বাংলারজমিন
‘ভারতীয় নাগরিকরাও বাংলাদেশিদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার ভারত থেকে পুশইন হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকরা নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের ওপর চরম নির্যাতন চালিয়েছে। এ ছাড়াও ভারতীয় নাগরিকরাও তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে।
ভুক্তভোগীরা বলেন, ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ভারতীয় নাগরিকরাও তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। তাদের দাবি, ভারতে বসবাস করা নাগরিকদের ধরে ধরে নির্যাতন করছে ভারতীয় নাগরিকরা। নির্যাতন সইতে না পেরে তারা বাধ্য হয়ে ধরা দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। পরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ১৭ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করে। সোমবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে তাদের পুশইন করা হয়। পরে বুধবার সকালে যাচাই-বাছাই শেষে নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় ১৭ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। ফিরে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন পুুরুষ, চারজন নারী ও ৯ জন শিশু রয়েছে। তারা সবাই কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার বাসিন্দা।
এর আগে মঙ্গলবার ভোরে তাদের উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের বিভীষণ সীমান্তের লালমাটিয়া নওগাঁ ব্যাটালিয়ন বিভীষণ বিওপি’র সদস্যরা আটক করে। পরে বিকালে গোমস্তাপুর থানায় হস্তান্তর করে। পুলিশ, বিজিবি ও ভুক্তভোগীরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতে কাজ করতেন। গত ১৭ই মে ভারতীয় পুলিশ তাদের হরিয়ানা প্রদেশ থেকে আটক করে ট্রেনযোগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলায় নিয়ে আসে। সেখান থেকে বাসযোগে গত ২৪শে মে সন্ধ্যায় ভারতের ৮৮ বিএসএফের ইটাঘাটা ক্যাম্পের কাছে তাদের হস্তান্তর করে। সোমবার রাতে বিএসএফ তাদের বিভীষণ সীমান্তের ২১৯/৭১ আর পিলারের কাছ দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন করে।
ভুক্তভোগী শ্রী বুলু চন্দ্র বর্মন বলেন, মোদি সরকার বাংলাদেশিদের সেখানে থাকতে দিচ্ছে না। অনেক নির্যাতন করছে। তাই দিল্লি পুলিশের কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করি। পরে দিল্লি পুলিশ হাওড়া কুচবার স্টেশন থেকে বাসে করে নিয়ে এসে আমাদের বিএসএফ ক্যাম্পে রাখে। সেখানে একদিন রেখে সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বর্ডার পার করে ছেড়ে দেয়। তারপর রাতের অন্ধকারে কিছু চিনতে না পেরে একটা জায়গায় সবাই মিলে বসে ছিলাম। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় জেলেদের মাধ্যমে নদী পার হয়ে বিজিবি’র কাছে আত্মসমর্পণ করি। গোমস্তাপুর থানার ওসি মো. রইস উদ্দিন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন মানবিকতার সঙ্গে বিষয়টি বিবেচনা করে ১৭ জনকে দুপুরে নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।