ঢাকা, ১ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

দরিদ্র দেশগুলোতে টিকায় তহবিল দেয়া বন্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র

মানবজমিন ডেস্ক
২৮ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশুদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিকা কিনে তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করে ‘গ্যাভি’ নামের সংগঠন। এবার তাদেরকে আর্থিক সমর্থন দেয়া বন্ধের ধারণা পোষণ করছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এই টিকার মাধ্যমে গত প্রায় ২৫ বছরে বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই থেকেও সহায়তা হ্রাস করার কথা বলা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। বিশ্ব জুড়ে সবচেয়ে বড় ঘাতকের মধ্যে ম্যালেরিয়া অন্যতম। তবে এইচআইভি ও যক্ষ্মা চিকিৎসা, গৃহযুদ্ধকবলিত দেশগুলোতে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত দেশগুলোতে খাদ্য সহায়তা দিতে কিছু অর্থ দান অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এ খবর দিয়ে অনলাইন নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, সোমবার দিবাগত রাতে মার্কিন কংগ্রেসে এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ২৮১ পৃষ্ঠার একটি রিপোর্ট দিয়েছে। তাতে এসব কথা বলা হয়েছে। ওই রিপোর্টে বিদেশে সাহায্য বিষয়ক প্রকল্পগুলোতে সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং তা বাতিল করার পরিকল্পনাভিত্তিক একটি তালিকা করা হয়েছে। এর একটি কপি এবং অন্য ডকুমেন্ট এসেছে নিউ ইয়র্ক টাইমসের হাতে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায় ২৫ বছর ধরে যে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, এর ফলে সংক্রামক ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব সংক্রমণে বছরে মারা যান লাখ লাখ মানুষ। এর প্রচ্ছদে সহায়তা কর্তনের পর ইউএসএইডের একটি চিঠির বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। ইউএসএইডের বেশির ভাগ তহবিল বাতিল করা হয়েছে। এর কমপক্ষে ৬ হাজার কর্মীর মধ্যে এখন সক্রিয় দায়িত্বে আছেন মাত্র ৮৬৯ জন। ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সবমিলিয়ে প্রশাসন ইউএসএইডের ৮৯৮টি প্রকল্প অব্যাহত রাখার এবং ৫৩৪১টি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে বলা হয় বাকি যে প্রোগ্রামগুলো থাকে তার আর্থিক মূল্য ৭৮০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৮৩০ কোটি ডলার বাধ্যতামূলক তহবিল। কংগ্রেসে পরিকল্পনার যে মেমো উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে বিদেশি সহায়তাকে একতরফা সিদ্ধান্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে যেহেতু এইচআইভি বা টিকা বিষয়ক স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মসূচিগুলোর বরাদ্দ আসে কংগ্রেস থেকে, তাই এই কর্মসূচি বন্ধ করার বৈধ ক্ষমতা প্রশাসনের আছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। এ বিষয়টি এখন একাধিক আদালতে বৈধতার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। যেসব কর্মসূচিতে অর্থায়ন বরাদ্দ করা হয়েছে তার মধ্যে আছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংগঠন (এফএও)। এই সংস্থাটি বিভিন্ন রোগের বিষয়ে নজরদারি করে। বিশেষ করে যেসব রোগ পশু থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়। যেমন বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ে ৪৯টি দেশে। বড় কর্মসূচির মধ্যে আছে ম্যালেরিয়া শনাক্ত করে তার বিরুদ্ধে লড়াই করা। এই ম্যালেরিয়াকে শিশুদের বড় অন্যতম ঘাতক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সিয়েরা লিয়নের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. অস্টিন ডেমবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই অর্থ বরাদ্দের সিদ্ধান্তের কথা শুনে তিনি হতাশ ও বিচলিত। সতর্ক করে তিনি বলেন, এর প্রভাব অনুভূত হবে বিশ্বব্যাপী। তিনি বলেন, এটা শুধুই একটি আমলাতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নয়। একই সঙ্গে এতে শিশুদের জীবন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে। সিয়েরা লিয়নে ‘গ্যাভি’কে সাপোর্ট বন্ধ করা শুধু সিয়েরা লিয়নের ইস্যু নয়। এটা ওই অঞ্চলের, বিশ্বের ইস্যু। আমার কাজই হলো ওইসব মানুষের কাছে যাওয়া। আক্রান্ত লোকজন বা নতুন ওষুধ পাওয়ার অভাবে ভোগা মানুষগুলোর কথা সরাসরি শুনতে চাই। ৩০ বছর ধরে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিয়ে লিখছি আমি। কমপক্ষে ৮০টি দেশ থেকে রিপোর্ট করেছি। তিনি আরও বলেন, উপরন্তু সব শিশুর জন্য নিয়মিত রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে টিকা দেয়ার চেষ্টা করতে হয়। সিয়েরা লিয়ন এখন এমপক্সের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এ জন্য টিকা ও গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ দিয়ে যাচ্ছে ‘গ্যাভি’। ড. ডেমবি বলেন, আমরা আশা করবো যুক্তরাষ্ট্র সরকার বৈশ্বিক নেতা হিসেবে নিজেকে অব্যাহত রাখবে। তারা গ্যাভিতে যে অর্থ দিচ্ছে এটা তাদের খরচ নয়। এটা বিনিয়োগ।

 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status