বিশ্বজমিন
সেই মনিপুরে ২ শিক্ষার্থীর মৃতদেহ নিয়ে তোলপাড়, শান্ত থাকার আহ্বান
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার, ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৩:৪৬ অপরাহ্ন
সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর এবার ভারতের মণিপুরে দু’জন শিক্ষার্থীর মৃতদেহের ছবি নিয়ে তোলপাড় চলছে চারদিকে। এ দুই শিক্ষার্থী জুলাই মাসে নিখোঁজ হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনকি ভারতের মূল ধারার মিডিয়ায় ওই ছবি প্রকাশ হয়েছে। এতে দেখা যায়, নিহত দুই শিক্ষার্থী মেইতি সম্প্রদায়ের। এর মধ্যে একজন ১৭ বছরের বালিকা এবং অন্যজন ফিজাম হেমজিত (২০) ঘাসের ওপর বসে আছে। দৃশ্যত কোনো জঙ্গলের ভিতর অস্থায়ী ভিত্তিতে তৈরি কোনো ক্যাম্পের পাশে তাদেরকে দেখা যায়। তাদেরকে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়েছে। এই ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর মনিপুর সরকার বলেছে, তারা এ ঘটনায় দ্রুত এবং সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেবে।
ওদিকে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)ও এ বিষয়ে দেখাশোনা করছে। কিন্তু এই দুই শিক্ষার্থীর মৃতদেহ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
বালিকাটিকে দেখা যায় একটি সাদা টি-শার্ট পরিহিত। অন্যদিকে হেমজিত ধরে আছে একটি ব্যাকপ্যাক। তার পরণে শার্ট। তাদের পিছনে অস্ত্রধারী দু’ব্যক্তিকে পরিষ্কার দেখা যায়। পরের ছবিতে তাদের মৃতদেহ মাটির ওপর পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ ঘটনায় দেশে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশ কেন এতদিনে এ বিষয়টিতে সফল কোন অভিযান চালাতে পারলো না। তারা কেন ওই বালক-বালিকাকে উদ্ধার করতে পারলো না।
জুলাইয়ে ওই দুই শিক্ষার্থীকে দোকানে স্থাপন করা সিসিটিভিতে সর্বশেষ দেখা যায়। তারপর তাদের আর কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। এখন তদন্তকারীরা ছবিকে অধিক পরিমাণে পরিষ্কার করার জন্য অত্যাধুনিক সাইবার ফরেনসিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছেন। এর মধ্য দিয়ে ওই বালক ও বালিকার পিছনে যে দু’জনকে অস্ত্রসহ দেখা যায়, তাদেরকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
মনিপুর সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, দুই শিক্ষার্থীর এ বিষয়টি রাজ্য সরকারের নজরে এসেছে। ঘটনাটি রাজ্যের জনগণের ইচ্ছে অনুযায়ী সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। সিবিআইয়ের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে রাজ্য পুলিশ সক্রিয়ভাবে তদন্ত করছে। সরকার দ্রুত এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেবে অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে বিবৃতিতে সবাইকে শান্ত থাকতে বলা হয়। তদন্তকারীদের তাদের কাজ করতে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, প্রায় ২৫টি কুকি বিদ্রোহী গ্রুপের ক্যাম্প আছে মনিপুর পাহাড়ে। কেন্দ্র, রাজ্য এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে তারা ত্রিপক্ষীয় অপারেশন স্থগিতের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। কুকিদের অভিযোগ, উপত্যকায় বা সমতলে থাকা মেইতিরা তাদের ওপর হামলা চালায়। অন্যদিকে মেইতিদের অভিযোগ, কুকি বিদ্রোহীরা ওই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তারা প্রকাশ্যে স্পর্শকাতর অস্ত্র নিয়ে লড়াই করছে। এই দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে গত ৩রা মে সংঘাত শুরু হয়। তারপর কমপক্ষে ১৮০ জন নিহত হয়েছেন। আভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।