দেশ বিদেশ
শতভাগ রেশন সুবিধা ও চিকিৎসাসেবা চান অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা
স্টাফ রিপোর্টার
২৬ নভেম্বর ২০২৩, রবিবারঅবসরকালীন শতভাগ রেশন সুবিধা ও চিকিৎসাসেবা চেয়েছেন পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা। ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে অবসরে যাওয়া সদস্যরা বর্তমানে এই রেশন পেলেও এর আগে যারা অবসরে গেছেন তারা এই সেবা থেকে বঞ্চিত। এর আগে অবসরে যাওয়া প্রায় দুই লাখ পুলিশ সদস্য রেশন পান না। অর্থাৎ মাত্র ১ শতাংশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য রেশন সুবিধা পাচ্ছেন। নতুন করে বিষয়টি বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি ও অনূর্ধ্ব সাব-ইন্সপেক্টর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কল্যাণ এসোসিয়েশন নামে অবসরকালীন পুলিশ সদস্যদের দুটি সংগঠন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি’র বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
পুলিশের এই সংগঠন সূত্র জানায়, দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৬ই জানুয়ারি রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য আজীবন রেশন প্রদানের বিষয়টিও সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে এবং সেটির ব্যবস্থা করে দেবে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হলে পরের বছর ২০২০ সালে পুলিশ সপ্তাহ চলাকালে বিষয়টি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তা বাস্তবায়নের জন্য কঠোরভাবে আদেশ প্রদান করেন। এই ঘোষণার পর অর্থ মন্ত্রণালয় তড়িঘড়ি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পুলিশ সদর দপ্তরে সম্ভাব্য খরচের পরিমাণ জানতে চেয়ে চিঠি দেয়।
সদর দপ্তর দেশের সকল পুলিশ সুপারের মাধ্যমে সম্ভাব্য খরচ-সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান চালিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অবসরকালীন পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা ও খরচের হিসাব পাঠায়। পরে ২০২০ সালের ২৯শে জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। জারিকৃত প্রজ্ঞাপন দেখে কর্তব্যরত ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা হতাশ হন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে যেসব পুলিশ সদস্য অবসরে গেছেন শুধুমাত্র তাদের প্রত্যেক পরিবারের দুইজন সদস্য রেশন সুবিধা পাবেন। এক্ষেত্রে দুইজনের জন্য ২০ কেজি চাল, ২০ কেজি আটা, দুই কেজি চিনি, সাড়ে চার লিটার তেল ও দুই কেজি ডাল বরাদ্দ রয়েছে। পরে আরেক আদেশে রেশনের পরিমাণ আরও কমানো হয়। পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, ১৯৭২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বেঁচে থাকা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা প্রায় এক লাখ। এদের মধ্যে ৯০ হাজার সদস্যই হলেন কনস্টেবল থেকে এসআই পদমর্যাদার সদস্য।
অনূর্ধ্ব সাব-ইন্সপেক্টর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কল্যাণ এসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. আনিছুর রহমান হাওলাদার বলেন, শতভাগ পুলিশ সদস্যদের অবসরকালীন রেশন সুবিধা দেয়ার জন্য পুনরায় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি। তিনি বলেন, এ ছাড়া পুলিশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবায় আমাদেরকে সাধারণ চিকিৎসাসেবা দিয়ে সামান্য কিছু ওষুধ দেয়া হয়। আগে আমাদের হাসপাতালে ভর্তির সুবিধা থাকলেও এখন তা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বয়স্ক সদস্যদের অনেকেই এখন ভর্তি হতে পারছেন না এবং সঠিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অনূর্ধ্ব সাব-ইন্সপেক্টর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কল্যাণ এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম মানবজমিনকে বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের মধ্যে এই ক্যাটাগরির সদস্যরা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা অবসরপ্রাপ্ত সদস্যর সংখ্যা প্রায় ৬৫ হাজার। এরমধ্যে ২০২০ সালে যারা অবসরে গেছেন তাদের রেশন সেবা দিচ্ছে সরকার। এর আগে যারা অবসরে গেছেন তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ এই রেশন দেয়া হচ্ছে না। এর মাধ্যমে আমাদের মধ্যে একধরনের বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে। কাউকে না দেয়া হলে ভিন্ন কথা। আমরা চাই অবসরপ্রাপ্ত সকল সদস্য সমান সুবিধা পাক।