দেশ বিদেশ
কার্বন নিঃসরণ কমাতে জলবায়ু অর্থায়ন বাড়ানোর তাগিদ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১১ মে ২০২৩, বৃহস্পতিবারজলবায়ু অর্থায়ন তহবিলের আকার ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়া প্রয়োজন। এ অর্থায়নের অন্তত ৫০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে হওয়া উচিত বলে মনে করেন গবেষকরা। গতকাল সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত আসন্ন জি-৭ সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশের কার্বন নিঃসরণে নেতিবাচক ভূমিকা নিয়ে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ প্রস্তাব করেন তারা। আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশের জন্য উন্নত নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রযুক্তি প্রচার করা উচিত। সেইসঙ্গে হাইড্রোজেন জ্বালানি এবং অ্যামোনিয়ার মতো অপরীক্ষিত, বিতর্কিত এবং ব্যয়বহুল প্রযুক্তি ব্যবহার চাপিয়ে দেয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। অনুষ্ঠানে নবায়নযোগ্য প্রযুক্তি স্থানান্তরে বড় দেশগুলোকে আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোকেও এতে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়। মূল প্রবন্ধে আরও বলা হয়, উন্নত দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ কমাতে তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি মতো অর্থছাড় করছে না। এজন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করা হচ্ছে। ২০১৬-২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্থা থেকে ৬.৭১ বিলিয়ন ডলারের অর্থ সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এই অর্থায়ন ব্যবস্থায় উন্নত না হলে, ২০৪১ সালের মধ্যে মোট জ্বালানির ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদনের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা পূরণ করা সম্ভব হবে না। এজন্য ২০২৪-২০৪০ সময়সীমার মধ্যে বার্ষিক ১.৫৩-১.৭১ বিলিয়ন বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। তাই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে জি-৭ সদস্যসহ অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর সহায়তা প্রয়োজন। এ বিষয়ে জি-৭ জোট সহায়তা করতে পারে। বাংলাদেশে ডিজেলভিত্তিক সেচব্যবস্থা থেকে সোলারে রূপান্তরে জি-৭ ভুক্ত দেশের আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সিপিডি। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, জি-৭ দেশগুলোর বর্তমান অবস্থান এবং তাদের পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতির সঙ্গে মিল নেই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিপরীত পথে হাঁটছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অর্থায়ন নিয়ে চলমান জি-৭ বিতর্ক এবং সিদ্ধান্তগুলো অস্পষ্ট। অবস্থার উন্নয়নে কয়লা, এলএনজিতে বিনিয়োগ বন্ধ হওয়া দরকার বলেও মত দেন সিপিডি’র গবেষক দল। এগুলো অন্তবর্তীকালীন জ্বালানি হিসেবে প্রচার বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জলবায়ু সংসদের চেয়ারপারসন তানভীর শাকিল জয় বলেন, সাধারণ মানুষ বিদ্যুৎ কী উপায়ে আসছে সেটা নিয়ে ভাবতে চায় না। তারা চায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ। বিভিন্ন জমিতে সোলার প্যানেল বসাতে গেলে অনেক ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে, সেটাতেও ভিন্ন মত রয়েছে সাধারণ মানুষের। এসব বিষয়ে সঠিক পরিকল্পনা ও বিনিয়োগে উন্নত দেশের সহযোগিতা দরকার। আর জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শফিকুল ইসলাম বলেন, নিউক্লিয়ার শক্তির ব্যবহার ছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ৪০ শতাংশ জ্বালানি নবায়নযোগ্য উৎস থেকে করা সম্ভব না। আগামী ১৯-২১শে মে জাপানের হিরোশিমায় জি-৭ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে স্বল্প উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিবেশ রক্ষায় অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বনেতাদের মধ্যে আলোচনা হবে। এরইমধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্যানেল আলোচনা শুরু হয়েছে।