অর্থ-বাণিজ্য
রাষ্ট্রটা সামরিক-বেসামরিক আমলাদের হাতে বন্দি: রাশেদ খান মেনন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ৩০ এপ্রিল ২০২৩, রবিবার, ৪:৩২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০১ পূর্বাহ্ন

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাষ্ট্রটা সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের হাতে বন্দি হয়ে গেছে। পাশাপাশি দারিদ্র্যসীমা ও বৈষম্যের ফারাক তুলনাহীন জায়গায় চলে গেছে বলেও মনে করেন তিনি।
রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও শামীম আলম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, সোশ্যাল সেফটি কোনো দান বা খয়রাত নয়। এটা অধিকার। সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে শুরু হয়েছিল। বর্তমান সরকারের আমলে ২০১৫ সালে ভাতার প্রচলন শুরু হয়। এটাকে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি হিসেবে সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। দারিদ্র্যসীমা কমিয়ে আনতে পারলেও বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়ে তা তুলনাহীন জায়গায় চলে গেছে। বৈষম্যের বিষয়টি অনেকে স্বীকার করতে চায় না। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে আমাদের রাষ্ট্রটা অতি ক্ষুদ্র ধনিক গোষ্ঠি আর সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের হাতে বন্দি হয়ে গেছে। দারিদ্র্যসীমা ও বৈষম্যের ফারাক অনেক বেশি হয়ে গেছে। তাই ‘সামাজিক নিরাপত্তার পরিমাণ ও বরাদ্দ বাড়াতে হবে বলে জানান তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, নগরের অভাবগ্রস্তরা কারও নজরে আসে না। হরিজনদের ক্যাম্পে গেলে প্রকৃত চিত্র দেখতে পাবেন। নগরের অভাবগ্রস্তদের আমরা খেয়ালই করি না। ঢাকা শহরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মাঠ দখল হয়ে যাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের অবস্থা কী? এই জায়গায় গবেষণা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে দুর্নীতি কমিয়ে জরিপের মাধ্যমে যোগ্য অ-সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে ভাতার আওতা বাড়ানোর দাবি জানায় সিপিডি।
সিপিডি মনে করে, বর্তমানে বয়স্ক ও বিধবা ভাতার ক্ষেত্রে মাসে ৫০০ টাকা ও শিক্ষা উপবৃত্তির জন্য মাসে ১৫০ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। সামাজিক ভাতাপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ বয়স্ক ও ৩৩ শতাংশ বিধবা অযোগ্য সুবিধাভোগী রয়েছে। এদের মধ্যে আবার প্রায় ১২ শতাংশ পেনশন, ভিজিডি বা অন্যান্য ভাতা নিচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা অযোগ্য সুবিধাভোগীদের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে। যা প্রতিরোধ করা প্রয়োজন। তাই প্রকৃত দুস্থ ও আর্থিক দিক দিয়ে দুর্বলদের চিহ্নিত করতে দারিদ্র্য প্রবণ এলাকায় একটি কার্যকরী পারিবারিক জরিপ করা উচিত।
অন্যদিকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করা ও যথাযথ কাগজপত্রের অভাবে ৫ থেকে ৩০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাদেরকেও ওই সুবিধার আওতায় আনা প্রয়োজন।
সিপিডির তথ্যানুযায়ী, যোগ্য অ-সুবিধাভোগীদের ভাতার আওতায় আনতে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৩০২ কোটি টাকা প্রয়োজন। এদিকে অযোগ্যদের পেছনে ১৫০০ কোটি টাকা অপব্যবহার হচ্ছে। তা রোধ করে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ যোগ্যদের পেছনে ব্যয় করা যেতে পারে। আর এই ১৫০০ কোটি টাকার মাধ্যমে প্রকৃত যোগ্য এমন ৪৫ শতাংশ ব্যক্তিকে ভাতার আওতায় আনা সম্ভব।