অর্থ-বাণিজ্য
অতিরিক্ত কাঁচা মরিচ কিনে রাখায় দাম অস্বাভাবিক: অর্থমন্ত্রী
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ৬ জুলাই ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ৮:৩১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১১ পূর্বাহ্ন
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বর্ষা এলেই কাঁচামরিচের দাম বেড়ে যায়, তাই অনেকেই অতিরিক্ত কিনে রাখেন। এজন্য এখন বাজারে কাচাঁমরিচের দাম অস্বাভাবিক।
বৃহস্পতিবার জাইকার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ কথা জানান। আইএমএফের ঋণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইএমএফ যে লোন দিয়েছে তা আমাদের দুই মাসের রেমিট্যান্সের সমান। তাই এটা শোধ করা আমাদের জন্য কোনো ব্যাপার না। উপস্থিত সাংবাদিকদের মুস্তফা কামাল বলেন, এখানে আপনারা যে কয়জন আছেন সবাই মিলে এ ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব।
তাহলে কী এ ঋণ নেয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটি আমরা বুঝতে পারিনি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কতদিন থাকবে, যেভাবে আমাদের ঘাটতি পড়ছিল। তাতে আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমরা তো তখন এটি বুঝতে পারিনি।’
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন শুরু করি তখন মূল্যস্ফীতি ছিল ১২.৩ শতাংশ। এখন এর চেয়ে কম আছে। তার মানে মূল্যস্ফীতি বাড়েনি। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল রয়েছে। শুধু টাকার অঙ্কে বিচার করলে হবে না। সামাজিক সুরক্ষা বিবেচনা করতে হবে।
মানুষ কষ্টে আছে এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের মানুষ কষ্ট রয়েছে। আমরা দুনিয়ার বাইরে নয়। দুনিয়ার চিন্তা করলে আমরা খুব ভালো অবস্থানে রয়েছি। বাংলাদেশ বিশ্বের বাইরে নয়। সংকট বিশ্বব্যাপী। আর এখন কোনো মানুষ না খেয়ে মারা যায় না।
মূল্যস্ফীতি কি শুধু টাকার অঙ্কে মূল্যায়ন করা যায়? প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ লাখ ২৬ হাজার পরিবারকে ভাতা দেয়া হচ্ছে। যাদের খাবার কেনার টাকা নেই তাদের এ কার্ডের মাধ্যমে ভাতা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া কম দামে খাবার দেওয়া, যাদের কম ইনকাম তাদের কাছ থেকে কম ট্যাক্স নেয়া হচ্ছে।
এসময় দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেশি থাকার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সারা বছর কেনেননি কেন? একদিনে তো খেতে কাঁচা মরিচ তৈরি হয়ে যাবে না। অনেকেই দাম বৃদ্ধির ভয়ে বেশি করে কাঁচামরিচ কিনে রাখছেন। ফলে নিত্যপণ্যটির দর বেড়ে গেছে। জিনিসপত্রের দাম কি সহনীয় আছে, এমন প্রশ্নে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কোনটা অসহনীয় আছে?’
মন্ত্রী বলেন, জাইকা তাদের প্রকল্পগুলো দেখতে এসেছে। মাতারবাড়ির কাজ প্রায় ৯৫ ভাগ সম্পন্ন। বাজেটের সঙ্গে মিল রেখে প্রযুক্তিকেন্দ্রিক বিভিন্ন প্রকল্পে জাইকা সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
জাইকার নতুন কোনো সহযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের প্রকল্পগুলো বর্তমানে কী অবস্থায় আছে, তারা তা দেখতে এসেছে। কিছু কিছু নতুন প্রকল্পও আসবে। নতুন যে প্রকল্পগুলো আসবে, সেগুলোর অধিকাংশই প্রযুক্তি সম্পর্কিত।
বাজেটে জাইকার সহায়তা থাকার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাজেটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে যেসব জায়গায় হাত দিতে হবে; কিছু কিছু জায়গা আছে, সেখানে তারা আমাদের সহায়তা করতে পারে।
বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রতিবেদন নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের গত কয়েক বছরের সামষ্টিক অর্থনীতির দৃশ্যপট আপনারা সেখানে দেখতে পাবেন। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে জিডিপিতে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ২০২১-২০২২ সালে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, ২০২২-২০২৩ সালে ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গত বছরের জুলাই মাসে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আবেদন করার পর শর্তসাপেক্ষে ঋণ দিতে রাজি হয় আইএমএফ। ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে ঋণদাতা সংস্থাটি। ফেব্রুয়ারি মাসে এ ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬.২৭ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান, জাইকার নির্বাহী সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়ামাদা জুনিচি প্রমুখ।