অর্থ-বাণিজ্য
বিবিএসের মূল্য পরিসংখ্যানে অসন্তুষ্ট প্রায় ৫৯ শতাংশ ব্যবহারকারী
স্টাফ রিপোর্টার
(২ সপ্তাহ আগে) ১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৬:৫০ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কর্তৃক দেশের কয়েকটি পণ্যের পাইকারী ও খুচরা মূল্য প্রকাশ করা হয়। তাদের প্রকাশিত মূল্যের তথ্যে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন প্রায় ৫৯ শতাংশ পরিসংখ্যান ব্যবহারকারী। অন্যদিকে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন ৪১ দশমিক ৩৩ শতাংশ ব্যবহারকারী। এছাড়া কৃষি নিয়ে বিবিএস’র করা পরিসংখ্যানে ৫০ দশমিক ৪৩ শতাংশ, শিক্ষা পরিসংখ্যানে ৫৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ, অপরাধ বিষয়ক পরিসংখ্যানে ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ, বৈদেশিক বাণিজ্য পরিসংখ্যানে ৫৬ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং শিল্প পরিশংখ্যানে ৫৮ দশমিক ৬২ শতাংশ ব্যবহারকারী অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। বিবিএস’র করা ‘ইউজার স্যাটিসফেকশন সার্ভে-২০২২” শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার আগারগাঁও বিবিএস মিলনায়তনে জরিপটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপটির নমুনার আকার ছিল ৬০৯ জন, যার মধ্যে ৫৮০ জন উত্তরদাতার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। জরিপে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী উত্তরদাতাদের ৭০ দশমিক ৫২ শতাংশ জনসংখ্যা, জনমিতি ও জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, ইত্যাদি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান ব্যবহার করেন। উত্তরদাতাদের ৬৫ শতাংশ পরিসংখ্যানের বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক আরও বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত প্রকাশের বিষয়ে মত প্রকাশ করেন এবং ৪২ দশমিক ১৪ শতাংশ প্রায়ই প্রত্যাশিত তথ্য-উপাত্ত খুঁজে পেয়েছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিবিএস এর তথ্য ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৭২ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভালো এবং ১২ দশমিক ৬৭ শতাংশ খুব ভালো বলে মত দিয়েছেন। এছাড়া তথ্যের মান নিয়ে ৮৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ ব্যবহারকারী সন্তুষ্ট ছিল।
জরিপে উঠে এসেছে, তথ্য-উপাত্ত অনুসন্ধানকারীদের বিবিএসের সঙ্গে যোগাযোগের প্রচলিত কারণগুলোর মধ্যে নির্দিষ্ট উপাত্ত অনুসন্ধানের হার ৫৮ দশমিক ০৭ শতাংশ। তাদের প্রায় ৭২ দশমিক ৫৬ শতাংশ এক সপ্তাহের মধ্যেই তাদের কাক্সিক্ষত তথ্য পেয়েছেন বলে মত দিয়েছেন। এক্ষেত্রে ৫৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ ব্যবহারকারী বিবিএসের তথ্যে সন্তুষ্ট হলেও তাদের ৩৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ আংশিক সন্তুষ্ট ছিলেন। এই জরিপের ৫৮০ জন উত্তরদাতার মধ্যে ৮৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ জানান তারা বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন কারণে বিবিএসের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে। এছাড়া জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ ব্যবহারকারী সব সময় তথ্য পায়, ৪২ দশমিক ১৪ শতাংশ ব্যবহারকারী প্রায়ই পেয়ে থাকে, ৩০ দশমিক ৫৯ শতাংশ মাঝে মাঝে পায় এবং ৩ দশমিক ৩২ শতাংশ পায় না বলে জরিপে উঠে এসেছে।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, এনএসডিএস বাস্তবায়নের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রথমবারের মতো ইউজার স্যাটিসফিকেশন সার্ভে-২০২২ পরিচালনা করে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তত্ত্বাবধায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ ও এনএসডিএসকে সামনে রেখেই যাবতীয় প্রশাসনিক ও নীতিনির্ধারণী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান বলেন, এ জরিপের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিবিএস’র মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত সরকারি পরিসংখ্যান নিয়ে পরিসংখ্যান ব্যবহারকারী ও অংশীজনের সন্তুষ্টির মাত্রা নিরূপণ ও তাদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করা। এ জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সার্বিক মানোন্নয়নে ও সরকারি পরিসংখ্যান প্রণয়নে অধিকতর সক্ষম প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ জরিপ পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, এবং গণমাধ্যমসহ সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, সঠিক পরিকল্পনার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো সঠিক তথ্য-উপাত্ত। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, এসডিজির সূচকসমূহ, অষ্টম পঞ্চম বার্ষিকী পরিকল্পনা, এবং ডেল্টা প্লান বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণে সঠিক ও সময়োচিত পরিসংখ্যানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসেবে সরকারের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে এক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। বর্তমানে পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ এর আলোকেই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। পরিসংখ্যান ব্যবহারকারীদের মতামত ও সুপারিশের আলোকে প্রাপ্ত এ জরিপের ফলাফল বিবিএসকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নপূর্বক সেবার মানোন্নয়ন ও তথ্য-উপাত্তের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।