ঢাকা, ৩ মে ২০২৪, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অনলাইন

আইসিডিডিআর,বি’র গবেষণা-সামাজিক কুসংস্কারের শিকার হয় ২৮ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী

স্টাফ রিপোর্টার

(১ সপ্তাহ আগে) ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ৭:৪৪ অপরাহ্ন

mzamin

যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবার নানাভাবে সামাজিক কুসংস্কারে প্রভাবিত হয়ে থাকে। এমনকি এসব কুসংস্কার তাদের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকেও বাধাগ্রস্ত করছে বলে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর) এক গবেষণায় উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, প্রায় ২৮ শতাংশ যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তি তাদের চিকিৎসা গ্রহণ ও সেবাচক্রের প্রথম তিনটি পর্যায়ে স্টিগমা বা কুসংস্কারে প্রভাব অনুভব করেন।

মঙ্গলবার রাজধানী মহাখালীর আইসিডিডিআর,বির সাসাকাওয়া মিলনায়তনে  ‘বাংলাদেশে যক্ষ্মা-সম্পর্কিত স্টিগমার অবস্থা’ শীর্ষক গবেষণার ফল প্রকাশে আয়োজিত সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়।
গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে সেমিনারে বলা হয়, যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের প্রায় ২২ শতাংশ সদস্য স্টিগমার সম্মুখীন হন। আর ১৪ ভাগ যক্ষ্মা রোগী ও তাদের পরিবারের ১১ ভাগ সদস্য বাড়িতেও স্টিগমা অনুধাবন করেন। এমনকি স্টিগমাকে প্রায়শই এমন একটি সামাজিক আচরণ হিসেবে দেখা হয়, যেখানে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়। অপমানজনক ও নেতিবাচক আচরণের শিকার হন তারা।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে সামাজিক কুসংস্কার বা স্টিগমার প্রভাব অনেক। যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা যক্ষ্মার কারণে বিভিন্ন সামাজিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা জেলার শহর ও গ্রামীণ এলাকায় পরিচালিত এই সমীক্ষায় স্টপ টিবি পার্টনারশিপের ‘টিবি স্টিগমা অ্যাসেসমেন্ট ডেটা কালেকশন টুল’ ব্যবহার করা হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা ছিলেন গত পাঁচ বছরের মধ্যে যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্য, কমিউনিটি প্রতিনিধি ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তিরা।

গবেষণা থেকে জানা যায়, যক্ষ্মাসংক্রান্ত স্টিগমা নারীদের বেশি প্রভাবিত করে। এতে সামাজিকভাবে অসম্মান, হয়রানি ও আর্থিক অসুবিধায় পড়েন তারা।

গবেষণাটি বাংলাদেশে যক্ষ্মা-সংক্রান্ত স্টিগমার ব্যাপক প্রভাবকে তুলে ধরে এটিকে যক্ষ্মার সেবা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

বিজ্ঞাপন
স্টিগমার কাঠামোগত এবং সামাজিক কারণগুলো মোকাবিলা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। যার লক্ষ্য মানসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা এবং জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, যক্ষ্মাসহ বিভিন্ন রোগের বিষয়ে স্টিগমা সবসময়ই ছিল। এর কারণ শিক্ষার অভাবের পাশাপাশি মন-মানসিকতার উপরেও নির্ভর করে। ফলে চিকিৎসকরা স্টিগমামুক্ত কি না সেটাও নিশ্চিত নয়। আমাদের কেয়ার প্রোভাইডাররাও অনেক সময় রোগীদের দূর থেকে করণীয় বলে দেন। যেটা অনেক সময় দুঃখজনক অবস্থায়ও পৌঁছায়।

তিনি আরও বলেন, টিবি নিয়ন্ত্রণে সরকার কী করতে পারে, সে ফর্মুলা দিলে সরকার অবশ্যই তা বাস্তবায়ন করবে। আমাদের নলেজ বেইজড পরামর্শ থেকে সমাধানমূলক পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। টিবি নিয়ন্ত্রণে আমরা অনেক অর্জন করেছি তবে আমাদের আরও অনেক দূরে যেতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে আইসিডিডিআর,বি’র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, একসময় মানুষ যক্ষ্মা নিয়ে কথা বলতে ভয় পেত, তবে এখন দেশের যেকোনো প্রান্তে গেলেই যক্ষ্মার নাম শোনা যায়। এটা হয়েছে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সফল উদ্যোগের কারণে। যক্ষ্মার কঠিন চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে হলে আমাদের এভাবেই যৌথভাবে কাজ করে যেতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তারের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া,  জাতীয় যক্ষ্মা  নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির  লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. মাহাফুজার রহমান সরকার প্রমুখ।
 

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status