অর্থ-বাণিজ্য
যুক্তরাজ্যে আরও একটি কন্টেইনার জাহাজ রপ্তানি করলো বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(৮ মাস আগে) ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার, ৩:১৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:২৫ পূর্বাহ্ন

দেশে তৈরি আরও একটি পণ্যবাহী কন্টেইনার জাহাজ যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করলো বাংলাদেশ। দেশীয় আনন্দ শিপইয়ার্ডের তৈরি ৬ হাজার ১০০ টন ধারণ ক্ষমতার জাহাজটি কিনেছে যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান এনজিয়ান শিপিং কোম্পানি লিমিটেড।
মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজটি হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আনন্দ শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা বারী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক নীতি) হোসেন আহমেদ, মহাপরিচালক নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের কমডোর নিজামুল হক, ইসলামী ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মনিরুল মওলা।
আনুষ্ঠানে জানানো হয়, জাহাজটি ৩৬৪ ফুট লম্বা, প্রস্থে ৫৪ ফুট ও গভীরতা ২৭ ফুট। জাহাজটির ইঞ্জিনের ক্ষমতা ৪১৩০ হর্স পাওয়ার, গতি ১২.৫ নটিক্যাল মাইল ও ধারণ ক্ষমতা ৬১০০ টন। এটি কন্টেইনার, ভারী স্টিলের কয়েল, খাদ্যশস্য, কাঠ, পাশাপাশি বিপজ্জনক মালামাল বহন করতে পারে। বাল্টিক সমুদ্রে সম্পূর্ণ বরফ আচ্ছাদিত অবস্থায় ৪ ফুট বরফের পানিতে চলতে পারবে। জাহাজটি রপ্তানি করে ১০০ কোটি টাকার বেশি সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে বাংলাদেশ।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেন, বাংলাদেশ আজ একটি অত্যাধুনিক মাল্টিপারপাস কন্টেইনার শিপ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করলো। এটা আমাদের গর্বের দিন। এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।
তিনি জানান, জাহাজ নির্মাণ শিল্প একটি সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাত। অত্যাধুনিক জাহাজ নির্মাণে আমাদের দক্ষতা রয়েছে।
তিনি বলেন, সমুদ্র সীমা জয় করলেও আমরা সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগাতে পারিনি। এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছি। সম্ভাবনাময় এ খাতকে এগিয়ে নেয়া জরুরি। সরকার এটিকে গুরুত্ব দিয়ে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, মাতারবাড়ী, মোংলা, পায়রাসহ সব বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।
আনন্দ শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ বারী বলেন, আনন্দ শিপইয়ার্ড ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সোনারগাঁওয়ের মেঘনাঘাটে আর্ন্তজাতিকমানের জাহাজ নির্মাণ করছে। ইয়ার্ডের বাৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৩০ হাজার টন লোহা নির্মাণে ব্যবহৃত জাহাজ। এ দেশে আধুনিক জাহাজ নির্মাণের কলাকৌশল ও পদ্ধতি আনন্দ শিপইয়ার্ডই প্রচলন, পরিচিত ও প্রসারিত করেছে।
তিনি বলেন, জাহাজ রপ্তানি, জাহাজ পরিচালনা, ক্যাপ্টেন ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ার, ক্রু সরবরাহ, দেশের শিপিং লাইনের জাহাজের মাধ্যমে সমুদ্র পরিবহন এবং দেশের উপকূলীয় এবং আভ্যন্তরীণ মালামাল ও যাত্রী পরিবহনের মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণ শিল্প বাংলাদেশকে বছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা যোগান দিয়ে থাকে। এই অংক ২০৪১ সালে ১০০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছবে।
আনন্দ শিপইয়ার্ড এ পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ক্রেতাদের কাছে ৩৫৬টি জলযান নির্মাণ করে সরবরাহ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ সালে ডেনমার্কে অত্যাধুনিক কন্টেইনার জাহাজ ‘স্টেলা মেরিস’ রপ্তানির মধ্য দিয়ে বংলাদেশের জন্য জাহাজ রপ্তানির স্বর্ণদ্বার উন্মোচন করে ও বাংলাদেশ জাহাজ রপ্তানিকারক দেশ হিসাবে পরিচিতি পায়। প্রতিষ্ঠানটি ডেনমার্ক, জার্মান, নরওয়ে ও মোজাম্বিকসহ বিভিন্ন দেশে জাহাজ রপ্তানি করছে। সুবৃহৎ আনন্দ শিপইয়ার্ডে একসঙ্গে ৮টি ১০ হাজার টন ক্ষমতা সম্পন্ন জাহাজ নির্মাণের ভৌত সুবিধা আছে, একই সঙ্গে ইয়ার্ডটি অন্যান্য অনেক ছোট আকারের নৌযান তৈরি করতে পারে এবং করে থাকে।