ঢাকা, ১০ মে ২০২৪, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

সেই চেয়ারম্যানকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার
mzamin

ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. আসাদুজ্জামান তপন এবং মেম্বার অজিত বিশ্বাসের সম্পৃক্ততার যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার। বলেছেন, অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে ধরে দিতে পারলে তাকে পুরস্কার দেয়া হবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মধুখালীর ঘটনা পরবর্তী সামগ্রিক বিষয় নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক এ ঘোষণা দেন। তিনি জানান, এ ঘটনার তদন্ত কমিটির অনুরোধের প্রেক্ষিতে তদন্তের সময় আরও সাতদিন বাড়ানো হয়েছে। 

জেলা প্রশাসক বলেন, চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপন একজন স্বভাবগত অপরাধী। কোথায় কখন কীভাবে লুকিয়ে থাকতে হয় সেটি তিনি ভালো করেই জানেন। তিনি আত্মগোপনে যাওয়ার আগে মোবাইল ফোন রেখে গেছেন। এর আগে আমরা মাগুরায় তার অবস্থান শনাক্ত করি। কিন্তু যখন তাকে ধরার জন্য অভিযান চালানো হয় তখন যশোরে পালিয়ে যান। এরপর যশোরেও তাকে ধরতে অভিযান চালানো হলেও পাওয়া যায়নি।

ইউপি চেয়ারম্যান তপনকে এর আগে দুইবার বরখাস্ত করা হয়েছিল। একবার ইউএনও’র উপরে হামলার ঘটনায় এবং আরেকবার টিসিবি’র কার্ড দুর্নীতির কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

বিজ্ঞাপন
দু’বারই উচ্চ আদালতে আপিল করে তিনি পদ ফিরে পান।  একারণে তার মধ্যে একধরনের বেপরোয়া মনোভাব তৈরি হয়েছে। তিনি ভেবেছিলেন, যত অপরাধই করুক না কেন তিনি পার পেয়ে যাবেন। ঘটনার পর ধর্মমন্ত্রীর সফরের সময়েও চেয়ারম্যান তপনকে মন্ত্রীর প্রোগ্রামে দেখা গেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, তার দ্বৈত ভূমিকার কারণে তাকে সেভাবে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়নি। তবে ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারা যেন দ্রুত আত্মসমর্পণ করেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে সকলের সহযোগিতা চাই। তাদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য আমরা সকলের সহযোগিতা চাই। কেউ যদি অন্য আসামিদের অবস্থানও জানাতে পারেন তাহলে তাদের উপযুক্ত পুরস্কার দেয়া হবে।
পঞ্চপল্লীর ঘটনায় গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, এ ঘটনার পরে ফরিদপুরের সাংবাদিকরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে এমন একটি নিউজও করেননি। প্রধানমন্ত্রীও ফরিদপুরের সাংবাদিকদের এই আচরণে তাদের প্রশংসা করেছেন। ঘটনার পর আমাদের সঙ্গে ওই রাতে ঘটনাস্থলেও থেকেছেন। তারা প্রত্যেকটি জায়গায় উপস্থিত থেকে পুরো বিষয়টি যথাযথভাবে উপস্থাপন করায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে বিষবাষ্প ছড়ানোর আশঙ্কা ছিল সেই সুযোগ কেউ পায়নি। এ পর্যন্ত আপনারা যথেষ্ট দায়িত্বশীল আচরণ করেছেন। এটি সমগ্র ফরিদপুরের মর্যাদা রক্ষা করেছে।

তিনি বলেন, যদি কেউ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার পাঁয়তারা চালানোর চেষ্টা করেন- বা সে ধরনের কোনো খবর থাকে সে বিষয়ে তথ্য দেয়ার জন্য আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি।
জেলা প্রশাসক বলেন, ইসলামী দলগুলোর মতো সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি আমাদেরও। একটি আন্দোলনের ডাক দিলে সেখানে নানাধরনের লোক ঢুকে যায়। অবরোধের সময়েও একটি মহল সেখানে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে চালানোর চেষ্টা হয়েছে। 
তিনি নিহতদের পরিবারকে ধর্মমন্ত্রী এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর পক্ষ থেকে নগদ আর্থিক সহায়তা করা ছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তার তথ্য তুলে ধরেন এবং এ ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা ও তাদের পরিবারকে জীবিকা নির্বাহের জন্য খাদ্যসামগ্রী প্রদান ও কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান। তাই এ ঘটনাকে নিয়ে যাতে কোনো মহল বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের অপচেষ্টা চালাতে না পারে সেজন্য সকলের সহযোগিতা চান। এ ঘটনাকে যাতে সাম্প্রদায়িক উস্কানির কাজে কেউ ব্যবহার করতে না পারে সেদিকেও সকলকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান। 

