ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, রবিবার, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫ রজব ১৪৪৬ হিঃ

অর্থ-বাণিজ্য

বাজার থেকে কেউ খালি হাতে ফিরছেন না: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

(১১ মাস আগে) ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৭:৫৬ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৪:৩৯ অপরাহ্ন

mzamin

মানুষের হাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা আছে এমন মন্তব্য করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, বাজারে যে পণ্য ঢুকছে তা অবিক্রীত থাকছে না। কেউ খালি হাতে ফিরছেন না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ অডিটোরিয়ামে ‘দ্রব্যমূল্যে অস্থিরতা : উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দৈনিক যুগান্তরের পঁচিশ বছর উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। যুগান্তরের প্রকাশক ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের সভাপতিত্বে এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) রিসার্চ ফেলো ড. বদরুন্নেসা আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম। বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে ছিলেন বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. এম কে মুজেরী, ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান ও সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাজারে কখনো নজরদারি করে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। বাজারের একটা সাপ্লাই চেন আছে। এ সাপ্লাই চেনে উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে প্রত্যেকে যার যার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, কৃষি পণ্যগুলো হার্ভেস্টিংয়ের সময় বেশি উৎপাদন হয়। তারপর ৩-৪ মাস উৎপাদন হয় না। এসময় যদি আপনি এটাকে গুদামজাত না করেন তাহলে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একইভাবে আমদানি পণ্য আমরা যদি সিজনে না কিনে অফ-সিজনে কিনি আমাদের বেশি দাম দিতে হবে।

তিনি বলেন, তেল এবং চিনি এ দুটি পণ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। আমাদের মতো একটা দেশে ১৭ কোটি মানুষকে আমদানি করে সরবরাহ করা বেশ কঠিন।

টিটু বলেন, বাজারে যে পণ্য আমাদের ঢুকছে তা কিন্তু অবিক্রীত থাকছে না। আবার কেউ খালি হাতে ফিরছে না। এ দেশে দুর্ভিক্ষ বা খাদ্যের সংকট ছিল। বাজারে টাকা দিলেও খাদ্য পাওয়া যেত না। সেখান থেকে আমরা বের হয়ে এসেছি। মানুষের হাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা আছে।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আমাদের রিজার্ভের টাকা তেল আমদানিতে খরচ হচ্ছে। বিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে জ্বালানি আমদানিতে। রিজার্ভ নেই, এটা সত্য নয়। রিজার্ভ কিছুটা চাপে আছে। রিজার্ভের টাকা যদি আমরা জনগণের প্রয়োজনে খরচ করতে না পারি, তাহলে সে টাকা দিয়ে আমরা কী করবো। আইএমএফের নীতি অনুযায়ী তিনমাসের পণ্য আমদানির জন্য আমাদের যথেষ্ট ডলার রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেও সাড়ে ১৩ লাখ টন খাদ্যপণ্য আমদানি হয়েছে। এর কারণে আমরা দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি রমজানে আমাদের কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট থাকবে না। আমরা যদি আমদানি না করতাম তাহলে তো রিজার্ভ আরও বেশি থাকতো।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান বলেন, আমাদের দেশে দোষ চাপানোর প্রবণতা বেশি। এখানে দোষ হলো- ব্যবসায়ীর, শিল্পপতির ও সরকারের। আর কারও দোষ নেই! এর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সামনে কীভাবে সমস্যা থেকে উত্তরণ করা যায়, সে জন্য কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, বাজারে পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে না পারলে যত আইনই করেন বা থাকুক, তা কার্যকর করা যাবে না। পণ্যের উৎপাদন ও আমদানি পণ্যের বন্দর থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা দূর করা দরকার। এটা করা না গেলে নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে যায়।

বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক এম কে মুজেরী বলেন, মূল্যস্ফীতি বেশি হলে অস্থিরতা বাড়ে, এটা ঠিক। সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা থাকলেও অস্থিরতা বাড়ে। এর সমাধানের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে কাজ করতে হবে। আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও দায়িত্বপ্রাপ্তরা তাদের সঠিক দায়িত্ব পালন করছে কি না সেটিও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।

সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার দিকে নজর রাখতে হবে। সামষ্টিক অর্থনীতি ঠিক করতে হবে। এটি ঝুঁকির দিকে যাচ্ছে। এটি সমাধান করা গেলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ক্রয় ক্ষমতা বাড়ানো যাবে। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগ নিলে আশা করছি লক্ষ্য অর্জন সহায়ক হবে। তিনি বলেন, সরবরাহের বিষয়ে বলবো- এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক থেকে শুরু করে তদারকিতে যতগুলো প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাদের শক্তি বাড়াতে হবে। এক এক ক্ষেত্রে এক এক তথ্য থাকে। তথ্যের এ বিভ্রান্তি দূর করতে হবে। এছাড়া কৃষি পণ্য বা ভোগ্যপণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। যাতে তারা কোনো পণ্য রপ্তানি বন্ধ করলে তা আগে থেকে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি পণ্যের ভবিষ্যৎ বাজার দর নির্ধারণে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করা যেতে পারে।

গোলাম রহমান বলেন, দ্রব্যমূল্য বাড়লে সাধারণ মানুষের কষ্ট এবং দাম কমে গেলে ব্যবসায়ীদের কষ্ট হয়। এর মধ্যে অতি ধনী বা ধনী শ্রেণি এবং অতি দরিদ্র বা দারিদ্রসীমার নিচের লোকদের কোনো সমস্যা হয় না। এর কারণ হলো, যারা দরিদ্র তাদের লক্ষ্য থাকে টিসিবি আসবে কবে, বিধবা ভাতা পেল কি না। বয়স্ক ভাতা পেল কি না ইত্যাদি। আর যারা ধনী তারা যা চায় তাই পায়। এ জন্য তাদের চিন্তা নেই। সমস্যা হলো, মাঝখানের ১০ কোটির বেশি মানুষের। যারা মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতির কষাঘাতে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।

পাঠকের মতামত

"মানুষের হাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা আছে।" খালি হাতে ফেরার কথা নাকি?! Hat Vorti TAKA Bag Borti Bazar, Kew Firena Khali Hate- Raja-Prozar BAZARE.

-Moti
২ মার্চ ২০২৪, শনিবার, ৬:৫১ পূর্বাহ্ন

Something wrong with tis man- mentally.

nurul choudhury
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শুক্রবার, ৭:০২ পূর্বাহ্ন

এই মন্ত্রী দের লজ্জা শরম বলতে কিছু নেই

মোঃ ওমর ফারুক
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শুক্রবার, ১:৪০ পূর্বাহ্ন

আমাদের কথা বাদ দিলাম । আমরা না হয় আপনাদের কাছে মানুষ নই । কিন্তু যখন এসব কথা বলেন তখন কি নিজের সন্তানদের কথা চিন্তা করেন না ? একজন বাবা এত মিথ্যা বলে , এমন সন্তানদের এর থেকে বড় লজ্জা আর কি হতে পারে? আপনাদের সন্তানদের জন্যে ইদানিং করুনা হয় । কত কপাল খারাপ হলে এমন মিথ্যাবাদী বাবা জুটে এদের কপালে।

Rashed
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:০২ অপরাহ্ন

মন্ত্রীত্বে পাগল ব্যক্তিত্বহীন বাচাল।

মাশুকুর রহমান
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৭:২৫ অপরাহ্ন

অবশ্যই মাছ কিনতে গিয়ে মাছের কাটা কিনে ফিরে আসছে।

তৌফিকুর রেজা
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৬:৫১ অপরাহ্ন

বাজার থেকে খালি হাতে ফিরলে, মানুষ না খেয়ে মা-রা গেলে বুঝবেন জিনিস পত্রের দাম বেড়েছে। আহ্ কি লজিক্যাল যুক্তি।

মোঃ কামরুল হাসান
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৬:২৬ অপরাহ্ন

এমনকি বাজারে মাছের কাঁটা পর্যন্ত অবিক্রিত থাকছে না, মানুষ সেটাও কিনে ফেলছে। পকেটে টাকা বেশি হলে যা হয় আরকি?

মোল্লা
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৫:৪৮ অপরাহ্ন

খালি হাতে ফেরার কথা নাকি?!

রাশিদ
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

অর্থ-বাণিজ্য থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

Hamdard

অর্থ-বাণিজ্য সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status