বাংলারজমিন
ফুলবাড়ীয়ায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলার বরাদ্দের অর্থ লোপাটের অভিযোগ
ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবারময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী মেলার নামে সরকারি বরাদ্দের অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। সরকারিভাবে ২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ৫০টি স্টল দিয়ে দায়সারাভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছেন। এরমধ্যে গরু-ছাগলের স্টল ছিল ২২-২৪টি। প্রদর্শনী মেলা ঘুরে দেখা গেছে, প্রদর্শনীতে খামারিরা তাদের পশু গাড়ি দিয়ে মাঠে নিয়ে আসার কথা থাকলেও বেশির ভাগ পশুকে খামারিরা তীব্র রোদে পায়ে হেঁটে প্রদর্শনী মাঠে নিয়ে আসেন। মাঠে পৌঁছালে খামারিদের অনেক পশুর মাথায় পানি ঢালতে দেখা গেছে। অথচ প্রদর্শনী মাঠে পশুর যাতায়াত বাবদ সরকারি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২০ হাজার টাকা। অতিথি আপ্যায়নে এলডিডিপি প্রকল্পের সরকারি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। খাবারের প্যাকেটও করা হয়েছে বরাদ্দের তুলনায় অনেক কম। খাবারের এমন বরাদ্দ থাকলেও সেই খাবার নিয়ে খামারিসহ উপস্থিতিদের মাঝে বিতরণ কালে কাড়াকাড়ির ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, মেলায় আগত ভিআইপি আপ্যায়নের জন্য ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ থেকে সকালের নাস্তা আর গণখাবারের প্যাকেট দিয়ে আপ্যায়ন সেরেছেন প্রাণিসম্পদ অফিস। খামারিসহ উপস্থিতিদের খাবারের জন্য বরাদ্দ পায় ৬০ হাজার টাকা। মেলায় পশু প্রদর্শনের জন্য সরকারিভাবে পুরস্কারের জন্য ৩ জনের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়ার কথা থাকলেও গরু প্রদর্শনের জোরবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল মতিন প্রথম পুরস্কার পান নগদ ৩ হাজার টাকা। দ্বিতীয় পুরস্কার ২ হাজার ও তৃতীয় পুরস্কার পান ১৫শ’ টাকা। প্রদর্শনী মাঠে ছাগল প্রদর্শনীতে ৩ জন পুরস্কার পেয়েছেন সাড়ে ৪ হাজার টাকা। প্লাস্টিকের মগ, থালা দিয়ে অন্যান্য সান্ত্বনা পুরস্কার দিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। প্রদর্শনী মাঠে পশু প্রদর্শনীতে যাতায়াত বাবদ ২টি গাড়ির জন্য ২০ হাজার টাকা সরকারি বরাদ্দ থাকলেও আগত খামারিদের যাতায়াত ভাড়া বিতরণে দেখা দিয়েছে অনিয়ম। প্রথম পুরস্কার প্রাপ্ত গরুর খামারি পেয়েছেন ৬শ’ টাকা অপর দুই জনকে যাতায়াত ভাড়া বাবদ দিয়েছে ৬শ’ টাকা করে। অন্যান্য আগত পশু খামারিরা যাতায়াত ভাড়া বাবদ ২-৩শ’ টাকা করে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অফিসের রুবেল মিয়া। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার সীমান্তবর্তী ২০ কিলোমিটার দূর থেকে ভবানীপুর ইউনিয়নের হেলাল উদ্দিন ৫টি ছাগলের বাচ্চাসহ প্রদর্শনী মাঠে প্রদর্শনের জন্য এনে যাতায়াত ভাড়া পেয়েছেন মাত্র ৩শ’ টাকা। এ ছাড়াও অপর দুই ছাগল খামারি ভাড়া বাবদ পেয়েছেন আরও ৬শ’ টাকা। ছাগল খামারি হেলাল উদ্দিন বলেন, ভবানীপুর থেকে ছাগলের ৫টি বাচ্চাসহ ফুলবাড়ীয়া প্রদর্শনী মাঠে নিয়ে আসতে আমার খরচ হয়েছে ৭শ’ টাকা। আমাকে প্রাণিসম্পদ অফিস অফিস থেকে যাতায়াত ভাড়া বাবদ হাতে ধরিয়ে দেন ৩শ’ টাকা। এটা কি বিবেকের কাজ হলো? মেলা শেষে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার এমন অনিয়মের বিষয়ে খামারিদের মাঝে ক্ষোভ অসন্তোষ দেখা দেয়। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ না করে আপনার কাছে অভিযোগ করলো? আমি বরাদ্দের টাকা থেকে ভ্যাট কেটে যা পাওয়া গেছে তা অফিসকে খরচ করতে বলেছি।