ঢাকা, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩, সোমবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিশ্বজমিন

মাহফুজ আনামের চিঠি, পিটার হাস্-এর জবাব

মানবজমিন ডেস্ক

(২ মাস আগে) ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৭:৪১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৫:৩০ অপরাহ্ন

mzamin

বাংলাদেশের মিডিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ভিসা নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের দেয়া একটি চিঠির জবাব দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্। এতে রাষ্ট্রদূত সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা, স্বাধীন মত প্রকাশে সাংবাদিকদের অধিকার এবং মিডিয়া আউটলেটের অধিকার চর্চায় তিনি তার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। পিটার হাস্ জবাবে আরও বলেছেন, এর মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্রসহ যেকোনো সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গিও। প্রকৃতপক্ষে আমাদের নীতির যেকোনো বিষয়ে জনগণের মতের প্রতিফলনকে স্বাগত জানাই আমরা। 

রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্ চ্যানেল ২৪’কে দেয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির আওতায় মিডিয়াও আসতে পারে বলে মন্তব্য করেন। ২৪শে সেপ্টেম্বর দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে পিটার হাস্ বলেন, আমরা ভারসাম্যপূর্ণ উপায়ে এই নীতি প্রয়োগ করছি যেকোনো ব্যক্তির ওপর- তিনি সরকারপন্থি হতে পারেন, বিরোধী দলের কেউ হতে পারেন, আইন প্রয়োগকারী হতে পারেন, বিচার বিভাগের হতে পারেন অথবা মিডিয়ারও হতে পারেন। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে মাহফুজ আনাম ই-মেইলে ওই চিঠি পাঠান পিটার হাস্-এর কাছে। তার জবাব দেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। 

গত ২৪শে মে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। ২২শে সেপ্টেম্বর তারা ঘোষণা করে যে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়া ব্যক্তিবিশেষ অথবা এতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া শুরু করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে ২৭শে সেপ্টেম্বর পিটার হাস্কে লেখা চিঠিতে মাহফুজ আনাম বলেন, মিডিয়ার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তিনি এর প্রেক্ষিতে তার মনে এবং সম্পাদক পরিষদের মনে কিছু প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য তিনি চিঠি লিখছেন।

বিজ্ঞাপন
তিনি আরও লিখেছেন, খোলামেলাভাবে বলছি, ওই মন্তব্য আমাদের মাঝে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। তাই এ বিষয়ে আমরা ব্যাখ্যা দেয়ার অনুরোধ করছি। তিনি আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং রাষ্ট্রদূত সব সময়ই অবাধ ও নিরপেক্ষ মিডিয়ার পক্ষে অবিচল। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূতের ওই মন্তব্য তাদেরকে উদ্বিগ্ন করেছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিবৃতি উদ্ধৃত করা হয়- ভিসা নিষেধাজ্ঞা কোনোকিছুর ওপর ভিত্তি করে নয়, তবে তাদের কর্মকাণ্ডের ওপর; উল্লেখ করে মাহফুজ আনাম বলেন, মিডিয়ার অ্যাকশন বা কাজ হলো লেখা বা সম্প্রচার করা। তিনি জানতে চান, সাংবাদিকদের লেখালেখি অথবা সম্প্রচারের ওপর ভিত্তি করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে কিনা। যদি তাই হয়, তাহলে এটা কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে যায় কিনা? মিডিয়ার ক্ষেত্রে কীভাবে এটা ব্যবহার করা হবে? এক্ষেত্রে বিবেচ্য ফ্যাক্টরগুলো কি?

মাহফুজ আনাম আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী সবসময় ব্যক্তিগতভাবে তার এবং বাংলাদেশি মিডিয়ার জন্য অনুপ্রেরণা ও অনুকরণের উৎস হিসেবে কাজ করেছে। সেক্ষেত্রে যখন মিডিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হলো তখন ভিসা নীতি বাস্তবায়ন কীভাবে প্রথম সংশোধনে প্রতিফলিত হয়েছে। 
এসব প্রশ্নের জবাবে পিটার হাস্ লিখেছেন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতায় অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে যারা বাধাগ্রস্ত করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কথা বলে এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দায়ী প্রত্যেকে- ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী, নাগরিক সমাজ ও মিডিয়া। পিটার হাস্ বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এর প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের ভূমিকা পালনে অনুমতি দেয়া সমান গুরুত্বপূর্ণ। পিটার হাস্ বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেনের বিবৃতি পরিষ্কার। তিনি বলেছেন, এই নীতি প্রয়োগ হবে বাংলাদেশের ব্যক্তিবিশেষের ওপর, যাদেরকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা অথবা জড়িত বলে মনে করা হবে। এর মধ্যে পড়তে পারেন যেকোনো ব্যক্তি, যারা মিডিয়াকে তার মত প্রকাশে বাধা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। 

