দেশ বিদেশ
সাতদিনের আল্টিমেটাম ঢাবি সাদা দলের
ফ্যাসিস্ট শক্তির সঙ্গে প্রো-ভিসি’র আঁতাতের অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
২৩ জুন ২০২৫, সোমবারঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের শিক্ষক নিয়োগ, পতিত ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের’ পৃষ্ঠপোষকতা করাসহ একাধিক অভিযোগ তুলেছে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দল’। এসব বিষয় সংশোধনের জন্য সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে সংগঠনটি। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন এবং উচ্চপর্যায়ে অভিযোগ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। রোববার অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রো-ভিসি কার্যালয়ে ২ ঘণ্টার অধিক সময় বৈঠকে জবাবদিহি চান তারা। এ সময় ড. মামুনের সঙ্গে সাদা দলের একাধিক শিক্ষকের বাকবিতণ্ডা হয়। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যাপক মামুন আহমেদ। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে ও প্রশাসনিক নিয়ম মেনে হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৈঠক শেষে তারা গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ ছাত্রলীগপন্থি বিতর্কিত নেতাকর্মীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদিয়া আফরিন এনিকে পপুলেশন সায়েন্স বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ ছাড়া, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের নকল করে ধরা পড়া ছাত্রলীগকর্মী আনিকাকেও শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করেন। এ ছাড়াও ভুয়া ভর্তির দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত নীল দলের (আওয়ামী লীগপন্থি) এক শিক্ষককে সফরসঙ্গী করে বিদেশ ভ্রমণ, নীল দলের নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক, বিতর্কিত শিক্ষকদের রিসার্চ এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছেন। এ ছাড়া শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে নীল দলের শিক্ষক অন্তর্ভুক্ত করা ও সাত কলেজ ইস্যুতে অস্থিরতা তৈরির অভিযোগ তুলেছে সাদা দল।
ঢাবি সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার বলেন, প্রো-ভিসি ড. মামুন আমাদের বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, তবে অনেক কিছুর জবাব এড়িয়ে গেছেন। সাদা দলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সত্যতা প্রমাণ হওয়ায় নকল করা ছাত্রীর নিয়োগ আটকানো হয়েছে। আমরা ওনাকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছি বিষয়গুলো সংশোধনের জন্য। আগামী দিনে আমরা অবরুদ্ধ করবো নাকি গেটে দাঁড়াবো সেটা নির্ভর করে ওনার আচরণের ওপর। ওনি সাদা দলের অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদীর ওপরেও প্রভাব বিস্তার করেন।
তবে এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়োগের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে ও প্রশাসনিক নিয়ম মেনে হয়েছে। নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের থেকে প্রার্থীর মেধা, দক্ষতা, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও সততা সম্পর্কে জানা হয়। এ ছাড়া স্বৈরাচার সরকারের দোসর ছিল কি-না জানতে চেয়েছি। অধ্যাপক মামুন বলেন, সাদিয়া আফরিন নামে যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সে ছাত্রলীগে ছিল এটা আজকে ওনাদের থেকে প্রথম শুনেছি। নকলের অভিযোগ শুনার পর আমি ওই বিভাগের চেয়ারম্যানকে বিভাগীয় মিটিং ডেকে ভেরিফাই করতে বলেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে, নকলের কোনো প্রমাণ নেই। এক্সাম কন্ট্রোলার অফিস তদন্ত করে জানিয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেই। সিলেকশন বোর্ডের সদস্যরাও অভিযোগের সত্যতা পায়নি। আমি চেয়েছি প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখতে, বিগত স্বৈরাচার সরকারের প্রশাসনিক নিয়মের পরিবর্তন আনতে। ওনাদের কথা হচ্ছে আমি কেন ওনাদের থেকে জানতে চাইনি। ওনাদেরকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। অনেকে ব্যক্তিগতভাবে সুপারিশ করে থাকেন তবে আমি এসব অ্যালাউ করি না। নিয়োগপ্রাপ্ত কারও নামে যদি অভিযোগ থাকে আমি সেটা সিন্ডিকেটে নিয়ে যাবো।