ঢাকা, ৫ অক্টোবর ২০২৪, শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১ রবিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

অগ্নিঝরা বিতর্কে ট্রাম্প-কমালা কী বললেন?

মানবজমিন ডেস্ক

(৩ সপ্তাহ আগে) ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১১:১২ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৭:২৭ অপরাহ্ন

mzamin

এক অগ্নিঝরা প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে লড়াই করেছেন ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমালা হ্যারিস এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ফিলাডেলফিয়ায় কমালা ও ট্রাম্প এবিসি টিভি চ্যানেল আয়োজিত প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে একে অপরকে লক্ষ্য করে নিজেদের যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করেছেন। তাদের পাল্টা-পাল্টি যুক্তিতে উঠে এসেছে অর্থনীতি, গর্ভপাত, অভিবাসন, ইসরাইল-ফিলিস্তিন, রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ক্যাপিটলের মতো বিষয়গুলো। কেউ কাউকে এক চিমটি জমি ছেড়ে কথা বলেননি। 
কমালা হ্যারিস বললেন, ‘আপনাদের জন্য ট্রাম্পের কোনো পরিকল্পনা নেই। ট্রাম্প শুধু ধনীদের জন্য কর ছাড় দেয়া নিয়ে চিন্তিত। তিনি সুবিধাবাদী অর্থনীতির পক্ষে। এতে ট্রাম্প জবাব দিয়েছেন, কমালা হলেন খালি কলসি, যার ঢক্কানিনাদ বেশি। তার কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি বাইডেনের পরিকল্পনাই পরিবেশন করছেন। বিপরীতে কমালা অভিযোগ করে বলেছেন, ট্রাম্প চীন ও অন্য দেশ থেকে আসা জিনিসের ওপর মাশুল বাড়াতে চান। এটা আসলে আমেরিকানদের কর বসানো। এর ফলে জিনিসের দাম বেড়ে যাবে। প্রতি মাসে সাধারণ মানুষের উপর কতটা বোঝা চাপবে সেটাও জানিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প বলেছেন, মাশুলের অর্থ দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের কর কমাবেন। তার দাবি, মাশুলের ফলে জিনিসের দাম বাড়বে না। বরং এই মাশুল না থাকলে বেশি দামে জিনিস কিনতে হবে। এসময় হ্যারিস দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের জন্য তিনি নিজস্ব একটা আর্থিক নীতি নিয়ে চলছেন। ট্রাম্পের পাল্টা অভিযোগ, কমালা পুলিশের জন্য অর্থ কমাতে চান, সকলের কাছ থেকে বন্দুক কেড়ে নিতে চান। কমালা বলেন, তার কাছে ও তার রানিংমেট ওয়ালজের কাছে অনুমোদিত বন্দুক আছে। নিজের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য তিনি বন্দুক রেখেছেন।

ইসরাইল-ফিলিস্তিন ইস্যুতেও ভিন্ন অবস্থান তুলে ধরেছেন মার্কিন দুই নেতা। ট্রাম্প ও কমালা দুজনের কাছ থেকেই জানতে চাওয়া হয়, তারা কী করে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ থামাবেন? জবাবে কমালা তার আগের অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। গতবছর ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে ঢুকে এক হাজার দুইশ মানুষকে হত্যা করেছিল। তিনি আরও বলেন, এখন যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। গাজায় সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। সেই সঙ্গে যাদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমাদের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথেই যেতে হবে। এর ফলে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। ট্রাম্পের দাবি, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে এই লড়াই হতোই না। তার অভিযোগ, হ্যারিস ইসরাইলকে ঘৃণা করেন। তিনি প্রেসিডেন্ট হলে দুই বছরের মধ্যে ইসরাইল বলে কোনো দেশ থাকবে না। ট্রাম্পের অভিযোগ, হ্যারিস আরবদেরও ঘৃণা করেন। প্রেসিডেন্ট হলে দ্রুত এর সমাধান করার কথা জানান ট্রম্প। হ্যারিস বারবার শপথ করে বলেন, তিনি এই সব অভিযোগ অস্বীকার করছেন। তিনি ইসরাইলের নিরাপত্তার অধিকার সমর্থন করেন। তার পাল্টা দাবি, বিশ্বনেতারা ট্রাম্পের কথায় হাসছেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ট্রাম্প দাবি করেন, আমি এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চাই। আমি মানুষের জীবন বাঁচাতে চাই। বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন হতে দিয়েছে। এসময় সঞ্চালক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি চান- ইউক্রেন যুদ্ধে জিতুক? ট্রাম্প এই প্রশ্ন কৌশলে এড়িয়ে যান। কমালা হ্যারিস অভিযোগ করে বলেছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে তিনি পুতিনকে ইউক্রেন দখল করে নিতে দেবেন। হ্যারিস বলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে পুতিন এতক্ষণে কিয়েভে বসে থাকতেন। তার নজর থাকত বাকি ইউরোপের দিকে। হ্যারিস বলেন, ইউরোপীয় নেতারাও চান না, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হোন।

