অর্থ-বাণিজ্য
ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে সরাসরি ফ্লাইট চান পাকিস্তানি ব্যবসায়ীরা
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(১ মাস আগে) ১২ জানুয়ারি ২০২৫, রবিবার, ৮:০৪ অপরাহ্ন
বাংলাদেশে ব্যবসা বাণিজ্য বাড়াতে চান পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা। এ জন্য তারা সরাসরি ফ্লাইট ও ভিসা জটিলতা নিরসনের দাবি জানিয়েছেন। রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফপিসিসিআই) সভাপতির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে এ দাবি জানান তারা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে এফপিসিসিআই সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ বলেন, পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা–বাণিজ্য বাড়াতে চান। ভিসা জটিলতা ও সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় সে দেশের ব্যবসায়ীরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে সক্ষম হচ্ছেন না। এসময় তিনি এক্ষেত্রে বিরাজমান জটিলতা নিরসনে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক টেকসই করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুদেশের জনসংখ্যার বিবেচনায় বাণিজ্যের পরিমাণ খুব কম। উভয় দেশেরই সুযোগ রয়েছে বাণিজ্যকে বাড়িয়ে নেওয়ার। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের আরও বেশি ডায়ালগ হওয়া দরকার। নিজেদের মধ্য সম্ভাব্য সহযোগিতা উন্মোচন দুদেশকেই লাভবান হতে সাহায্য করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বৈঠকে তারা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ভিসা সহজীকরণ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা এবং ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে কৃষিজাত দ্রব্য উৎপাদন ও বিপণন, শিক্ষা, পর্যটন ও সিরামিক খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন। পাকিস্তান সরকার এক্সপোর্ট ফ্যাসিলিটেশন স্কিম চালু করেছে। এ স্কিমের আওতায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পাকিস্তানে বিনিয়োগ করতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তারা। এসময় তারা বাংলাদেশে ট্রেড এক্সপো আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফ এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। এরপর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আগের তুলনায় ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার আহমদ মারুফ জানান, পাকিস্তান যেতে ভিসা ফি লাগবে না বাংলাদেশি নাগরিকদের। পাকিস্তানের নতুন ভিসা নীতিমালা অনুযায়ী ১২৬টি দেশের মতো বাংলাদেশও এই সুবিধা পাবে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের করাচি থেকে দুটি কন্টেইনার বহনকারী জাহাজ সরাসরি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য নিয়ে এসেছে। বলা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এবারই প্রথমবারের মতো সরাসরি জাহাজ করাচি থেকে চট্টগ্রাম আসল। দুই দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানিও আগের তুলনায় গত কয়েক মাসে বেড়েছে।
বাংলাদেশ সফর করছেন পাকিস্তানের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। সম্প্রতি ট্রেডিং কর্পোরেশন অব পাকিস্তানের (টিসিপি) প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছেন। গত সোমবার বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পাকিস্তানের কাছ থেকে ৫০ হাজার টন আতপ চাল আমদানির জন্য টিসিপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) আমন্ত্রণ গত শুক্রবার থেকে বাংলাদেশ সফর করছে এফপিসিসিআই ২৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। তারপর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে দুই দেশ একসাথে থাকলেও একে অপরকে সহযোগিতার উষ্ণ সম্পর্ক তেমন দেখা যায়নি।
পাঠকের মতামত
ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে দ্রুতই করাচী, লাহোর, ইসলামাবাদ পেশাওয়ার সরাসরি বিমান চলাচল চালু করা উচিত। সেইসাথে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর থেকে করাচী ও গাওয়াদার বন্দরের মাঝে সরাসরি জাহাজ চলাচল চালু করা উচিত।