বিশ্বজমিন
মারা গেছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট
মানবজমিন ডেস্ক
(৩ সপ্তাহ আগে) ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:০৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:২১ পূর্বাহ্ন
পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফুজিমোরি মারা গেছেন। তিনি ১৯৯০ সালে দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছিলেন, তবে পরে তাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধে কারাদণ্ড দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে তিনি মাওবাদীদের দমন করতে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বুধবার ৮৬ বছরে বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বিশ্ব রাজনীতির এই আলোচিত এবং সমালোচিত ব্যক্তি। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, শেষ বয়সে এসে তার শরীরে মরণঘাতী রোগ ক্যান্সার শনাক্ত হয়। মৃত্যুর খবর শুনে ঘনিষ্ঠরা ফুজিমোর বাসায় ভিড় করেন। গণমাধ্যমকে তারা জানিয়েছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফুজিমোরি বেশ জটিল পরিস্থিতির মধ্যে ছিলেন। তার মেয়ে কেইকো ফুজিমোরি নিজের এক্সের পোস্টে লিখেছেন, দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে বুধবার আমাদের পিতা সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যে চলে গেছেন। ফুজিমোরি একজন জাপানি বংশোদ্ভুত পেরুর বাসিন্দা। ১৯৯০ এর দিকে তিনি পেরুতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের জন্য খুব সামান্যই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু পরে তিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে নিজেকে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত করে তোলেন। ফলত তিনি দ্রুত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পেরেছিলেন। ক্ষমতায় এসেই তিনি অর্থনৈতিক সংস্কারে হাত দিয়েছিলেন। ফুজিমোরি বাণিজ্য শুল্ক হ্রাস করেছিলেন, যার ফলে কিছু সময়ের জন্য দেশটির অর্থনীতি বেশ স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে এসেছিল। কিন্তু পরে তিনি মাওবাদীদের বিরুদ্ধে একপ্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করে বসেন। তার দৃষ্টিতে মাওবাদী দল শাইনিং পাথ ছিল অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। তিনি দলটির শীর্ষ নেতা আবিমেল গুজম্যানকে বন্দী করেছিলেন। গুজম্যান পেরুতে সামজ্রবাদবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন। ফুজিমোরি দেশে মাওবাদী আন্দোলন দমাতে অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলেন। যাতে নিজ দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ব্যাপক সমালোচিত ও দণ্ডিত হয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ফুজিমোরি। তাকে ১৬ বছরের জেল খাটতে হয়েছে। টানা ১৬ বছর কারাগারে কাটানোর পর গত ডিসেম্বরে মানবিক বিবেচনায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। ফুজিমোরির পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, গত আগস্টে জিহ্বায় ক্যানসারের চিকিৎসা শেষ করার পর থেকেই ফুজিমোরির শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে যায়। সাবেক প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন পেরুর প্রধানমন্ত্রী গুস্তাভো আদ্রিয়ানজেন। তিনি বলেন, আমরা আলবার্তো ফুজিমোরির সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের এটা জানাতে চাই যে তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পেরুর ক্ষমতায় ছিলেন ফুজিমোরি।