বিশ্বজমিন
হানিয়া হত্যাকাণ্ডে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কি হতে পারে?
মানবজমিন ডেস্ক
(১১ মাস আগে) ১ আগস্ট ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:০৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১১ পূর্বাহ্ন

দখলকৃত গোলান মালভূমিতে ১২ জন নিহত হওয়ার পর ইসরাইল লেবাননের হিজবুল্লাহকে দায়ী করেছে। এর দুই দিন পর সোমবার হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা জন কিরবি ইসরাইলের প্রতি মার্কিন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তবে সেসময় ইসরাইলকে জানানো হয়েছিল এই মুহূর্তে নিজেদের আঞ্চলিক যুদ্ধে জড়াতে চায়না যুক্তরাষ্ট্র। জন কিরবি বলেছিলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে একটি কূটনৈতিক সমাধানের জন্য এখনও সময় এবং স্থান আছে। ইসরাইলের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে এবং তা মধ্যপ্রাচ্যে সর্বাত্মক আঞ্চলিক যুদ্ধের সূত্রপাত করবে কিনা তা নিয়ে চিন্তা করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি প্রকাশ্যে ইসরাইলকে সমর্থন করে যাচ্ছে। ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরাইল সংঘাতের পর তেল আবিবকে সমর্থন করতে মধ্যপ্রাচ্যে বাহিনী পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার জন্য বেশ ভালোই দায় আছে যুক্তরাষ্ট্রের। কেননা ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে বছরের পর বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিলে দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলা করে ইসরাইল। এতে দুই ইরানি জেনারেল নিহত হন। পরে ইসরাইলে ড্রোন হামলা চালায় তেহরান। সেসময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ইসরাইলের উত্তেজনা প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার খবর প্রকাশিত হয়েছিল। এছাড়া ইসরাইলকে লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইরানের সঙ্গে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়েও জোর আলোচনা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এত কিছুর পরেও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা দিন দিন বেড়েই চলছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
বুধবার হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহতর কমান্ডার ফুয়াদকে হত্যার পর মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পথে এগিয়েছে। কেননা ওই দুই নেতার হত্যার জন্য হামাস এবং ইরান তেল আবিবকে দায়ী করেছে। ইতোমধ্যেই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইসরাইলে সর্বাত্মক হামলার হুমকি দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কী হতে পারে সিটই এখন বিশ্লেষণের দাবি রাখে। কেউ কেউ মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্র এখনই সরাসরি মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনায় নিজেদের জড়াতে চাইছে না। আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপের ইউএস প্রোগ্রামের একজন সিনিয়র উপদেষ্টা ব্রায়ান ফিনুকেন আল জাজিরাকে বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে সেখানে আঞ্চলিক উত্তেজনা কমাতে যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা পালন করবে। কেননা এছাড়া মার্কিন বাহিনীর অভ্যন্তরে এ নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। তিনি বলেছেন, আপনি যদি মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা এড়াতে চান এবং এখানে যদি মার্কিন সামরিক সেনারা জড়িত থাকে তাহলে আপনাকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হবে। এছাড়া ইয়েমেনের হুতি, লেবাননের হিজবুল্লাহর সাথে পরিস্থিতি শান্ত করতে সিরিয়া এবং ইরাকে মার্কিন সেনাদের হামলা অব্যাহত রাখতে হবে। যা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি করবে। তবে সম্প্রতি হানিয়ার হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা সৃষ্টির জোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তাতে গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন অনেকটাই জটিল হবে বলে মনে করছেন ফিনুকেন।