ক্যাপিটল নিয়ে ট্রাম্প বলেন, ক্যাপিটলের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমাকে ওরা একটা ভাষণ দিতে বলেছিল, এইটুকুই। তার সমর্থকরা ক্যাপিটলে প্রবেশের আগে ট্রাম্প ভাষণ দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ফাইট লাইক হেল। তিনি সেসময় তার সমর্থকদের শান্তিপূর্ণভাবে ক্যাপিটলে যেতে বলেছিলেন। ট্রাম্প এই কথা বলতে অস্বীকার করেন যে তিনি অনুতপ্ত। হ্যারিস বলেন, পাতা উল্টে দেখুন। ওইদিন কী বিশৃঙ্খলা হয়েছিল সেটা দেখুন।

গর্ভপাত নিয়ে ট্রাম্পের কাছে তার মতামত জানতে চাওয়া হয়। ট্রাম্প বলেন, ডেমোক্র্যাটরা চায় গর্ভধারণের নয় মাস পরেও গর্ভপাত করার অধিকার দিতে। তিনি চান, গর্ভপাতের বিষয়টি রাজ্যগুলি ঠিক করুক। তারা আইন করুক। ধর্ষণ বা কিছু ক্ষেত্রে তিনি গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে। ট্রাম্পের অভিযোগ, কিছু রাজ্যে শিশু জন্মানোর পরেও তাদের মারার ব্যবস্থা আছে। বিতর্ক যারা পরিচালনা করছিলেন, তারা বলেন, কোনো রাজ্যেই এই ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই। হ্যারিস বলেছেন, ট্রাম্পের আমলে যে তিনজন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ করা হয়, তারাই দুই বছর আগে গর্ভপাত নিয়ে কেন্দ্রীয় স্তরে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার বাতিল করেছেন। তিনি আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, ট্রাম্পের গর্ভপাত নিয়ে নিষেধাজ্ঞায় ধর্ষিতাদের ক্ষেত্রেও কোনো ছাড় দেয়া হয়নি।
কমালা হ্যারিস বিতর্ক শেষ করেন এইভাবে, আমরা আর পিছনে ফিরে যেতে চাই না। আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই। আমরা নতুন পথে হাঁটতে চাই। ট্রাম্প বলেন, হ্যারিস ছিলেন বাইডেন প্রশাসনের অঙ্গ। তিনি মানুষকে চাকরি দিতে পারেননি, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পারেননি। তার উচিত, এখনই সরে দাঁড়ানো। 

সূত্র: ডয়চে ভেলে

পাঠকের মতামত

Kamala নির্বাচিত হলে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিতে ব্যবস্থা নিবেন।

Md Abdul Hakim
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৬:০১ অপরাহ্ন

কমলা আসলে আমাদের আর আমাদের বন্ধু রাস্ট্রের কি বেশী লাভ হবে

Jamil
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১:১২ অপরাহ্ন

অবশ্য‌ই কমলা হ্যারিসকে চাই ট্রাম্পের মতো উন্মাদ প্রেসিডেন্ট সমগ্র বিশ্বের জন্য‌ই হুমকি।

md shawkat hayat
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১২:২৫ অপরাহ্ন

উপভোগ্য বিতর্ক। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তবে কমলা হ্যারিস এখনো এগিয়ে। সম্ভবত তিনিই জিতবেন। ট্রাম্প জিতলে বিশ্বের স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে পারে।

জুলফিকার আলী
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১২:১৪ অপরাহ্ন

আমরা ৩য় বিশ্বের মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্প কে চাই।

Mohsin
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১২:০০ অপরাহ্ন

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

বিবিসির প্রতিবেদন/ হাসিনাকে নিয়ে দ্বিধায় দিল্লি!

ইউক্রেন, গাজা ও বাংলাদেশ পরিস্থিতি বিশ্লেষণের আহ্বান/ সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বললেন রাজনাথ

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status