দেশ বিদেশ
মাগুরায় আছিয়ার ধর্ষকের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা
মাগুরা প্রতিনিধি
১৫ মার্চ ২০২৫, শনিবার
মাগুরা শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে নিজনান্দুয়ালী মাঠপাড়ায় ধর্ষক হিটু শেখের বাড়ি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আছিয়ার জানাজা শেষ হলে বিক্ষুব্ধ জনতা ধর্ষকের বাড়িতে হামলা চালায়। তারপর আগুন ধরিয়ে দেয় । ৭-৮ বছর আগে ফরিদপুর জেলা থেকে পরিবার নিয়ে নিজনান্দুয়ালীতে জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে হিটু। দীর্ঘদিন বাস করার পরও তিনি এ এলাকার মানুষের কাছে খারাপ মানুষ হিসেবে পরিচিত। ধর্ষক হিটু নানা পেশায় জড়িত। কখনো শ্রমিক, কখনো কৃষক, কখনো ভ্যানচালক। পাশাপাশি সমাজে নানা ধরনের খারাপ কাজের সঙ্গেও জড়িত। শুক্রবার দুপুরে সরজমিন নিজনান্দুয়ালী মাঠপাড়া গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসীর নিকট থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী বলেন, এমন কোনো কাজ নেই যা হিটু করে নাই। এর আগে ফরিদপুর থাকাকালে এক নারীর সঙ্গে অপকর্ম করে সেখান থেকে বিতারিত হয়েছিল। বর্তমানে সে এ গ্রামের মানুষের চোক্ষুশূল। তাকে কেউ দেখতে পারে না। তার পরিবারের সবাই নানা ধরনের কুকর্মের সঙ্গে জড়িত। আছিয়ার মতো এক নিষ্পাপ শিশুর ওপর নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। অবশেষে আছিয়ার মৃত্যু হলে আমরা গ্রামবাসীসহ বিক্ষুব্ধ জনতা তার বাড়িতে ভাঙচুর চালাই। আমরা হিটু শেখের পরিবারকে আর এ গ্রামে দেখতে চাই না। তার ফাঁসির দাবি আমাদের সকলের।
গ্রামবাসীরা জানায়, বৃহস্পতিবার আছিয়ার মৃত্যুর খবরে যখন দেশবাসী কাঁদছে তখন আমরাও কেঁদেছি। সন্ধ্যায় আছিয়ার নামাজে জানাজার পরপরই আমরা গ্রামবাসীসহ হাজার হাজার মানুষ শহর থেকে নিজনান্দুয়ালী মাঠপাড়ায় ধর্ষক হিটু শেখের বাড়িতে জড়ো হই। তারপর সন্ধ্যা ৭টার পরপরই তার বাড়িতে আগুন দেই এবং তার ফাঁসির দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকি। তারপর শুরু হয় তার বাড়ি ভাঙচুর। রাত ১২টা পর্যন্ত চলে। আবার শুক্রবার সকাল থেকেই সেখানে ভাঙচুর চলে। নিজনান্দয়ালী মাঠপাড়ার বাসিন্দা হাবিব মোল্যা জানান, আছিয়ার মৃত্যুর খবরে আমরা খবুই ব্যথিত। হিটু শেখের মতো খারাপ লোক সমাজে কাম্য নয়। আমাদের এ এলাকার বাসিন্দা হয়ে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ হয়। তার পরিবারের কোনো লোক আমরা এ গ্রামে দেখতে চাই না। স্থানীয় ষাট বছর বয়সী আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা এ গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। হিটু শেখ সামান্য কয়েক বছর হলো অন্য এলাকা থেকে এসেছে। তার পরিবারের সবাই নানা কুকর্মের সঙ্গে জড়িত। শিশু আছিয়ার উপর যে জুলুম হয়েছে তার বিচার হওয়া প্রয়োজন। আছিয়ার মৃত্যুর পরপরই তার বাড়ি বিক্ষুব্ধ জনতা মাটির সঙ্গে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ধ্বংস করেছে তার সব মালামাল। আমরা এ নরপশুর বিচার চাই।
এদিকে, আছিয়ার মৃত্যুতে মাগুরায় বিভিন্ন সংগঠন শুক্রবার দিনব্যাপী শহরের বিভিন্ন স্থানে বিচার চেয়ে মানবন্ধন, মৌন মিছিল ও সড়কে অবস্থান করে কর্মসূচি পালন করেছে।
পাঠকের মতামত
ঘুনে ধরা এ সমাজ কোন অপরাধ হলে হৈ চৈ লেগে যায়। ধর্ষণ ঠেকাতে চায় কিন্তু ধর্ষণের উৎস বন্ধ করতে চায় না। দেশে হাজারো ধর্ষক জন্ম নিয়েছে বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থায়। কোন কোন বিধান জারি করলে ধর্ষণ বন্ধ হবে তা আলোচনায় আসে না। এ সমাজ ধর্ষনের সুযোগ ও দিবে আবার ধর্ষকের শাস্তির জন্য কান্না সহকারে ফাঁসিও চাইবে। হায়রে মানবতা।