পাঠকের মতামত

জনাব কাজী আপনি ঠিক ই বলেছেন আমেরিকা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেনি। এটা কিন্তু বলেন নি গন চীন ও করেনি। মুক্তিযোদ্ধা দের মৃত্যুর জন্য সব চেয়ে বেশী গন চীনের বুলেট দায়ী। আমেরিকা তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কিছু করবেনা সেটা তো একটা শিশুও বোঝে। ভারত কী তাদের স্বার্থের বাইরে কিছু করেছে কোথাও? কিংবা গনচীন? যে কন দেশ ই তাদের স্বার্থ কে মাথায় রেখেই সব কিছু করে। আমাদের ও আমদের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ কে সব কিছুর উপর রাখা উচিত। আর রাষ্ট্রীয় স্বার্থ হলো জনগনের স্বার্থ । আমেরিকা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোন নিষেধাজ্ঞা দেয় নি। বার বার পরিস্কার এবং দ্যারথহীন ভাবে ঘোষণা দিচ্ছে যে বা যারা একটি নিরপেক্ষ , অংশগ্রহন মুলক, মুক্ত এবং অবাদ নির্বাচন কে বাধা গ্রস্ত করবে, শুধু মাত্র তাদের জন্যেই তাদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। এক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত যদি বাংলাদেশের মানুষকে তাদের পছন্দ মত নেতাকে নিরবাচিত করতে সয়ায়ক ভুমিকা পালন করে তাহলে এর বিরুদ্ধ চারন করা কি ঠিক? আবারো বলছি, আমেরিকা তাদের স্বার্থ রক্ষা হয় এর বাইরে কিছু করবেনা। এ ব্যপারে আপনার সাথে আমার কোন দ্বিমত নেই । তবে আপনি যদি বাংলাদেশে একটি গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার পক্ষে থাকেন, তাহলে মুক্ত অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন কে সমর্থন করে এমন কোন পদেক্ষেপ কে কী আপনার ও সমরথন করা উচিত নয়? মুক্ত অবাধ নিরবাচনে তো এই সরকার ও আবার ক্ষমতায় আসতে পারে। তাহলে সমস্যা কোথায়?

Shahid Khandker
৪ অক্টোবর ২০২৩, বুধবার, ৭:২৫ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করলে যদি তা নায্য ও হয়, তাহলে সাংবাদিক দের উপর ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিবে । এতেই বুঝা যায় তারা তাবেদার চায় । শেখ হাসিনা কড়া সুরে জবাব দেন, তাই তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র চলছে । গণতন্ত্র কিছু ই না তাদের কাছে । অনেক বাঙালি এই সত্য উপলব্ধি করতে পারছেন না । তাই খুশিতে টগবগ করছেন । আমরা লিবিয়ায় তাদের আচরণ মূল্যায়ন করে দেখেছি- গণতন্ত্রের নামে গাদ্দাফি কে হত্যার পর সেখানে কি দারুণ কষ্টে আছে জনগণ । যদি বাংলাদেশে ও আমেরিকা কৃতকার্য হয়, একই অবস্থা হবে বাংলাদেশের । আমেরিকা কোন মুসলিম দেশের বন্ধু নয় । স্বাধীনতা যুদ্ধে ও তারা বাঙ্গালী হত্যার সমর্থন করেছিল ।

Kazi
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ১০:১০ অপরাহ্ন

মাহফুজ আনাম রা ভালো করেই জানেন এ দেশে সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা কতটুকু। অনেক মিডিয়া সরকারের রোষানলে পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে শুধু শত্য প্রকাশের জন্যে। অধিকারের সম্মাদক আদিলুর রহমান তেমনই একজন। তখন তো কিছু বলেন না। তার মানে আপনারা নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ। ভিসানীতির প্রেক্ষিতে আপনার চিঠি লেখার বিষয়টাও নিরপেক্ষতার সাপেক্ষে নয়। গোষ্ঠী বিশেষের স্বার্থে। জনগণের কাতারে আসেন, তাদের জন্য নিরপেক্ষতা বজায় রাখেন।

abdul mannan
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৯:৪৭ অপরাহ্ন

প্রকাশ্যে যারা আপনাদের বিরুদ্ধাচারণ করেছেন, আপনাদের পত্রিকার বিরুদ্ধে নাম ধরে ধরে বছরের পর বছর বিষেদগার করেছেন জনসম্মুখে, সংবাদ সম্মেলনে, আজ মাহফুজ আনাম সাহেব তাদের পক্ষেই লিখছেন! আপনাদের মতো সাংবাদিকদের জন্যই জনগণ এতো বছর ধরে গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত! আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক, জনগণের পালস বুঝতে চেষ্টা করুন, এই দীর্ঘ কালো রাতকে আর দীর্ঘায়িত না করার অনুরোধ রইলো।

রিয়াজ হাসান
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৬:০৬ অপরাহ্ন

আওয়ামী লীগের বিপক্ষে হলে ভালো হয়। কিন্তু যখন এটি নিজের উপর থাকে তখন ভাল হয় না।

mohd. Rahman ostrich
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৪:৪২ অপরাহ্ন

They don't like visa policy because they are antidemocratic.

Mohhammad
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ১:২৪ অপরাহ্ন

মাহফুজ আনাম সাহেব, এত সকাল ১০১ মামলা ভুলে গেলেন?

Foyez Chowdhury
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৭:৫৪ পূর্বাহ্ন

মাহফুজ আনাম রা ভালো করেই জানেন এ দেশে সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা কতটুকু। অনেক মিডিয়া সরকারের রোষানলে পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে শুধু শত্য প্রকাশের জন্যে। অধিকারের সম্মাদক আদিলুর রহমান তেমনই একজন। তখন তো কিছু বলেন না। তার মানে আপনারা নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ। ভিসানীতির প্রেক্ষিতে আপনার চিঠি লেখার বিষয়টাও নিরপেক্ষতার সাপেক্ষে নয়। গোষ্ঠী বিশেষের স্বার্থে। জনগণের কাতারে আসেন, তাদের জন্য নিরপেক্ষতা বজায় রাখেন।

Abu Zubaer
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৭:৪০ পূর্বাহ্ন

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

মহাসচিবের মুখপাত্রের ব্রিফিং/ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে না জাতিসংঘ

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট/ বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে চলছে সহিংস দমন–পীড়ন

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status