বিশ্বজমিন
ডেঙ্গুর নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে আশাবাদী গবেষকেরা
মানবজমিন ডেস্ক
(২ বছর আগে) ১৭ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার, ৫:৩৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:১৬ পূর্বাহ্ন

ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে কার্যকরী একটি নতুন চিকিৎসাপদ্ধতিতে প্রাথমিক সফলতা পেয়েছেন গবেষকরা। এরইমধ্যে বানর ও ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে তারা দেখতে পেয়েছেন, মশাবাহিত রোগটির বিরুদ্ধে কাজ করছে এই চিকিৎসাপদ্ধতি। ফলে মানবশরীরেও এটি কাজ করবে বলে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন তারা। যদিও চূড়ান্ত পর্যায়ে সফলতা পেতে আরও সময়ের প্রয়োজন।
এই চিকিৎসা ডেঙ্গু প্রতিরোধের পাশাপাশি আক্রান্তদের চিকিৎসায়ও আমূল পরিবর্তন আনতে চলেছে। এতদিন ডেঙ্গুর সামনে কার্যত অসহায় হয়ে ছিল মানুষ। এটি ঠেকাতে তেমন কোনো অপশন হাতে ছিল না। চিকিৎসা না থাকায় ডেঙ্গু বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায়ই মহামারি রূপ ধারণ করে।এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু ভাইরাস প্রতিরোধে দুটি টিকা আবিষ্কার হলেও তা অনুমোদন দেয়ার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্থ বিশ্বের দেশগুলো।
ফলে নতুন করে ডেঙ্গুর একটি কার্যকরি চিকিৎসা ও প্রতিরোধ পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রেখেছেন গবেষকরা। তারই ধারাবাহিকতায় এবার আশা জাগাচ্ছে নতুন একটি চিকিৎসাপদ্ধতি। গবেষকরা দুই বছর আগেই জানিয়েছিলেন ‘জেএনজে–১৮০২’ নামের ওই রাসায়নিক যৌগ ইঁদুরের দেহে ডেঙ্গুর বিস্তার ঠেকিয়ে দিয়েছে। এবার সেটি বানরের শরীরেও পরীক্ষা করা হলো। আর তাতেই মিলেছে সফলতা। ফলে আশা জেগেছে মানব শরীরেও হয়ত ওষুধটি সফলভাবে কাজ করবে।
ওই গবেষণাটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জনসন অ্যান্ড জনসনের অধীনে। এর ইমার্জিং প্যাথোজেনস বিভাগের প্রধান মার্নিক্স ব্যান লক বলেন, বানরের ওপর জেএনজে-১৮০২ প্রয়োগের ফল ‘খুবই উৎসাহব্যঞ্জক’। যৌগটি উচ্চমাত্রায় প্রয়োগ করে দেখা গেছে, তা ভাইরাসটির বিস্তার পুরোপুরি ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন রয়েছে। এর মধ্যে দুটি ধরনে আক্রান্ত বানরের শরীরে জেএনজে-১৮০২ প্রয়োগ করা হয়েছে বলে জানান মার্নিক্স ব্যান লক। তিনি বলেন, বানরের শরীরে যৌগটি প্রয়োগ করা হয়েছিল ভাইরাসের ধরন দুটি প্রতিরোধে, চিকিৎসার জন্য নয়। তবে ইঁদুরের শরীরে ভাইরাসের চারটি ধরন প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় যৌগটি প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে সাফল্যও পাওয়া গেছে।
সাধারণত কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তার শরীরে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে ওঠে। তবে অনেকের শরীরে প্রতিরোধব্যবস্থা দুর্বল হয়। এর ফলে তারা বারবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। আর প্রতিবারই ডেঙ্গুর উপসর্গগুলো আগের থেকে বেশি মারাত্মক হয়ে দেখা দেয়। ফলে নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়েও একটি আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, যাদের প্রতিরোধব্যবস্থা দুর্বল তাদের শরীরে জেএনজে-১৮০২ প্রয়োগ করলে হয়ত তারা পরেও ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে তারা আরও ভয়াবহ আক্রমণের শিকার হবেন। তাই এখনই নতুন চিকিৎসাপদ্ধতিকে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে স্থায়ী সমাধান হিসেবে ঘোষণা দেয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে আরও বিস্তৃত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকরা।