ঢাকা, ৬ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

দেশ বিদেশ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগা খান পুরস্কারজয়ী স্থাপনায় দেশি-বিদেশি পরিদর্শক

স্টাফ রিপোর্টার

(১ বছর আগে) ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার, ৮:৪১ অপরাহ্ন

mzamin

স্থাপত্যে দুনিয়া-বিখ্যাত পুরস্কার ‘আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার’ জয়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার পরিদর্শনে গিয়েছেন আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার কমিটির পাঁচ সদস্য এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন ড. হোসেন জিল্লুর রহমানসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কমিউনিটি স্পেস মর্যাদাপূর্ণ আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার পুরস্কার লাভ করে ২০২২ সালে। এর মাধ্যমে স্বীকৃতি দেয়া হয় রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও হোস্ট কমিউনিটিতে থাকা ছয়টি কমিউনিটি স্পেসকে। এর মধ্যে ক্যাম্পে থাকা চারটি এবং হোস্ট কমিউনিতে থাকা একটি স্থাপনা তৈরি করেছে ব্র্যাক। অন্য স্থাপনাটি তৈরিতে ছিল অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে ছিলেন, আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচারের ডিরেক্টর ফারুক দেরেখসানি, প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক কারিম ইব্রাহীম, স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য মেরিনা তাবাশ্যুম, আগা খান ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের (একেডিএন) আবাসিক কূটনৈতিক প্রতিনিধি মুনির মিরালি ও প্রতিষ্ঠানটির স্থপতি সাইফুল হক।

ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন ছাড়াও তাদের সঙ্গে ছিলেন সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন পরিচালক ড. মো. আকরামুল ইসলাম, মানবিক সহায়তা কর্মসূচির (এইচসিএমপি) প্রধান ও অফিস ইনচার্জ রেজাউল করিম, এইচসিইমপি’র প্রটেকশন, শেল্টার ও সাইট ম্যানেজমেন্ট কর্মসূচির প্রধান মো. ইমামুল হকসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ।
পরিদর্শকরা ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশনে অবস্থিত ব্র্যাকের নারীবান্ধব কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার ও বিভিন্ন প্রদর্শনী কেন্দ্র ঘুরে দেখেন এবং রোহিঙ্গা কমিউনিটির সদস্যদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিবেশবান্ধব স্থাপনা নির্মাণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও তারা ক্যাম্প ৩, ক্যাম্প ১১, ক্যাম্প ১৮, ক্যাম্প ২ ওয়েস্ট এবং ক্যাম্প ৫ পরিদর্শন করেন।

কক্সবাজারের এই ছয় স্থাপনা নির্মাণে প্রচলিত পদ্ধতিতে কোনো মডেল বা নকশা তৈরি করা হয়নি। বরং স্থানীয় কারিগরদের নিয়ে, স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে পরিবেশবান্ধব এই কমিউনিটি স্পেস। বাংলাদেশ থেকে ব্র্যাকের যে পাঁচটি স্থাপনাকে আগা খান স্বীকৃতি দিয়েছে সেগুলি হচ্ছে: ক্যাম্প ১ ইস্ট, ক্যাম্প ৩, ২৫ ও ৪ এক্সটেনশন এবং হোস্ট কমিউনিটিতে উখিয়ার রত্নাপালং এ অবস্থিত একটি কমিউনিটি স্পেসকে। পুরস্কার জয়ী এ সব স্থাপনায় নারী ও কন্যাশিশুদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

স্থাপত্যের ক্ষেত্রে আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হিসেবে স্বীকৃত। এটি স্থাপনা বা ব্যক্তির পাশাপাশি প্রকল্প, সম্প্রদায় ও অংশীদারিত্বকে স্বীকৃতি প্রদান করে।

এদিকে এর আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ছয়টি পরিকল্পিত স্থাপনার আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার পাওয়া উপলক্ষ্যে কক্সবাজারের একটি হোটেলে গত ১৮ই সেপ্টেম্বর ( সোমবার) রাতে এক উদ্যাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা প্রথাগত পদ্ধতিতে স্থাপনা নির্মাণ না করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব স্থাপনা নির্মাণের আহ্বান জানান।

বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির (এইচসিএমপি) এই আয়োজনে সহযোগী হিসেবে ছিল আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ। 
এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ শামছু-দ্দৌজা, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার কমিটির সদস্যবৃন্দ। আরও উপস্থিত ছিলেন ইউএনইচসিআর, ইউনিসেফ, ডব্লিওএফপিসহ বিভিন্ন দাতা ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক-এর ঊর্ধ্বতন পরিচালক ড. মো. আকরামুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, পরিবেশের ক্ষতি করে উন্নয়ন নয়, বরং পরিবেশ রক্ষা করে সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে পাহাড় ও সমুদ্রবেষ্টিত কক্সবাজারে পরিবেশ রক্ষার দিকটি আরও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত: রোহিঙ্গারা এখানে আশ্রয় নেওয়ার ফলে পরিবেশে সুরক্ষায় ক্ষেত্রে যে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে, তা নিরসনে উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার-এর এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো রোহিঙ্গা শিবিরেও পরিবেশবান্ধব স্থাপনা গড়ার ক্ষেত্রে বড় অণুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ শামছু-দ্দৌজা ক্যাম্পে পরিবেশ সুরক্ষায় নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব স্থাপনার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচারের ডিরেক্টর ফারুক দেরেখসানি বলেন, পুরস্কারের এই স্বীকৃতি শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটা পরিকল্পিত স্থাপনা বা ব্যক্তির পাশাপাশি বড় পরিসরের অংশীদারিত্বকেও স্বীকার করে।

অনুষ্ঠানে আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার-এর গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। শেষ পর্বে কক্সবাজারের স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে বিশেষ সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হয়।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status