দেশ বিদেশ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ১৯ প্রস্তাব সুজনের
স্টাফ রিপোর্টার
১২ আগস্ট ২০২৪, সোমবারদেশের সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ১৯টি প্রস্তাব করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের করণীয়’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব প্রস্তাব দেয়া হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সফলতা কামনা করে সংবাদ সম্মেলনে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা অভিনন্দন জানাচ্ছি। একইসঙ্গে যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি। আমাদের তরুণদের আকাঙক্ষা হলো- অতীতে যা ঘটেছে তা যেন আবার ফিরে না আসে। অন্যায়, অবিচার, লুটপাট, গুম-খুন যেন আর না হয়। অতীতে যারা অন্যায়-অবিচার করেছে, ফৌজদারি অপরাধ করেছে এবং আর্থিক খাতে দুর্নীতি করেছে স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত করে তাদের যেন বিচার হয়। তিনি বলেন, সংস্কারের জন্য সূদূরপ্রসারী কতোগুলো পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলাপ করে আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে তুলতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি নাগরিক সনদ প্রণয়ন করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো কথা দিয়ে কথা রাখে না। ২০০৮ সালে দিনবদলের সনদ ঘোষণার পরও আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল, দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের বিস্তার ঘটেছিল। কিন্তু এই সরকার যদি একটি নাগরিক সনদ প্রণয়নে উদ্যোগ নেয়, তাহলে আমরা আশস্ত হতে পারি যে অতীতের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ছাত্র-জনতা সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা, পাড়া-মহলা পাহারা দিচ্ছে তা অভূতপূর্ব। আমি মনে করি, রাষ্ট্র গঠন ও উন্নয়নে তাদের এই প্রতিভাকে কাজে লাগাতে হবে। এ ছাড়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ভবিষ্যতে কমপক্ষে আরও তিনটি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার পরামর্শ দেন তিনি।
সুজনের সহ-সমপাদক জাকির হোসেন বলেন, সংস্কারের আকাঙক্ষা থেকেই সাম্প্রতিক সময়ে যে গণআন্দোলন হয়েছে, এটি কোনো বিপ্লব ছিল না। তাই আসলেই কী করা সম্ভব, কতোটুকু করা সম্ভব, তা ভাবতে হবে। অতীতে বিভিন্ন এলাকায় কতিপয় ব্যক্তির রাজত্ব তৈরি হয়েছিল, এমপির রাজত্ব তৈরি হয়েছিল। আমরা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাই। আমরা মনে করি, কাঠামোগত পরিবর্তন হলে, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন হলে সবাই উপকৃত হবে, দেশ এগিয়ে যাবে।
অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ২০২৪ সালে যে অভ্যুত্থান আমরা দেখেছি, তা একইসঙ্গে একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ৫৮৬ জন মানুষ জীবন দিয়েছেন, তাই তাদের আত্মত্যাগের কথা ভুলে গেলে চলবে না। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে সমাজের সব শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়নি। কাঠামোগত পরিবর্তনকে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে রূপান্তর ঘটাতে হবে। একটা স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো যেন আর প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে সেজন্য নজরদারিত্বের কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকারের মেয়াদ কতো হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, কোটা প্রথা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গত ৫ই আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনের মধ্যদিয়ে শুধু একটি সরকারের পরিবর্তন চায়নি, চেয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তন। তারা আর কোনো কর্তৃত্ববাদী সরকার বা একনায়কতন্ত্র দেখতে চায় না। শিক্ষার্থীদের এই প্রত্যাশার সঙ্গে এদেশের সাধারণ মানুষও কণ্ঠ মিলিয়েছে, সৃষ্টি হয়েছে আশাবাদ।
দিলীপ কুমার সরকার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আশু করণীয় বা জরুরি কাজগুলো হবে-অতি দ্রুততার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা, জুলাই-আগস্টে সহিংসতায় নিহতদের তালিকা তৈরি, পরিবারকে সহায়তা ও ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের সুচিকিৎসাসহ পরবর্তীতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহকে আক্রমণকারীদের হাত থেকে রক্ষা করা, দ্রুত জাতিসংঘের অধীনে তদন্তের উদ্যোগ গ্রহণ এবং দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারিক প্রক্রিয়ায় শাস্তির ব্যবস্থা করা।
এদিকে রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের ক্ষেত্রে সুজনের পক্ষ থেকে ১৯টি প্রস্তাব তুলে ধরেন দিলীপ কুমার সরকার।
প্রস্তাবগুলো হলো-
১. সংবিধান সংশোধন; ২. প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার; ৩. নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন ও নির্বাচনী আইনের সংস্কার; ৪. দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার; ৫. নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন; ৬. সংসদের কার্যকারিতা; ৭. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা; ৮. স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ; ৯. দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স; ১০. অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস, রাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান আয়-বৈষম্য ও সুযোগের ক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা; ১১. মানবাধিকার সংরক্ষণ; ১২. নারীর ক্ষমতায়ন; ১৩. তরুণদের জন্য বিনিয়োগ ও তাদের নেতৃত্বের বিকাশ; ১৪. মানসম্মত শিক্ষা; ১৫. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা; ১৬. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা; ১৭. পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা; ১৮. রাজনৈতিক দলের সংস্কারসহ রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন এবং ১৯. নাগরিক সক্রিয়তা।
২ বার (৪বছর+৪বছর) এর বেশি কেউ প্রধান মন্ত্রী হতে পারবেন না। এই সংশোধন খুব দরকার
আমার মনে হয় আরো কিছু প্রস্তাব রাখা উচিত যেমন ১) সংসদ সদস্যদের শুধু আইন প্রণয়ন জন্য নির্বাচিত করা উচিত ২) সংসদ সদস্যদের জন্য আলাদা পুলিশ বাহনি দরকার ৩) বিনাশুল্ক গাড়ি কেনা বাদ দেওয়া ৪) স্কুল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হতে পারবেনা মর্মে নিশ্চিৎ করা ৫) চাকুরীর সুপারিশ বন্ধ করা আরো গঠন মূলক কিছু পদক্ষেপ নেওয়া।
২ বারের বেশি কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। প্রধান মন্ত্রীর একছত্র ক্ষমতা হ্রাস করতে হবে।
like J N University, we need a post graduation university for human resources development.
rajnoitik dol songskar .. parivar tontro cholbe na... voting system hobe dol bittik.... kono parthi thakbe na ... je dol joto % vote pabe ... songsod e tara toto ason pabe ... each vote valid ....
রাজনৈতিক দলের ভিতরে আগে গণতন্ত্র দরকার, দুই টার্মের বেশি কেহ দলের প্রধান থাকতে পারবে না
এ মুহূর্তে ১৫ আগস্ট ছুটি বাতিল করা হোক। নচেৎ পরাজিত শক্তি ঐদিন আবার জড়ো হবে।
দ্বিস্তর বিশিষ্ট সংসদ চাই
সংবিধান সংশোধন করে 2 বারের বেশী কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেনা এটা সন্নিবেশিত করলে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বহুলাংশে কমে যাবে। কারো দীর্ঘস্থায়ী ক্ষমতার মোহ থাকবে না
সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব: ক্ষমতার Decentralization তিন স্তর বিশিষ্ট পূর্ন স্বায়ত্ত শাসিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা চাই!