দেশ বিদেশ
দেশে করোনার নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত দ্রুত ছড়ায়
স্টাফ রিপোর্টার
২২ জুন ২০২২, বুধবারদেশে মহামারি করোনাভাইরাস অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট বা উপ-ধরন শনাক্ত হয়েছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারের একদল গবেষক বিএ.৪/৫ (ইঅ.৪/৫) নামের নতুন এ সাব-ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত করেছেন। মঙ্গলবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) আবদুর রশিদ মানবজমিনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
যবিপ্রবি গবেষক দল জানায়, আক্রান্ত দুজনের মধ্যে একজনের বয়স ৪৪ বছর, আরেকজনের বয়স ৭৯ বছর। তাদের মধ্যে একজন করোনার বুস্টার ডোজের টিকা এবং অপরজন দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন। আক্রান্তদের শরীরে জ্বর, গলাব্যথা, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন মৃদু উপসর্গ রয়েছে। তারা দুজনই স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন বলে গবেষকেরা ধারণা করছেন। গবেষক দলটি আরও জানায়, অমিক্রনের নতুন এ উপ-ধরনটির স্পাইক প্রোটিনে অমিক্রনের মতোই রূপান্তর (মিউটেশন) দেখা যায়। তবে এ ধরনে ডেল্টা ধরনের মতো স্পাইক প্রোটিনের ৪৫২ নম্বর অ্যামাইনো অ্যাসিডে মিউটেশন থাকে। এ ছাড়া এই উপ-ধরনের স্পাইক প্রোটিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ৪৮৬ নম্বর অ্যামাইনো এসিডেও মিউটেশন দেখা যায়। যবিপ্রবি গবেষক দল জানিয়েছে, এই উপ-ধরনটি দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা সংক্রমণের পঞ্চম ঢেউ এবং সামপ্রতিক কালে ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য দায়ী বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। করোনার টিকা নেয়া ব্যক্তিরাও অমিক্রনের এই উপ-ধরনে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই উপ-ধরনটি বর্তমানে সংক্রমণশীল অন্যান্য ধরনের তুলনায় বেশি সংক্রমণ ঘটাতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। করোনার এই নতুন উপ-ধরন শনাক্তের বিষয়ে যবিপ্রবি’র ভিসি ও জিনোম সেন্টারের পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, এই উপ-ধরনটি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহজেই ফাঁকি দিতে সক্ষম। এ জন্য মাস্ক ব্যবহারসহ কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই। তিনি জানান, অচিরেই এ উপ-ধরনের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিক্যুয়েন্স করে এ বিষয়ে আরও তথ্য জানা সম্ভব হবে। যবিপ্রবি’র অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক ইকবাল কবীরের নেতৃত্বে করোনার নতুন এই উপ-ধরন শনাক্ত হয়।
এ প্রসঙ্গে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, আমরা এখনো এই উপ-ধরনে শনাক্ত হওয়ার কথা শুনিনি। তবে এটা যদি উপ-ধরন হয়ে থাকে, তাহলে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই বলেই আমার ধারণা। তবে মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে।
দেশে প্রথম অমিক্রনে সংক্রমিত হন জিম্বাবুয়ে ফেরত বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের দুই সদস্য। গত বছরের ৯ই ডিসেম্বর দেশে প্রথম অমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর জানা যায়। করোনাভাইরাসের জিনোমের উন্মুক্ত বৈশ্বিক তথ্যভাণ্ডার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটার (জিআইএসএআইডি) তথ্য মতে, জিনোম সিক্যুয়েন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৭৯ জন অমিক্রন ধরনে আক্রান্ত হয়েছেন বলে শনাক্ত হয়েছে।