বিশ্বজমিন
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন ডিস্যান্টিস, ট্রাম্পকে সরে দাঁড়াতে চাপ
মানবজমিন ডেস্ক
(১১ মাস আগে) ২৪ মে ২০২৩, বুধবার, ২:২৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৪ পূর্বাহ্ন
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস। বুধবার টুইটারের মাধ্যমে তিনি এ ঘোষণা দেবেন বলে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র সময় সন্ধ্যা ৬ টায় টুইটারের মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে এক আলোচনায় যোগ দেবেন ডিস্যান্টিস। এরপরই নিজের প্রার্থিতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন তিনি। এ খবর দিয়েছে ফক্স নিউজ।
খবরে জানানো হয়েছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প গত বছরের শেষ দিকে এসেই নিজের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে রিপাবলিকান দল থেকে এখনও কাউনে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। দলীয় প্রার্থীতায় ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হচ্ছে ৪৪ বছর বয়সী ডিস্যান্টিসকে। যদিও দেশে এখনও ট্রাম্পই বেশি জনপ্রিয় তা বিভিন্ন জরিপেই স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।
এদিকে ডিস্যান্টিস যখন তার প্রার্থিতা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন তখন তার রাস্তা থেকে সরে দাঁড়াতে ট্রাম্পের ওপর চাপ বাড়ছে। দলের নেতারা ছাড়াও রিপাবলিকান পার্টির ডোনার বা দাতারাও ট্রাম্পকে সরে দাঁড়াতে বলছেন। পার্টির মেগা ডোনার বা শীর্ষ দাতাদের একজন পয়েন্ট ব্রিজ ক্যাপিটালের প্রতিষ্ঠাতা হাল ল্যাম্বার্ট।
ফক্সকে ল্যাম্বার্ট বলেন, রিপাবলিকান পার্টির উচিত এখন তরুণ নেতৃত্বের ওপরে ভরসা করা। এর পেছনে একাধিক কারণও দেন তিনি। প্রথম কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ট্রাম্প যদি আবারও নির্বাচিত হন তাহলে তিনি প্রথম দিনেই লেইম ডাকে পরিণত হবেন। তবে দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, তার পক্ষে আসলে নির্বাচনে জয় পাওয়াই সম্ভব নয়।
ল্যাম্বার্ট বলেন, আমি মনে করি না, ট্রাম্প নির্বাচনে লড়লে জিততে পারবেন। এখনই সময় পরবর্তী প্রজন্মের হাতে ক্ষমতা দেয়া। ডিস্যান্টিসের যে দর্শন রয়েছে তা আমাদেরকে পেছনের ইতিহাস বাদ দিয়ে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ল্যাম্বার্ট নিজেও ২০১৬ সালে ট্রাম্পের কমিটিতে ছিলেন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন পয়েন্ট ব্রিজ ক্যাপিটাল। এটি ট্রাম্পের স্লোগানের সঙ্গে মিল রেখে ‘মাগা ইটিএফ’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। এই প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র এমন কোম্পানিগুলোতেই বিনিয়োগ করে যারা রিপাবলিকান প্রার্থীদের সমর্থন করে।
প্রকাশ্যে এভাবে ডিস্যান্টিসকে সমর্থন দেয়ার কারনও ব্যাখ্যা করেন ল্যাম্বার্ট। তিনি বলেন, আমি ট্রাম্পের নীতিকে পছন্দ করি। তিনি যা করেছেন তা আমার ভাল লেগেছে। এই দেশকে আবারও একত্র করতে তার নীতি কাজ করবে। কিন্তু ট্রাম্প এখন যে অবস্থায় রয়েছেন, তা দেশকে আরও বিভক্ত করতে পারে। তিনি যদি আবারও প্রার্থী হন তাহলে মার্কিনিরা এমনভাবে নিজেদের মধ্যে লড়বে যা মোটেও দারুণ কিছু হবে না। ২০২৪ সালে এমন বিভক্তির মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যাওয়া হবে একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের ডিস্যান্টিসের মতো প্রার্থী রয়েছে যার পক্ষে নির্বাচনে জয় পাওয়া সম্ভব। তিনি একজন কনজারভেটিভ এবং পরবর্তী প্রজন্মের সদস্য। তাহলে কেনো অপ্রয়োজনীয়ভা ঘৃণার মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যেতে হবে!
যদিও জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে ডিস্যান্টিসের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। ৫৮ শতাংশ রিপাবলিকান ভোটারই ট্রাম্পকে যোগ্য মনে করছেন। সেখানে মাত্র ১৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ডিস্যান্টিস। ল্যাম্বার্ট মনে করেন, ডিস্যান্টিস দ্রুতই এই ব্যবধান কমিয়ে আনবেন। ফ্লোরিডার নির্বাচনে তিনি রিপাবলিকানদের জন্য ইতিবাচক রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। ২০ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে তিনি গভর্নর নির্বাচিত হয়েছেন। ল্যাম্বার্টের ভাষায়, ডিস্যান্টিস একজন দারুণ গভর্নর ছিলেন দেখেই তিনি এত জনপ্রিয়। অভিবাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি এমনসব আইন প্রণয়ন করেছেন যা মানুষ পছন্দ করেছে। তিনি ফ্লোরিডায় অনেক দারুণ কিছু করেছেন, তার একটা ভাল রেকর্ড আছে। তিনি যে কিছু করার ক্ষমতা রাখেন তা তিনি প্রমাণ করেছেন।
ডিস্যান্টিসের প্রতি সমর্থন জানাতে গিয়ে ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্টের দৌড় থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান ল্যাম্বার্ট। তিনি বলেন, ট্রাম্পের উচিত এখনই এই প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানো। এতে দেশেরই ভাল হবে। ২০১৬ সালে সবাই বলছিল যে, ট্রাম্পের পক্ষে নির্বাচিত হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি আসলে হিলারি ক্লিন্টনের বিরুদ্ধে লড়ছিলেন। আর হিলারিকে আমেরিকানরা ঘৃণা করেন। এমনকি তার নিজের দলের লোকেরাই তাকে পছন্দ করতেন না। আর এ কারণেই ২০১৬ সালে ট্রাম্প জয় পেয়েছিলেন। এখন ট্রাম্পকেও অনেক আমেরিকান অপছন্দ করছেন। তাই তারও এবার জয়ের আশা নেই।
এ বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে ফক্স নিউজ। তবে তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ল্যাম্বার্ট জানিয়েছেন, ডিস্যান্টিসকে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন তিনি। কারণ মানুষ এখন বাইডেনের বিরুদ্ধে ডিস্যান্টিসকে দেখতে চায়। তারা আবারও একবার ট্রাম্প বনাম বাইডেন লড়াই দেখতে চায় না।