বিশ্বজমিন
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হুমকিমুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চায় ইইউ
মানবজমিন ডেস্ক
(১ সপ্তাহ আগে) ২৪ মে ২০২৫, শনিবার, ১০:২৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:৪৯ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি সম্মানভিত্তিক, হুমকিমুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ কথা জানিয়েছেন সংস্থাটির বাণিজ্য বিষয়ক কমিশনার মারোস সেফচোভিচ। তার এই বক্তব্য আসে এমন এক সময়, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর শতকরা ৫০ ভাগ শুল্ক আরোপ করার। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। ট্রাম্পের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার এবং বাণিজ্য সেক্রেটারি হাওয়ার্ড লুটনিকের সঙ্গে এক ফোনালাপের পর সেফচোভিচ বলেন, ইইউ সম্পূর্ণভাবে জড়িত ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উভয় পক্ষের জন্য কার্যকর এমন একটি চুক্তি করতে। ইইউ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক তুলনাহীন, আর তা পারস্পরিক সম্মান দিয়ে পরিচালিত হওয়া উচিত, হুমকি দিয়ে নয়। আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষায় প্রস্তুত আছি।
শুক্রবার আগে ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ইইউ-এর সঙ্গে আমাদের আলোচনা কোনো দিকে এগোচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ১লা জুন থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হবে, তবে যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত বা উৎপাদিত পণ্যের ওপর শুল্ক বসবে না। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, আমি কোনো চুক্তির খোঁজে নেই- চুক্তি আমরা ঠিক করেই ফেলেছি। তবে তিনি ইঙ্গিত দেন, কোনো বড় ইউরোপীয় বিনিয়োগ এলে শুল্ক আরোপ কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ইইউ। মার্কিন সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ইইউ যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলারে বেশি পণ্য রপ্তানি করেছে এবং ৩৭০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য কিনেছে। ট্রাম্পের হুমকির জবাবে ইউরোপীয় বিভিন্ন সরকার সতর্ক করে বলেছে, উচ্চ শুল্ক উভয় পক্ষের জন্যই ক্ষতিকর হবে। আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মিশেল মার্টিন বলেন, আমরা এই পথে যেতে চাই না। আলোচনা হচ্ছে একমাত্র টেকসই পথ। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরা সেন্ট-মার্টিন বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ পথেই থাকছি। তবে জবাব দিতে প্রস্তুত আছি। জার্মান অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথারিনা রাইকে বলেন, ইউরোপীয় কমিশন যেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করতে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কোফ বলেন, আমরা ইইউ-এর কৌশলকে সমর্থন করছি। আগেও দেখেছি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার সময় শুল্ক কখনো বাড়ে আবার কমেও।
গত মাসে ট্রাম্প বেশিরভাগ ইউরোপীয় পণ্যের ওপর শতকরা ২০ ভাগ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। তবে ৮ জুলাই পর্যন্ত আলোচনার সময় দিতে তা কমিয়ে শতকরা ১০ ভাগ করেন। ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রে বেশি পণ্য বিক্রি করে, কিন্তু তুলনামূলকভাবে কম আমদানি করে। ট্রাম্প দাবি করেন, ইইউ-এর বিভিন্ন নীতি মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য বৈষম্যমূলক। বিশেষত, গাড়ি ও কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে। এছাড়া, অ্যাপলের প্রতি ট্রাম্প হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন- যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি না হওয়া আইফোনের ওপর কমপক্ষে শতকরা ২৫ ভাগ শুল্ক আরোপ করা হবে। পরে এই হুমকি সব ধরনের স্মার্টফোনে সম্প্রসারণ করেন। শুক্রবার ট্রাম্পের সর্বশেষ হুমকির পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের শেয়ার বাজারে ধস নামে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক শতকরা প্রায় ০.৭ ভাগ কমে যায়, আর জার্মানির ড্যাক্স ও ফ্রান্সের ক্যাক ৪০ সূচক শতকরা ১.৫ ভাগের বেশি পতন দেখায়।