দেশ বিদেশ
সিলেট সিটি নির্বাচন
১০, ১১, ১২ নং ওয়ার্ড সুরমার তীরে উন্নয়নের ছোঁয়া, কমছে ভোগান্তি
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
৬ জুন ২০২৩, মঙ্গলবারসিলেটে সুরমার তীর ঘেঁষা ১০ ও ১২নং ওয়ার্ড। মধ্যখানে ১১নং ওয়ার্ড। তিনটি ওয়ার্ডই শহরের আদিবাসিন্দাদের আবাসস্থল। গুরুত্বপূর্ণ কাজিরবাজার এলাকা ওই ওয়ার্ডে অবস্থিত। শেখঘাট নগরের প্রাচীন এলাকা। সুরমার তীরের এ ওয়ার্ডে গত ৫ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এমন কোনো পাড়া কিংবা গলি নেই যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। চার বারের কাউন্সিলর মো. সিকন্দর আলী এবারো এই ওয়ার্ডে প্রার্থী। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন আলহাজ আব্দুল কাদির। তিনি গত নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। এবার আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন। দুই প্রার্থীর লড়াই। তবে এগিয়ে রাখা হচ্ছে সিকন্দর আলীকে। কারণ এলাকার সম্প্রীতি ও সামাজিক বন্ধনের সেতু বলা হয় তাকে। শৃঙ্খলাও ভালো। কাউন্সিলর সিকন্দর আলী জানিয়েছেন, গত ৫ বছরে তার ওয়ার্ডে প্রায় ৭০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের মধ্য রয়েছে; শেখঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে নবাব রোডের মেডিকেল চত্বর পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তকরণ ও ড্রেনের কাজ, কাজিরবাজার থেকে নদী তীরবর্তী পিছের মুখ রাস্তা প্রশস্তকরণ। জিতু মিয়ার পয়েন্ট থেকে শেখঘাট মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তকরণ। এ ছাড়া গাভিয়ারখাল ও কামরেঙ্গী খালে গার্ডওয়াল ও কালভার্ট নির্মাণ। শেখ জামে মসজিদের উন্নয়নে সিটি করপোরেশন থেকে ৪ কোটি টাকা প্রদান, মণ্ডপে ৬০ লাখ টাকার উন্নয়ন করা হয়েছে। সিকন্দর জানান, গাভিয়ার খালের ৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান। নির্বাচিত হলে হাইস্কুলকে কলেজে রূপান্তর ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বেকার তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে বলে জানান তিনি।
১১নং ওয়ার্ড: কুয়ারপাড়া ও ভাতালিয়া এলাকা নিয়ে গঠিত ১১নং ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৪ জন। এরমধ্যে রয়েছেন; বর্তমান কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম ঝলক, সাবেক কাউন্সিলর হাজী আব্দুর রকিব বাবলু, মির্জা এমএ হোসেন ও আব্দুর রহিম মতি। বর্তমান কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম ঝলকের নেতৃত্বে ওয়ার্ডে বিগত ৫ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তিনি ভাতালিয়া সড়ক প্রশস্তকরণ, কুয়ারপাড় থেকে মেডিকেল পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণসহ নানা কাজে সফলতা দেখিয়েছেন। লালাদিঘীরপাড় থেকে নবাব রোড পর্যন্ত আরেকটি সড়ক করা হয়েছে। কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম ঝলক জানিয়েছেন- গাভিয়ার খাল, বসুখাল, আবুল খাল, খাওয়ার খাল সহ কয়েক ছড়ায় বেশি উন্নয়ন হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতা দূর হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এখন তার ওয়ার্ডে উন্নয়ন দৃশ্যমান হওয়ায় মানুষ তার পক্ষে রয়েছেন। তবে করোনাকালে নানা সেবা নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে দাবি করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুর রকিব বাবলু। তিনি জানিয়েছেন, জলাবদ্ধতা সমস্যা এখনো পুরোপুরি দূর হয়নি। এ ছাড়া মশাসহ নাগরিক সমস্যা এ ওয়ার্ডে বিদ্যমান রয়েছে।
১০নং ওয়ার্ড: এ ওয়ার্ডের একাংশজুড়ে সুরমা নদীর অবস্থান। বিগত ৫ বছরে উন্নয়ন হয়েছে প্রচুর। কাউন্সিলর মো. তারেক উদ্দিনের মতে ৫ বছরে ৪০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। এবার তিনি প্রার্থী হয়েছেন। তার সঙ্গে কাউন্সিলর পদে আরও প্রার্থী হয়েছেন; মোস্তফা কামাল, গোলাম কিবরিয়া মাসুক, আব্দুল হাকিম, আফতাব আহমদ ও এডভোকেট সাইদুর রহমান। প্রচারণা শুরুর পর থেকে প্রার্থীরা ভোটারের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্র্থীরা পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তবে উন্নয়ন নিয়ে সন্তুষ্ট এলাকার মানুষ। কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন জানিয়েছেন- গাভিয়ার খাল ও মালনীছড়া দুটোতেই বিশাল এলাকাজুড়ে গার্ডওয়াল করেছেন। ঘাষিটুলা-মোল্লারপাড়া, ঘাষিটুলা-লামাপাড়া, শামীমাবাদ-মজুমদারী ও পিডিবি স্কুল-ঈদগাহ পর্যন্ত সব রাস্তায়ই প্রশস্তকরণ ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। ৮৫ ভাগ বয়স্ক মানুষকে ভাতা, নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের শাখা ও পুষ্টিভাতা চালু করেছেন। এলাকার সব সড়ক পাকাকরণ করা হয়েছে। সুরমা তীরে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করতে তিনি কাজ করেছেন।