ঢাকা, ১০ মে ২০২৪, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

ভালো কোম্পানির নামে গুজব ছড়িয়ে শেয়ার কারসাজি করতো তারা

স্টাফ রিপোর্টার
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার
mzamin

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ভালো কোম্পানির কাছে চাঁদা চাইতো চক্রের সদস্যরা। চাঁদা পেলে দুর্বল কোম্পানির নামে ভালো তথ্য ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করা হতো। আর টাকা না পেলে ভালো কোম্পানির নামে গুজব ছড়িয়ে শেয়ার কারসাজি করতো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে এবং অনলাইন মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে তারা বাজার কারসাজির কাজ করতো। এরকম একটি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরা হলো-মো. আমির হোসাইন ওরফে নুরনুরানী (৩৭), নুরুল হক হারুন (৫২)  ও আব্দুল কাইয়ুম (৩৯)। শুক্রবার রাতে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের (দক্ষিণ) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) সাইফুর রহমান আজাদের নেতৃত্বে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি জানায়, গ্রেপ্তাররা আগে থেকেই সরকারবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। গ্রেপ্তার আমির হোসাইনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দমন আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজার ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), কমিশনের চেয়্যারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রুপ খুলে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে আসছিল।

ডিবি’র অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, পুঁজিবাজার একটি স্পর্শকাতর জায়গা।

বিজ্ঞাপন
এখানে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী তাদের সর্বস্ব নিয়ে এসে বিনিয়োগ করেন। অল্পতেই এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একটি স্বার্থান্বেষী চক্র মিথ্যা তথ্যে বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করে আসছিল, এমন অভিযোগে বিএসইসি রমনা থানায় মামলা করে। মামলা তদন্তের ধারাবাহিকতায় ডিবি তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তাররা মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর জন্য ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামে গোপনীয় গ্রুপ ব্যবহার করে। এসব গ্রুপগুলোতে শেয়ারবাজার সংক্রান্ত মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য প্রদান করে আসছিল।

ডিবি প্রধান বলেন, তারা বিভিন্ন সময় আন্দোলনের নামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে রাস্তা দখল করে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে। এ ছাড়া, তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে সেসব কোম্পানি সম্পর্কে অনলাইনে অপপ্রচার শুরু করে। এমনকি কোম্পানির অফিসগুলোতেও হামলা করে। তারা বিভিন্ন শেয়ার নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দাম বৃদ্ধি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে। এসব করার জন্য গোপনীয় গ্রুপ ব্যবহার করে আসছিল। এসব গ্রুপের সদস্যদের একটি নির্দিষ্ট ফি দিয়ে গ্রুপে যুক্ত হতে হয়। আবার শেয়ারে প্রফিট হলে লভ্যাংশের অংশ দিতে হয়। কিন্তু লোকসান হলে তারা দায়িত্ব নেয় না। গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। অনলাইনে গুজব ছড়িয়ে যাতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমাদের নজরদারি অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি। ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (দক্ষিণ) এডিসি সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, গ্রেপ্তার আমির হোসাইন ছদ্মনাম নূর নূরানী ব্যবহার করে গ্রুপগুলো পরিচালনা করতো। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে সব মিলিয়ে ৮-১০টি গ্রুপ চালায়। নুরুল হক হারুন বিনিয়োগকারী ঐক্যপরিষদের সহ-সভাপতি পরিচয়ে বিভিন্ন সদস্যদের একত্রিত  করে কোম্পানিগুলোতে চাঁদাবাজি করে। আব্দুল কাইয়ুম রয়েল ক্যাপিটাল নামক ব্রোকারেজ হাউজের সঙ্গে যুক্ত। সে হোয়াটসঅ্যাপ এবং টেলিগ্রাম গ্রুপে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন শেয়ার সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতো।
 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status