অর্থ-বাণিজ্য
প্রকল্প বারবার সংশোধন করা একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে: সিপিডি
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ২৯ জুন ২০২২, বুধবার, ৫:৩৮ অপরাহ্ন
পাবলিক অবকাঠামো প্রকল্প (পিআইপি) বাস্তবায়নে বারবার সংশোধন করা একটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে অবকাঠামো নির্মাণের ব্যয় বাড়ছে। ফলে প্রকল্পগুলোর কার্যকারিতার উপর সম্ভাব্য ফলাফল এবং বিনিয়োগের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মন্তব্য করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
বুধবার নগরীর গুলশান হোটেল লেকশোরে ‘বাংলাদেশে পাবলিক অবকাঠামো প্রকল্পের বাস্তবায়ন : অর্থের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা’ শীর্ষক সংলাপে সিপিডি’র বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান এ মন্তব্য করেন।
সংস্থাটি বলছে, ‘উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উচিত অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) মতো একটি উন্নয়ন কাঠামো তৈরি করা এবং নতুন ক্যাডার তৈরি করা। সিপিডি বলছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে জমির অভিযোগ একটি বড় সমস্যা। এটি সমাধানের জন্য সৎ সরকারি কর্মকর্তার প্রয়োজন। এছাড়া প্রকল্পগুলো সময়মতো শেষ করতে হবে, সাশ্রয়ী মূল্যে গুণমান বজায় রাখতে হবে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক ও সামাজিক আয় নিশ্চিত করতে হবে বলে অনুষ্ঠানে বক্তারা পরামর্শ দেন। সরকারের বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকে (আইএমইডি) শক্তিশালী করতে হবে এবং মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বিভাগীয় অফিস স্থাপন করতে হবে বলেও পরামর্শ দেন বক্তারা।
মূল প্রবন্ধে সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১০টি পিলার বা ভিতকে কেন্দ্র করে প্রজেক্ট বাস্তবায়নের গুরুত্ব দেয়া উচিত। যার মধ্যে রয়েছে অভিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করা, এখানে কী কী ঝুঁকি রয়েছে, অবকাঠামোটি বাস্তবায়নের ফল, যথাযথ ডিজাইন, পরামর্শ প্রক্রিয়া, প্রকল্প বাস্তব জীবনে কতটুকু লাভজনক ইত্যাদি। আর প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হওয়ার পর যেন ঠিকাদার দায়বদ্ধ থাকে এমন বিষয়টি প্রজেক্টে থাকা উচিত। প্রজেক্ট পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কি না এ বিষয়টিও নিশ্চিত করা জরুরি।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প চলাকালীন সময়ে প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের কর্মস্থলে পাওয়া যায় না। উপজেলা, জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে গেলে অনেক সময়েই ‘কি পারসনদের’ পাওয়া যায় না। এর কারণ খুঁজে বের করার প্রয়োজন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা সত্ত্বেও অবস্থার উন্নতি হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিকল্প নেই। প্রকল্প পঞ্চগড়, প্রজেক্ট পরিচালক ঢাকায় থাকেন। এটা কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? বরাদ্দ বা কাজের জন্য ঢাকায় হয়ত আসতে হবে, কিন্তু সার্বক্ষণিক ঢাকায় থাকা দরকার নেই। এটা আমাদের জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ কাজের জায়গায় থাকতে চায় না। তিনি বলেন, শুধু প্রজেক্ট পিডি নয়, সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদেরও কাজের স্থলে পাওয়া যায় না। উপজেলা, জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে অনেক ‘কি পারসনকে’ আমরা পাই না। এর কারণ খুঁজে বের করার প্রয়োজন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কঠিন আদেশ দিয়েছেন, কিন্তু তারপরও আমরা অর্জন করতে পারছি না। আমরা বিষয়টি আলাপ করি, কিন্তু সমাধান হচ্ছে না। আর একটি বিষয় বলি যার অধীন প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হচ্ছে, সে আবার ঢাকায় বসে আছেন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় সংলাপে অংশ নেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটির অন এস্টিমেটেসের চেয়ারম্যান উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ, সংসদ সদস্য ইঞ্জি. এনামুল হক, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান প্রমুখ। সিপিডি ও দ্য এশিয়ান ফাউন্ডেশন এ সংলাপের আয়োজন করে।