ঢাকা, ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

অর্থ-বাণিজ্য

জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি এফবিসিসিআই'র

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

(১ বছর আগে) ১৭ আগস্ট ২০২২, বুধবার, ১:৪৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৬:৪৯ অপরাহ্ন

mzamin

দেশের অর্থনীতির গতি স্বাভাবিক রাখতে ও জনস্বার্থে জ্বালানি তেলের জন্য কর প্রত্যাহার করে মূল্য পুনঃসমন্বয় করার বিষয়ে দাবি জানিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেয়া এক চিঠিতে এই দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। এফবিসিসিআই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক করোনা মহামারীর ধকল সামলে পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় রয়েছে দেশের অর্থনীতি। কিন্তু এরই মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম ও জাহাজ/পরিবহন ভাড়া প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচও ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত ৬ই আগস্ট জ্বালানি তেলের (ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন, পেট্রল) দাম গড়ে ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এর মধ্যে গণপরিবহন ও কৃষি খাতে বহুল ব্যবহূত ডিজেলের মূল্য ৪২.৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। কেরোসিন ও ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪, অকটেনের দাম লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ আর পেট্রোলের দাম লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

জ্বালানি তেলের এ মূল্যবৃদ্ধির হার জাতীয় অর্থনীতিতে আরও চাপ সৃষ্টি করবে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। বলা হয়, এতে উৎপাদন ও ব্যবসা খরচ আরেক দফা বেড়ে যাবে, পণ্য পরিবহনে বাড়তি খরচ বহন করতে হবে। এ বছর বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি কম হওয়ার ফসল উৎপাদন অব্যাহত রাখতে কৃষকদের বাড়তি সেচের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন
এতে কৃষি উৎপাদনের খরচও বাড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হ্রাস পেলে দেশের রফতানি খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে এফবিসিসিআইয়ের চিঠিতে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, যেখানে ব্যবসাবান্ধব বিভিন্ন নীতিসহায়তার মাধ্যমে সরকার দেশের অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করার আন্তরিক প্রয়াস চালাচ্ছে, সেখানে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি শিল্প-বাণিজ্য, সেবা, কৃষিসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। সেসঙ্গে বহুমাত্রিক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে, যা জনজীবনের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছে এফবিসিসিআই।

সুষম রেশনিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুতের বিদ্যমান সাময়িক সংকট মোকাবিলায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও নিয়মিত লোডশেডিংয়ের কারণে শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে চিঠিতে জানিয়েছে এফবিসিসিআই। সংগঠনটি মনে করে বিদ্যুৎ রেশনিং এমনভাবে করা উচিত যাতে উৎপাদন ও কৃষি খাত ব্যাহত না হয়।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের বাজার স্বাভাবিক হলে এর মূল্য পুনরায় সমন্বয় করা হবে বলে আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে এফবিসিসিআই। তবে বর্তমান সংকট এড়াতে সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে জ্বালানি তেলের ওপর আরোপিত শুল্ক-কর প্রত্যাহার করে এর মূল্যকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে বলে মনে করে ব্যবসায়ীদের এ সংগঠন। জ্বালানি তেলের ওপর বর্তমানে মোট ৩৪ শতাংশ করভার (শুল্ক ১০ শতাংশ, মূসক ১৫ শতাংশ ও অগ্রিম কর ৫ শতাংশ এবং অগ্রিম আয়কর ২ শতাংশ) আরোপিত আছে। তবে কর প্রত্যাহার করে জ্বালানি তেলের দাম পুনঃসমন্বয় করলে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব এড়ানো যাবে বলে সংগঠনটি মনে করে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ সালে মোট জ্বালানি তেলের চাহিদা ছিল প্রায় ৭০ লাখ টন যার মধ্যে অকটেনের ব্যবহার ছিল ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৬০২ টন আর পেট্রোলের ব্যবহার ছিল ৪ লাখ ৪৬ হাজার টন। দিনে গড়ে ১২ থেকে ১৪ হাজার টন ডিজেল ব্যবহার হয়, যার অধিকাংশই পরিবহন খাতে। এছাড়া কৃষি সেচ ও বিদ্যুৎ খাতেও ডিজেল ব্যবহৃত হয়। বছরে বিপিসির সরবরাহ করা মোট জ্বালানির ৭৩ শতাংশই ডিজেল। বছরে ৪৫ থেকে ৪৬ লাখ টন ডিজেল বিক্রি করে বিপিসি। ডিজেল ছাড়াও বিপিসি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ফার্নেস তেল, পরিবহনের জন্য অকটেন, উড়োজাহাজের জন্য জেট ফুয়েল এবং অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে। সব মিলে দেশের মোট জ্বালানি তেলের ৬৩ শতাংশ ব্যবহার করে পরিবহন খাত। প্রায় ১৬ শতাংশ ব্যবহৃত হয় কৃষি খাতে। শিল্প খাত ৭ ও বিদ্যুৎ খাত ব্যবহার করে ১০ শতাংশ।

অর্থ-বাণিজ্য থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অর্থ-বাণিজ্য সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status