দেশ বিদেশ
কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের রাজনীতি
চুন্নু’র আসনে দলীয় প্রার্থী চায় আওয়ামী লীগ, ওসমান ফারুকের ফেরার অপেক্ষায় বিএনপি
আশরাফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ থেকে
২ জুলাই ২০২৩, রবিবারকিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং তাড়াইল উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে কিশোরগঞ্জ-৩ (সাবেক কিশোরগঞ্জ-৪) আসন গঠিত। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ১৯৮৬, ১৯৮৮, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের ৫টি জাতীয় নির্বাচনে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। অবশ্য সর্বশেষ ৩টি নির্বাচনে তিনি মহাজোট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এখানে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। মুজিবুল হক চুন্নু আগামী নির্বাচনেও একজন শক্তিশালী প্রার্থী। সেক্ষেত্রে নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির জোটগত ঐক্য হয়, তবে এ আসনে অনেকটা নিশ্চিতভাবেই জোটের মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন মুজিবুল হক চুন্নু। ফলে বিগত ৩টি নির্বাচনের মতো আবারো আশাভঙ্গ হতে পারে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। এক্ষেত্রে এক সময়ে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে আওয়ামী লীগ বড় ধরনের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
তাই এবার তারা জোরেশোরে দলীয় প্রার্থীর দাবি জানাচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও এ দাবিতে সোচ্চার। অন্যদিকে ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ছাড়া একবারই মাত্র এ আসনে জয়ের মুখ দেখেছে বিএনপি। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত চারদলীয় জোট প্রার্থী হিসেবে ড. এম ওসমান ফারুক এই আসন থেকে নির্বাচিত হন। অবশ্য ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে ড. এম ওসমান ফারুকের পিতা ড. এম ওসমান গণি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুক বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান। ২০১৬ সালের মে মাসে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ ওঠার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে এখানে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) প্রার্থী শিক্ষাবিদ ও কৃষিবিদ ড. মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তবে এখনো এ আসনে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপি’র মূল ভরসা ড. ওসমান ফারুক। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে ড. ওসমান ফারুককেই প্রার্থী হিসেবে পেতে চান দলীয় নেতাকর্মীরা। ফলে অনুকূল পরিস্থিতিতে তার দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে বিএনপি।
স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের এম. এ. কুদ্দুস। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১২ই জুনের দু’টি নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ড. মিজানুল হক বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন আহমেদ এ আসন থেকে নির্বাচিত হন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মতে, নির্বাচনী জোটের দরকষাকষিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে বিগত ৩টি নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী করা হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ আওয়ামী ভোটার অধ্যুষিত এ আসনে আওয়ামী লীগের রয়েছে বিশাল কর্মীবাহিনী। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতাসীন হলেও শরিক দলের প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ নানা ইস্যুতে সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা চরমভাবে উপেক্ষিত হয়ে আসছেন। এ ছাড়া দলের মধ্যেও এমপিপন্থি একটি উপদল তৈরি হয়েছে। ফলে জাতীয় পার্টিকে ঘিরে এখানে চরম সংকটে রয়েছে আওয়ামী লীগ। এ পরিস্থিতিতে বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আসনটি মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে না দিয়ে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেয়ার দাবিতে করিমগঞ্জে গণমিছিল, সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন নেতাকর্মীরা। এরপরও উপেক্ষিত থেকে যায় দলীয় প্রার্থীর দাবিটি।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ মো. নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মাহবুব ইকবাল, করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এমরান আলী ভূঁইয়া, প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ডা. আ. ন. ম. নৌশাদ খান, বাংলাদেশ স্টিল মিল স্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ মো. এরশাদ উদ্দিন, বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সাবেক সদস্য সচিব অধ্যাপক আসাদুল হক, জেলা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সদস্য ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন, যুক্তরাজ্যের সাবেক সিভিল সার্ভিস অফিসার ও বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহাম্মদ গোলাম কবির ভূঁইয়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক এডিসি মেজর (অব.) মো. নাসিমুল হক, সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ড. আনিছুর রহমান আনিছ, মুজিবুল হক চুন্নু এমপি’র এপিএস আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য আমিরুল ইসলাম খান বাবলু, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মাহফুজুল হক হায়দার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ প্রমুখ।
