বিশ্বজমিন
ফিরছেন নওয়াজ, পাল্টাবে পাকিস্তানের রাজনীতি!
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ২ অক্টোবর ২০২৩, সোমবার, ১১:৩২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:৩৪ অপরাহ্ন
জাতীয় নির্বাচন সামনে। পাকিস্তানে রাজনীতি ক্রমশ সরব হয়ে উঠছে। এই নির্বাচনে ইমরান খান নিষিদ্ধ হতে পারেন। এমন অনেক আভাস পাওয়া গেছে। সর্বশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আদালত যদি ইমরান খানকে নির্বাচনে নিষিদ্ধ করে, তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের করার কিছু নেই। অন্যদিকে আদালত কর্তৃক অযোগ্য ঘোষিত হয়ে ক্ষমতা হারানো, জেল খাটা সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ এ মাসেই দেশে ফিরছেন। তার ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া কী হবে এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তার মেয়ে ও দলীয় সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ জানিয়েছেন, তিনি আরও শক্তিধর হয়ে পাকিস্তানে ফিরছেন। অগ্রগতি এবং শান্তির এক নতুন যুগের সূচনা করবেন নওয়াজ। যদি তাকে মাইনাস করার চেষ্টা হয়, তাহলে পাকিস্তানে শুধুই ক্ষতি হবে, ধ্বংস ডেকে আনবে।
পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বলছেন, ২১শে অক্টোবরই জনগণ প্রমাণ করে দেবে যে শুধু নওয়াজ শরীফই পাকিস্তানের নেতা। এদিনই তিনি পাকিস্তান ফিরবেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।
রোববার লাহোরে পিএমএলএনের তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের আয়োজনে এক জনসভায় বক্তব্য রাখেন মরিয়ম নওয়াজ। এর আগে গত মাসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ছোটভাই শেহবাজ শরীফ তার বড় ভাই ও তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের দেশে ফেরার তারিখ ঘোষণা করেন।
ওদিকে সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক বড় বড় নেতাদের দুর্নীতির মামলা পুনরুজ্জীবিত করার নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে আছেন নওয়াজ শরীফ, পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসি, ইউসুফ রাজা গিলানি, সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি সহ সাবেক বেশ কয়েকজন প্রধানমন্ত্রী ও রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ নেতা।
সাবেক প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল জবাবদিহিতা বিষয়ক আদালতের কিছু আইনের সংশোধন বাতিল করেন। এর পর থেকে জবাবদিহিতা বিষয়ক ব্যুরো ওইসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা সক্রিয় করছে। তা সত্ত্বেও পিএমএলএনের প্রেসিডেন্ট শেহবাজ শরীফ পরিষ্কার করে বলেছেন, আইনি এমন পরিবর্তনের ফলে দলের প্রধানের দেশে ফেরায় কোনো পরিবর্তন হবে না। সাবেক ক্ষমতাসীন এই দলটি গভীর আলোচনা পরামর্শ করে ঘোষণা দিয়েছে যে, দেশে ফেরার পর সবরকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছেন নওয়াজ শরীফ।
অসুস্থতকার কারণ দেখিয়ে ২০১৯ সালের নভেম্বরে লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান নওয়াজ শরীফ। অঘোষিত বেতন পাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ না করার কারণে ২০১৭ সালে তাকে যাবজ্জীবনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। এবার যখন তিনি দেশে ফিরছেন, তখন পাকিস্তানে অবতরণের আগেই লাহোর হাইকোর্টে তার আগাম জামিন চাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন আইনজীবীরা।
নওয়াজকে একজন পলাতক ঘোষণা করা হয়েছে। এ জন্য লাহোর বিমানবন্দরে অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। সেই গ্রেপ্তারি এড়ানোর জন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছে দল।
ওদিকে আগামী বছর জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে দেশে জাতীয় নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নওয়াজ শরীফ দেশে ফিরলেও সেই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন কিনা, তা অস্পষ্ট। যদি না পারেন, যদি জেলেও থাকেন, তবু দেশে তার উপস্থিতি নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এ জন্যই হয়তো রাজনৈতিক সমাবেশে মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ বলেছেন, তিনি আরও শক্তিধর হয়ে ফিরছেন। সব রকম সঙ্কট থেকে দেশকে বের করে আনার জন্য তিনি দেশে আসছেন। তিনি একটি নতুন যুগের সূচনা করবেন। মরিয়মের দাবি, তিনি দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে পুনঃস্থাপন করবেন। নির্মূল করবেন সন্ত্রাস। পিএমএলএন জনগণের কল্যাণে কাজ করে এবং সিস্টেম সংশোধনে কাজ করবে। দেশের সব সমস্যার সমাধান হলেন নওয়াজ শরীফ। মরিয়ম বলেন, একজন ব্যক্তিই শুধু ২১শে অক্টোবর দেশে ফিরছেন এমন নয়। একই সঙ্গে দেশে ফিরছে অগ্রগতি ও শান্তি। এ জন্য তিনি মিনারে পাকিস্তানে তাদের নেতাদের স্বাগত জানাতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেন।