বিশ্বজমিন
হার্ভার্ডে পাকিস্তানি মেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বের হৃদয়গ্রাহী গল্প শেয়ার করলেন ভারতীয় মেয়ে, ভাইরাল
মানবজমিন ডেস্ক
(২ বছর আগে) ১১ আগস্ট ২০২২, বৃহস্পতিবার, ২:৪১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১১:০০ পূর্বাহ্ন

পাকিস্তান বলতে নানা নেতিবাচক ধারণা ও অভিমত দেখা যায় ভারতে বেড়ে ওঠা মানুষদের মধ্যে। মূলত এ ধরণের ধারণা গড়ে ওঠার পেছনে ভারতীয় মিডিয়া বড় ভূমিকা রাখে। তবে একবার সীমান্তের দুই পাশের মানুষ যখন নিজেদের মধ্যে পরিচিত হন তখন সেই ধারণা বদলে যায়। সেই একই ঘটনা ঘটেছে ভারতের স্নেহা বিশ্বাসের ক্ষেত্রেও। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে তিনি এক পাকিস্তানি মেয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে উঠেন। আর সেই গল্প তিনি শেয়ার করেছেন লিংকডইনে। ওই গল্পের সঙ্গে তিনি তার পাকিস্তানি বন্ধুর সঙ্গে একটি ছবিও যুক্ত করে দিয়েছেন। এতে দেখা যাচ্ছে, হারভার্ডের ফ্ল্যাগ ডে-তে তারা দুইজন ভারত ও পাকিস্তানের পতাকা ধরে আছেন।
স্নেহা বলেন, আমি ভারতের একটি ছোট শহরে বড় হয়েছি। পাকিস্তান সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল ক্রিকেট, ইতিহাস, বই ও গণমাধ্যম থেকে। আর এর সবখানেই ছিল প্রতিদ্বন্দ্বীতা এবং ঘৃণা। এর কয়েক দশক পর আমি এক পাকিস্তানি মেয়ের সঙ্গে পরিচিত হলাম। সে ইসলামাবাদ থেকে এসেছে। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের প্রথম দিনই তার সঙ্গে আমার পরিচয়। আমাদের মাত্র ৫ সেকেন্ড লেগেছিল নিজেদের পছন্দ করতে। প্রথম সেমিস্টার শেষ হওয়ার আগেই সে ক্যাম্পাসে আমার সবথেকে ঘনিষ্ঠ বন্ধুতে পরিণত হয়।
এরপর আমরা একসঙ্গে চা, বিরিয়ানি খেতে থাকি। পড়াশুনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকি। আর এভাবেই দু’জন একে অপরের বিষয়ে জানতে পারি। সে নিজেও পাকিস্তানের একটি রক্ষণশীল পরিবার থেকে উঠে এসেছে। তবে তার বাবা-মা ছিলেন অনেক সাপোর্টিভ। তাদের উৎসাহেই সে ও তার ছোট বোন নিজেদের স্বপ্ন পূরণে সকল নিয়ম কানুন ভাঙার সাহস পেয়েছে। তার এই ভয়হীন এবং উচ্চাভিলাষী চিন্তা আমাকেও উৎসাহিত করে।
আমি আবিষ্কার করলাম, কেউ নিজের জাতিকে নিয়ে গর্ব করতে জানলে সে সীমান্ত কিংবা ভৌগলিক দূরত্ব অতিক্রম করেও মানুষকে ভালোবাসতে জানে। মৌলিকভাবে বিশ্বের সবখানেই মানুষ আসলে একইরকম। সীমান্ত এবং দূরত্ব মানুষের তৈরি। মস্তিষ্কে সেই ধারণা থাকলেও হৃদয় ঠিকই সবাইকে কাছে টেনে নেয়। এইযে হার্ভার্ডের ফ্ল্যাগ ডে-তে আমাদের দিকেই দেখুন!
এই লেখাটি স্নেহা পোস্ট করেন মঙ্গলবার। এখন পর্যন্ত ৩৯ হাজারের বেশি লাইক পড়েছে সেই পোস্টে। কমেন্ট করেছেন ১৪শ’রও বেশি মানুষ। এরমধ্যে একজন বলেন, আমরা নিজেরাই মানুষের মধ্যে দেয়াল তৈরি করেছি, এখন সেটা ভেঙ্গে ফেলাও আমাদেরই কাজ। আরেকজন লিখেন, লাইন অব কন্ট্রোলের (ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত) দুই পাশে আমরা একইধরনের মানুষ থাকি। আপনারা দু’জন আজীবন বন্ধুত্ব ধরে রাখুন। আশা করি, এই বন্ধুত্ব হয়তো সীমান্তের দুই পাশে থাকা অন্যদেরও পরিবর্তন আনতে উৎসাহিত করবে।