বিশ্বজমিন
ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার কড়া নিন্দা আইসিসির
মানবজমিন ডেস্ক
(১ মাস আগে) ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, শনিবার, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:১৯ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি)। সঙ্গে তারা ট্রাম্পের এই নিষেধাজ্ঞার কড়া সমালোচনাও করেছে। বলেছে, তা সত্ত্বেও তারা বিশ্বজুড়ে ন্যায়বিচার অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার বিষয়ে আইসিসি রায় দিয়েছে কিছুদিন আগে। তাতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ও হামাসের সামরিক কমান্ডার মোহাম্মদ দিয়েফ-এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিশ্লেষকরা বলছেন, এ কারণেই আইসিসির ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন ট্রাম্প। তার ফল হিসেবে তিনি আইসিসির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়ার পর আইসিসি একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, আইসিসির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে এ সংস্থার বিচারিক কাজ নিরপেক্ষভাবে করা এবং পক্ষপাতিত্বহীনভাবে করা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানের নিন্দা জানায় আইসিসি। হেগ ভিত্তিক এই আদালত আরও বলেছে, এই আদালতের কর্মকর্তাদের পাশে দৃঢ় অবস্থান তাদের। তারা সারাবিশ্বে যে লাখ লাখ নিরপরাধ মানুষ নৃশংসতার শিকার তাদের জন্য ন্যায়বিচার এবং আশা জাগিয়ে রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এর আগে বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরাইলকে টার্গেট করে ‘অবৈধ ও ভিত্তিহীন’ তদন্ত করছে এই আদালত। এ জন্য আইসিসির কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সম্পদ জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। যদি এই কোর্টের তদন্তে কেউ সহায়তা করছেন বলে মনে হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধেও একই সিদ্ধান্ত। কোন সব কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নিন। কিন্তু এর আগে ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল এই আদালতের প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে। আইসিসি তার জবাবে বলেছে, ন্যায়বিচার এবং মৌলিক মানবাধিকারের জন্য সারাবিশ্বে আমাদের ১২৫টি স্টেট পার্টি, নাগরিক সমাজ ও বিশ্বাবাসীর পাশে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
ওদিকে আইসিসির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞায় সতর্কতা উচ্চারণ করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। তারা বলেছে, এর ফলে এই আদালতের নিরপেক্ষতা এবং বিস্তৃত বিচারিক ব্যবস্থা হুমকিতে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে এই আদালত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে তাদেরকে এই শাস্তি দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার নির্বাহী এক আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। তাতে বলা হয়, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে আইসিসি। তার এমন মন্তব্যের জবাবে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রধানদের প্রধান অ্যান্টোনিও কস্ট এক্সে লিখেছেন, আইসিসির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মাধ্যমে এই আদালতের নিরপেক্ষতা হুমকিতে পড়েছে। সার্বিকভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল বিচার ব্যবস্থাকে খর্ব করা হয়েছে।
ওদিকে আলাদাভাবে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপিয়ান কমিশন। এতে আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থা এবং দায়মুক্তির বিরুদ্ধে আইসিসির অতি গুরুত্ব সমুন্নত রাখার বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। কমিশনের মুখপাত্র বলেছেন, চলমান তদন্ত, বিচারিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে। বছরের পর বছর ধরে সারাবিশ্বে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে যে প্রচেষ্টা তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এতে। ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশের কী প্রভাব পড়ে তা মনিটরিং করবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেবে।
পাঠকের মতামত
আইসিসির এখন উচিদ হবে, আইসিসির নির্বাহী আদেশে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা।
পৃথিবীতে এক নব্য দানবের আবির্ভাব ঘটেছে! সে তার দেশকে গ্রেট বানাতে চায়। কিন্তু তার পদক্ষেপ গুলি হিংসা ও বর্ণবিদ্বেষে ভরা। গ্রেট বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে তার জাতীর মধ্যে অহঙ্কার, হিংসা, জাত্যাভীমানের মত সভ্যতা ধ্বংসকারি উপাদান ছড়িয়ে দিচ্ছে! এই দানব বলে আজ এই দেশ দখল করব, কাল বলে ঐ ভূখন্ডে তাদের অধিবাসীদের থাকতে দিব না! এই রকম একজন দানবের আবির্ভাব ঘটেছিল ইউরোপে যে তার জাতিকে বানাতে চেয়েছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠজাতি। বিনিময়ে ধ্বংস করে ছিল অনেক দেশ আর হত্যা করেছিল লক্ষ লক্ষ মানুষ। কিন্তু ফলাফল কি হয়ে ছিল তা আমরা সবাই জানি। সেই কলঙ্কের বোঝা সেই জাতি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে। আমেরিকানদের বলি এখনই সোচ্চার হোন নতুবা জার্মানদের মত অবস্হা আপনাদেরও হবে। ইতিহাসের রায় কিন্তু বড়ই নির্মম। দেশ পরিচালনা করবে রাজনীতিবিদরা কিন্তু আপনাদের দেশ শাসন করছে বড় বড় ব্যবসায়ীরা। এটা শুভ লক্ষন নয়।
ইসরাইলদের নেতা বেনিয়ামিন এর জন্য আমেরিকার এতো দায়বদ্ধতা কেন বুঝিনা