জেলা প্রশাসক বলেন, এ ঘটনার পর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (নেজারত) মো. আলী সিদ্দিকীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তবে ঘটনার পর উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তদন্ত যথাসময়ে সম্পন্ন করা যায়নি। এজন্য তারা সময় চেয়েছে। 
তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। কোনো বাড়িতে আক্রমণ করে পরিস্থিতি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা চলছে। এজন্য আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত এবং তদন্ত রিপোর্ট না দেয়া পর্যন্ত মধুখালীতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলেও জানান।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (নেজারত) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, ডিডিএলজি’র উপ-পরিচালক রওশন চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াসিন কবীর, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না তাসনিম, ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী সহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত

কথা হলো মন্দিরে আগুন দিলো কে? দল তাকে আশ্রয় দেবে, পুলিশ ও প্রশাসন তাঁকে রক্ষা করবে, আদালত তাকে ক্ষমতাশালী করবে। ঘটনা পরে তাই মনে হলো। যশোর পর্যন্ত যেহেতু যেতে পারছেন তাহলে বাকিটাও পারবেন।

নামহীন
২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৯:১৬ পূর্বাহ্ন

এই সমস্ত লোক হাসানো ফালতু কথা না বলে সরাসরি বলে দেন সে আওয়ামীলীগের নেতা তাকে ধরা যাবে না!বা ধরলে চাকরি থাকবে না।

Titu
২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ১:৫৭ অপরাহ্ন

These are eye wash. Nothing will be happen. As Nation, we are not gentle.

iqbal Hossain
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ৩:৪৩ অপরাহ্ন

এধরণের একটা বর্বর, নিষ্ঠুর অপরাধী কিভাবে চেয়ারম্যানের আসনে বসলো এটা ভাবতেই তো অবাক লাগে?

Rafiqul Islam
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১২:৫৬ অপরাহ্ন

"পঞ্চপল্লীর ঘটনায় গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, এ ঘটনার পরে ফরিদপুরের সাংবাদিকরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে এমন একটি নিউজও করেননি। প্রধানমন্ত্রীও ফরিদপুরের সাংবাদিকদের এই আচরণে তাদের প্রশংসা করেছেন। ঘটনার পর আমাদের সঙ্গে ওই রাতে ঘটনাস্থলেও থেকেছেন। তারা প্রত্যেকটি জায়গায় উপস্থিত থেকে পুরো বিষয়টি যথাযথভাবে উপস্থাপন করায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে বিষবাষ্প ছড়ানোর আশঙ্কা ছিল সেই সুযোগ কেউ পায়নি। " যদি বিষয়টা উল্টো হতো অর্থাৎ মুসলিম কর্তৃক কোন হিন্দুকে এ রকম গুজবে পিটিয়ে হত্যা করা হতো তখন কি হতো? আপনি কি একটু চিন্তা করতে পারেন? মিডিয়া আর সরকার মিলে মুসলিম এবং ইসলাম বিদ্ধেষ কিভাবে ছড়াতো? জঙ্গি জঙ্গি করতে করতে, সংখ্যালগুর উপর নির্যাতন বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠাতো। আফসোস তারপর ও মুসলিমরা জঙ্গী।

Rafiqul Islam
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১২:৫৩ অপরাহ্ন

উনি যেহেতু চেয়ারম্যান নির্বাচন করে বারবার নির্বাচিত হচ্ছেন অবশ্যই উক্ত এলাকায় উনার যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।

মোশারফ হোসেন স্বপন খ
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন

একজন স্বভাবগত অপরাধী কিভাবে বার বার ধরা পড়ে এবং ছাড়া পায়। দেখছি দেশটা ক্ষমতার জোড়ে দেশটা এখন তাসের ঘরে রুপান্তরিত হয়েছে আর আমরা চুষেপটুষ খাতছি আর বগল বাজাচ্ছি যাকে বলে হিরক রাজার দেশ।।

srkhan
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন

এখনো কি সে চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে আছে? আগে সেটা জানতে হবে।

Abdus Salam
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন

এসব সন্ত্রাসীদের গডফাদার কারা। ঐ দুই সন্ত্রাসীর ধরার আগে গডফাদারদের ধরে বিচার করলে ভাল হয় না।

srkhan
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

Alhamdulillah

Md OMAR FARUK
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ৯:৫০ পূর্বাহ্ন

নিহতদের পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতি পূরণ দিন। এরপর বাকী বিচার আচার।

মজলুম বনি আদম
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ৭:০২ পূর্বাহ্ন

Unader k konodin pawa jabe na

Munir
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ৫:১৫ পূর্বাহ্ন

এইগুলা ফালতু & বুলশীট আই-ওয়াশ ছাড়া আর কিছুই না। পাবলিকরে বেকুব মনে করে!

Anamul Hasan
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১:৪৫ পূর্বাহ্ন

দায়ী সকলের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

abu-mahtab
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১২:৩১ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status