তবে স্থানীয় নেতাকর্মী এবং ভোটারদের অনেকেই মনে করছেন, এ আসনে দলীয়ভাবে যদি আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়, সেক্ষেত্রে করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন। তিনি ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মুজিবুল হক চুন্নুর সমর্থনে তিনি তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও জোরালো মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন আওলাদ। কিন্তু মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুকে চূড়ান্ত করায় কপাল পোড়ে আওলাদের। অবশ্য পুরস্কার হিসেবে তিনি ২০১৯ সালে করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী হিসেবে আওলাদ তার সমর্থক ও নেতাকর্মীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকায় একজন সজ্জ্বন ও দানশীল ব্যক্তি হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে। তার নিজস্ব একটি ভোটব্যাংক রয়েছে, যা নির্বাচনী রাজনীতিতে ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করছেন তার কর্মী-সমর্থকরা। দলীয় মনোনয়ন প্রসঙ্গে মো. নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ বলেন, আমি দলের জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমার বিশ্বাস, দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। এই আসনের দুই উপজেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমার নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। দীর্ঘ বছর ধরে জনসংযোগের ফলে এলাকার জনমতও তার পক্ষে বলে মন্তব্য করেন নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ। আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মাঠে সক্রিয় রয়েছেন শিল্পপতি আলহাজ মো. এরশাদ উদ্দিন। তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের বিপদে-আপদে তিনি সর্বদা ছুটে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন যাবৎ নিজের নামে একটি মানবকল্যাণ ফাউন্ডেশন করে এলাকার হতদরিদ্র, প্রান্তিক ও সাধারণ মানুষকে নানা ধরনের সহযোগিতা প্রদান করে আসছেন তিনি।
দলীয় মনোনয়ন প্রসঙ্গে আলহাজ মো. এরশাদ উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। দল এবং দেশের জন্য আগামীতেও কাজ করে যেতে চাই। মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত স্মাার্ট বাংলাদেশ গড়তে জননেত্রী শেখ হাসিনার পাশে থাকতে চাই। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহাম্মদ গোলাম কবির ভূঁইয়া। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গণসংযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন জনহিতকর কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। তার সমর্থকদের মতে, এ আসনে ব্যারিস্টার মুহাম্মদ গোলাম কবির ভূঁইয়া একজন দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তি। তিনি একজন ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ। এ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার মুহাম্মদ গোলাম কবির ভূঁইয়া বলেন, আমি নির্বাচনকেন্দ্রিক এলাকায় গণসংযোগসহ প্রচার চালাচ্ছি। এবারের নির্বাচনে দলকে আরও শক্তিশালী করতে মনোনয়ন চাওয়া প্রার্থীদের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে দল মনোনয়ন দেবে। উন্নয়নের নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিলে জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। দীর্ঘদিন ধরে এ আসনের দুই উপজেলা করিমগঞ্জ ও তাড়াইলের গ্রামে-গঞ্জ চষে বেড়াচ্ছেন এডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন। ছোটখাটো সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে দলীয় বিভিন্ন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থেকে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছেন তিনি।
এদিকে ড. এম ওসমান ফারুক দেশের বাইরে অবস্থান করায় ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি’র দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি এডভোকেট জালাল মোহাম্মদ গাউসকে। বিকল্প প্রার্থী করা হয়েছিল করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ভিপি সাইফুল ইসলাম সুমনকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঐক্য ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অবতীর্ণ হন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) প্রার্থী শিক্ষাবিদ ও কৃষিবিদ ড. মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। আগামী নির্বাচনেও এডভোকেট জালাল মোহাম্মদ গাউস ও ভিপি সাইফুল ইসলাম সুমন দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। অন্যদিকে দলীয় মনোনয়নের জোরালো দাবিদার হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন ২০০৮ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোট প্রার্থী জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা। তিনি জেলা বিএনপি’র রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দেয়ার পাশাপাশি এলাকায় গণসংযোগসহ ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। ড. এম ওসমান ফারুক যদি দেশে না ফেরেন, তবে জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা-ই হবেন বিএনপি’র প্রার্থী- এমনটা ভাবছেন অনেকেই।
অন্যদিকে এ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তদারকি করার পাশাপাশি দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অনবরত কাজ করে চলেছেন। করিমগঞ্জ ও তাড়াইল দুই উপজেলাতেই জাতীয় পার্টিকে শক্ত সাংগঠনিক ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়েছেন তিনি। সংসদ সদস্য চুন্নুর ব্যক্তিগত ইমেজই এ আসনে জাতীয় পার্টির মূল চালিকাশক্তি হওয়ায় দলে বিভেদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠতে পারেনি। এ ছাড়া তিনি নিয়মিত এলাকায় যাচ্ছেন এবং নেতাকর্মী ও জনসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। এ পরিস্থিতিতে আগামী নির্বাচনে এ আসনে মো. মুজিবুল হক চুন্নু নিজেকে একজন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি এই তিন বড় দলের বাইরে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জেলা সিপিবি’র সাবেক সভাপতি ডা. এনামুল হক ইদ্রিছ ও সিপিবি নেতা রঞ্জিত কুমার সরকারের নাম শোনা যাচ্ছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে দলটির জেলা কমিটির সভাপতি হাফেজ মাওলানা প্রভাষক আলমগীর হোসাইন তালুকদার রাজনীতির মাঠে সরব রয়েছেন। এ ছাড়া গণতন্ত্রী পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী দিলোয়ার হোসাইন ভূঁইয়া মাঠে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।