অর্থ-বাণিজ্য
কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সরকার বিশেষ গুরত্ব দিচ্ছে: প্রেস সচিব
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(৩ সপ্তাহ আগে) ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ৭:৪১ অপরাহ্ন
দেশে নিরাপদ ও টেকসই খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, আমাদের সীমিত ভূমি ব্যবহার করে কৃষিখাতের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বার বার নির্দেশ দিচ্ছেন। এছাড়া সরকার খাদ্য উৎপাদনে বাড়াতে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও উপকরণের সঠিক ব্যবহারের প্রতি মনোযোগ দিয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার ভবনে বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভলপমেন্ট (বিল্ড) আয়োজিত ‘টেকসই কৃষির অগ্রযাত্রায় স্টুয়ার্টশিপ’ শীর্ষক এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রেস সচিব একথা বলেন।
সাংবাদিক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ল্যান্ট প্যাথোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু নোমান ফারুক। বিল্ড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগমের সভাপতিত্বে আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড সাসটেনেবিলিটি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে বলেন, বাণিজ্য সংরক্ষণতা একটা বড় বিষয়, বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে বাণিজ্যের সংরক্ষণতা যেভাবে আছে-সেটা হয়তো থাকবে না। যদি বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে যে দেশ খাদ্য উৎপাদন বেশি করে, তারা ভালো থাকবে। যদি কোনো দেশের খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি থাকে, তাহলে তার ওপর বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
২০০৮ সালের বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মন্দা অবস্থায় পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ না থাকলে প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য আমদানি করা কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে সময় মতো খাদ্যশস্য আমদানি করতে না পারায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ না খেয়ে মৃত্যুবরণ করে। এসবের যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি। এই প্রস্তুতির বড় একটা অংশ হলো বালাইনাশকের সঠিক ব্যবহার। বালাইনাশক বা সারের ব্যবহার সঠিক নিয়ম মেনে করাটা খুব জরুরি।
প্রেস সচিব বলেন, কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকার কারণে আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী উৎপাদন বাড়াতে পারিনি। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে কন্ট্রাকটিং ফার্মে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশের মাটির গুনাগুন ও আবহাওয়ার কারণে কৃষি উৎপাদন আরও বেশি হওয়া উচিত এবং সেটা করা গেলে রপ্তানিতে তা বিশেষ ভুমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানের অন্য আলোচকরা বলেন, কৃষিখাতে স্টুয়ার্ডশিপ বা বালাইনাশকের সঠিক অনুশীলন নিরাপদ ও ফসল সুরক্ষা উপকরণের সুষ্ঠু ও পরিমিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ প্রদান ও উত্তম চর্চা পরিবেশের ঝুঁকি হ্রাস, মাটির উর্বরতা সংরক্ষণ এবং জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করবে। সভাপতির বক্তব্যে বিল্ড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম বাংলাদেশের বালাইনাশক নীতিতে স্টুয়ার্ডশিপ অন্তর্ভুক্তিকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।