দেশ বিদেশ
‘আওয়ামী লীগ খুনি’
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে
২৫ জানুয়ারি ২০২৫, শনিবার
জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ ১৮ কোটি মানুষের ওপর জুলুম করেছে। মানুষ খুন করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল। ফ্যাসিস্টরা যেন পুনরায় ফিরে না আসে এবং আমরা যেন তাদের আশ্রয়-প্রশয় না দিই। বাংলাদেশে অন্যায়ভাবে যত মানুষকে খুন করা হয়েছে তার প্রত্যেকটির বিচার চাই। নিরিহ মানুষকে হত্যা করেছে। সেই লাশের উপর পৈশাচিক নৃত্য করেছে। আওয়ামী লীগ খুনি হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ খুনি নয়, দেশপ্রেমিক। গতকাল কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মিসভায় এসব কথা বলেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ ২৬ লাখ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে চুরি করে নিয়ে গেছে। যদি এটাই তাদের দেশ হতো তাহলে দেশের টাকা কেউ কি চুরি করে বিদেশে পাচার করে। পাঠায়! না। এটা ছিল তাদের জমিদারি। এখান থেকে খাজনা আদায় করবে আর দেশের টাকা বিদেশে পাচার করবে। আমাদেরকে দেশের হুকুমতের দায়িত্ব দিলে জনগণের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা হবে। কুড়িগ্রামসহ দেশের অনগ্রসর জেলাগুলোর জন্য সমবণ্টন নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোর জন্য আলাদা বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, কুড়িগ্রাম একটা সীমান্তবর্তী জেলা। একটা মানুষ অসুস্থ হলে ভালো একটা চিকিৎসা পাবে তার কোনো ব্যবস্থা নাই। আজকে বহু জেলার মধ্যে একটি জেলায় কৃষি ইউনিভার্সিটি, একটি মেডিকেল কলেজ, একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি সবকিছু আছে আরেক জেলায় কিছুই নাই। এটা কোন ধরনের ইনসাফ?
জামায়াতের আমীর বলেন, এখানে একটা কৃষি বিশ^বিদ্যালয় হয়েছে। ঘোষণা হয়েছে। তার কঙ্কাল আছে, গোস্তও নাই, চামড়াও নাই। হাড্ডিসার। নিজস্ব কোনো ক্যাম্পাস নাই। ধুঁকে ধুঁকে চলছে। অথচ এগ্রোবেজড এ প্রতিষ্ঠানটি এই অঞ্চলের চেহারা বদলায়া দিতে পারে। এটা শিক্ষা গবেষণা কেন্দ্রে পরিগণিত হতে পারে। ৫ই আগস্ট শহীদ আবু সাঈদের প্রসঙ্গ তিনি বলেন, দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরে ফ্যাসিজমকে বিদায় করতে গিয়ে একটা মানুষ বাংলাদেশের ইতিহাসে নয় বিশে^র ইতিহাসে তার স্থানটি তার নামটি লেখা হয়ে গেছে। এই সন্তানটিও বৃহত্তর রংপুরের। তার নাম আবু সাঈদ। সে আমাদের এখন বিপ্লবের প্রতীক। আমাদের নেতা। আমাদের সিপাহসালার। আমাদের বীর সেনাপতি। তার রাস্তা ধরে যারাই জীবন দিয়েছেন মহান রাব্বুল আলামিন তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন। যারা পঙ্গু হয়েছেন, তাদেরকে আমরা যাতে গর্বের সঙ্গে সম্মান করতে পারি, শ্রদ্ধার সঙ্গে বুকে ধারণ করতে পারি। শহীদ এবং পঙ্গু সকলের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর তাণ্ডব চালিয়ে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় স্পষ্ট দিবালোকে পল্টন ক্রসিং-এ আল্লাহতায়ালার বান্দা ৬ জন নিরিহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। নিথর দেহের উপর দাঁড়িয়ে তারা পৈশাচিক নৃত্য করেছিল।
২০১০ সালের ২৯শে জুন আমাদের প্রাণপ্রিয় ৩ নেতা তৎকালীন আমীরে জামায়াত সাবেক মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, নায়েবে আমীর যিনি সারা বিশে^র মানুষকে কোরআনের মানবিক দাওয়াত দিয়ে বেড়াতেন যাকে কোরআনের পাখি বলা হতো আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এই তিনজনকে খোড়া অজুহাতে, মিথ্যা অভিযোগে নির্লজ্জভাবে গ্রেপ্তার করে। তার পরের মাসে আরও দু’জন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামরুজ্জামান এবং আব্দুল কাদের মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে। তাদেরকে সাজা দেয়ার জন্য শাহবাগে আন্দোলন ঘোষণা করে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে কারা জুলুম অত্যাচার করেছে, কারা তাদের জমিগুলো দখল করেছে, ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করেছে, সম্পদ লুণ্ঠন করেছে, তাদের ইজ্জতে হাত দিয়েছে, এই দুষ্কৃতকারীদের তালিকা তৈরি করে জনগণের সামনে প্রকাশ করে দেয়া হোক। ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তরা এ সকল অপকর্মে জড়িত ছিল। দলের নেতাকর্মীদের সম্পর্কে তিনি বলেন, সাড়ে ১৫ বছরের দুঃখ-ব্যথা-বেদনা-কষ্ট আমরা বুকে বহন করে বেড়াচ্ছি। কিন্তু ৫ই আগস্ট জাতি যখন মুক্তি পেলো। তখন বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষ করে আমাদের সহকর্মীদের আমরা বললাম, শান্ত থাকুন ধৈর্য ধরুন, শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নিজ নিজ জায়গা থেকে সর্বোচ্চ অবদান রাখুন।
পাঠকের মতামত
একাত্তরের প্রেক্ষাপটে জামায়াত আর খুনী দু'টি সমার্থক শব্দ। তাই জামায়াতের মুখে কাউকে খুনী বলা - চোরের মা'র বড় গলার মতো শোনায়।
আমরা ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি, বাংলাদেশে দল আছে দুইটা। এক- আওয়ামী লীগ, দুই- আওয়ামী বিরোধী দল। এখন তার বাস্তব প্রমান দেখতে পাচ্ছি।