দেশ বিদেশ
জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দল’র আঞ্চলিক প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৫
স্টাফ রিপোর্টার
২৭ নভেম্বর ২০২৩, সোমবারনিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দল’র কুমিল্লা বিভাগের আঞ্চলিক প্রধানসহ ৫ সক্রিয় জঙ্গি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের এন্টি-টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এন্টি-টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) একটি দল শনিবার বিকালে কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি মডেল থানার দক্ষিণ ঠাকুরপাড়ার রামমালা রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. মশিউর রহমান ওরফে রাসেল (৩৭), আবু সুফিয়ান (২০), সালাউদ্দিন (৪৩), আলাউদ্দিন (৩১) ও মো. জুলহাস হোসেন ওরফে জুলাস (২৫)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে আটটি মোবাইল ফোনসহ বিপুল পরিমাণ সাংগঠনিক দলিলাদি জব্দ করা হয়। গতকাল রাজধানীর বারিধারায় এটিইউ মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (অপারেশন অ্যান্ড মিডিয়া) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, মশিউর রহমান ওরফে রাসেল, আবু সুফিয়ান ও আলাউদ্দিন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আল্লাহর দল কুমিল্লা জেলার নায়ক। সালাউদ্দিন জেলা প্রতিনিধি এবং জুলহাস হোসেন ওরফে জুলাস সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছিল। তারা সংগঠন চালাতে নিয়মিত চাঁদা দিতো। পাশাপাশি চাঁদা উত্তোলন, পরিকল্পনা ও প্রচারণার দায়িত্ব পালন করতো। দীর্ঘদিন ধরে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করাসহ দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব নষ্ট, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহ ধ্বংস, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে কুমিল্লায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পরে গত কয়েক মাস ধরে আবারো সক্রিয় হতে শুরু করে। এরপর তারা কুমিল্লায় কোচিং সেন্টারের নাম করে বাসা ভাড়া নিয়েছে। কী কারণে বাসা ভাড়া নিয়েছে, তাদের কোনো পরিকল্পনা ছিল কিনা। আমরা অতীতে দেখেছি বাসা বা আস্তানা নেয়ার অর্থ হলো, কাছাকাছি কোথাও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তারা সক্রিয় হতে শুরু করছে। ফলে আমরা ধারণা করছি, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অথবা অন্য কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে তারা সক্রিয় হতে পারে। আমরা তাদের কাছ থেকে পরিকল্পনা জানার চেষ্টা করবো।
এই দলের অর্থায়নের পেছনে কারা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর দল’ নামের এই জঙ্গি সংগঠনটি আর্থিকভাবে খুব শক্তিশালী। বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে তাদের আর্থিক লেনদেন বড় অঙ্কের। ঢাকা, খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বরত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় তাদের সদস্য রয়েছে। প্রতি মাসে অন্য সকল সংগঠনের চেয়ে তাদের কালেকশন অনেক বেশি। এই সকল দলের কিছু সদস্য আছে যারা বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য করে। এমন কি সদস্যরা মাসিক চাঁদা দিয়ে থাকে। বিদেশ থেকেও টাকা আসে। অন্য সকল সংগঠনের দিকে বেশি নজর রাখার সুযোগ কাজে লাগিয়ে সদস্য বাড়িয়েছে এই জঙ্গি সংগঠনটি। ফলে মাঠ পর্যায়ে সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি টাকা সংগ্রহের পরিমাণও তারা বাড়িয়েছে। আমরা তাদের বিষয়ে আরও নজরদারি বাড়াবো।