৭. বিজিএপিএমইএ’র ল্যাবকে আধুনিকায়ন এবং আন্তর্জাতিক মানে উন্নতিকরনের মাধ্যমে বৈশ্বিক ক্রেতাদের স্বীকৃতি অর্জনে উদ্যোগ নেয়া হবে।
১৮. দ্রুত নিজস্ব ভবন প্রতিষ্ঠা এবং মেম্বার্স ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে সদস্যদের মধ্যে সৌহার্দ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সামাজিক সম্পর্ক স্থাপনে ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট থাকবো।
১৯. নারায়ণগঞ্জকে সাব জোন হিসেবে ঘোষণা এবং এই সাব জোনে সব ধরনের সহযোগিতা করার অঙ্গীকার।
২০. বন্ডের অনেক পলিসিগত ত্রুটি রয়েছে। বন্ড কমিশনারেটের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।